মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে থাকবেন ওয়াহিদুল হক

আরিফ আহমেদ

Sharing is caring!

মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে থাকবেন ওয়াহিদুল হক

বিশেষ প্রতিবেদক 

স্মৃতিচারণ, গান ও আবৃত্তির মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রগবেষক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিক্ষাগুরু ওয়াহিদুল হকের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিক উদ্যাপন করেছে তাঁর হাতে গড়া সংগঠন কণ্ঠশীলন। ২৭ জানুয়ারী সন্ধ্যায় কণ্ঠশীলনের কার্যালয়, ৭৩/১ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে পথচলার স্মৃতি তুলে ধরেন কণ্ঠশীলন অধ্যক্ষ মীর বরকত এবং কণ্ঠশীলন সভাপতি গোলাম সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, সহ-সভাপতি রইস উল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ সদস্য বিলকিস আহমদ। আবৃত্তি করেন অনন্যা গোস্বামী, আফরিন খান ও মিনহাজুল বশির শোভন। এছাড়াও তাঁকে নিবেদন করে সংগীত পরিবেশন করেন ছায়ানটের সংগীত প্রশিক্ষক শিল্পী এটিএম জাহাঙ্গীর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেএম মারুফ সিদ্দিকী। ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে পথচলার স্মৃতিময় কিছু ঘটনা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, ওয়াহিদুল হক ছোট বড় সকলের সাথে মিশতেন এবং সকলকে সম্মান করতেন। তার ভক্ত ছিল না এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। তার সমস্ত কর্মজীবনে বাঙালি সংস্কৃতির আলো ফুটেছিলো। সকল সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি মানুষের ভেতরে সঙ্গীতের অনুরনন তুলেছিলেন। ওয়াহিদুল হকের আদর্শে পথ চললে জীবনের পথগুলো অনেক বেশি সুন্দর হবে। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, দেশের সবধরনের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে ওয়াহিদুল হক ছিলেন এক নিরন্তর যোদ্ধা। ওয়াহিদুল হককে অনুসরণ করলে আমরা অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক হতে পারবো এবং মানুষের জন্য কাজ করতে পারবো। তিনি দেশের নামকরা পত্রিকায় কাজ করেছেন। শেষ জীবনে তিনি কলাম লিখতেন।
এসময় গোলাম সরোয়ার বলেন, এমন কোন বিষয় ছিল না যে বিষয়ের উপর তিনি লিখতে পারতেন না। শব্দের উৎপত্তি ও ব্যবহার তিনি অভিধান না দেখেই বলে দিতে পারতেন। অসাধারণ সুন্দর মানসিকতার মানুষ হয়েও তিনি সাধারণ জীবনযাপন করতেন বলে জানান তিনি ।ওয়াহিদুল হককে নিয়ে কণ্ঠশীলন এর বিভিন্ন কার্যক্রম ও গ্রন্থপ্রকাশ সহ নানাবিধ স্মরণিক আয়োজন তুলে ধরে মীর বরকত বলেন, ওয়াহিদুল হক আজ আমাদের থেকে বহুদূরে, জগতের যত হাসি-কান্না, হিসাব-নিকাশের বাইরে। আবার বহুকাছেও আছেন তিনি, তাঁর কর্মে, তাঁর সৃষ্টির পথে পথে, অন্তরের অনুরণনে কথাহীন, শরীরহীন অনন্ত হয়ে।

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!

About the author

ডিসেম্বর ৭১! কৃত্তনখোলার জলে সাঁতার কেটে বেড়ে ওঠা জীবন। ইছামতির তীরঘেষা ভালবাসা ছুঁয়ে যায় গঙ্গার আহ্বানে। সেই টানে কলকাতার বিরাটিতে তিনটি বছর। এদিকে পিতা প্রয়াত আলাউদ্দিন আহমেদ-এর উৎকণ্ঠা আর মা জিন্নাত আরা বেগম-এর চোখের জল, গঙ্গার সম্মোহনী কাটিয়ে তাই ফিরে আসা ঘরে। কিন্তু কৈশরী প্রেম আবার তাড়া করে, তের বছর বয়সে তের বার হারিয়ে যাওয়ার রেকর্ডে যেন বিদ্রোহী কবি নজরুলের অনুসরণ। জীবনানন্দ আর সুকান্তে প্রভাবিত যৌবন আটকে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় পদার্পন মাত্রই। এখানে আধুনিক হবার চেষ্টায় বড় তারাতারি বদলে যায় জীবন। প্রতিবাদে দেবী আর নিগার নামের দুটি কাব্য সংকলন প্রশ্ন তোলে বিবেকবানের মনে। তার কবিতায়, উচ্চারণ শুদ্ধতা আর কবিত্বের আধুনিকায়নের দাবী তুলে তুলে নেন দীক্ষার ভার প্রয়াত নরেণ বিশ্বাস স্যার। স্যারের পরামর্শে প্রথম আলাপ কবি আসাদ চৌধুরী, মুহাম্মদ নুরুল হুদা এবং তৎকালিন ভাষাতত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রাজীব হুমায়ুন ডেকে পাঠান তাকে। অভিনেতা রাজনীতিবিদ আসাদুজ্জামান নূর, সাংকৃতজন আলী যাকের আর সারা যাকের-এর উৎসাহ উদ্দিপনায় শুরু হয় নতুন পথ চলা। ঢাকা সুবচন, থিয়েটার ইউনিট হয়ে মাযহারুল হক পিন্টুর সাথে নাট্যাভিনয় ইউনিভার্সেল থিয়েটারে। শংকর শাওজাল হাত ধরে শিখান মঞ্চনাটবের রিপোটিংটা। তারই সূত্র ধরে তৈরি হয় দৈনিক ভোরের কাগজের প্রথম মঞ্চপাতা। একইসমেয় দর্শন চাষা সরদার ফজলুল করিম- হাত ধরে নিযে চলেন জীবনদত্তের পাঠশালায়। বলেন- মানুষ হও দাদু ভাই, প্রকৃত মানুষ। সরদার ফজলুল করিমের এ উক্তি ছুঁয়ে যায় হৃদয়। সত্যিকারের মানুষ হবার চেষ্টায় তাই জাতীয় দৈনিক রুপালী, বাংলার বাণী, জনকণ্ঠ, ইত্তেফাক, মুক্তকণ্ঠের প্রদায়ক হয়ে এবং অবশেষে ভোরেরকাগজের প্রতিনিধি নিযুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়ান ৬৫টি জেলায়। ছুটে বেড়ান গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। ২০০২ সালে প্রথম চ্যানেল আই-্র সংবাদ বিভাগে স্থির হন বটে, তবে অস্থির চিত্ত এরপর ঘনবদল বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, আমাদের সময়, মানবজমিন ও দৈনিক যায়যায়দিন হয়ে এখন আবার বেকার। প্রথম আলো ও চ্যানেল আই আর অভিনেত্রী, নির্দেশক সারা যাকের এর প্রশ্রয়ে ও স্নেহ ছায়ায় আজও বিচরণ তার। একইসাথে চলছে সাহিত্য বাজার নামের পত্রিকা সম্পাদনার কাজ।