বরিশালে সেতু ও সড়কের জন্য দুটি গ্রামের কান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাহিত্য বাজার

Sharing is caring!

কর্ণকাঠী গ্রামের চিত্র

সেতু ও সড়কের জন্য দুটি গ্রামের কান্নায়
আশেপাশে বইছে নদী – তবুও প্রশাসন চোখ খুলে ঘুমায়।

বাংলাদেশের বরিশালের সদর উপজেলার দুটি গ্রামের কান্নায় ৩০ বছ ধরে নদী বইছে। তবুও প্রশাসনের কারো কানে পৌঁছেনি গ্রামবাসীর আহাজারি।

ছবিতে দৃশ্যমান ভাঙা সেতু ও বাঁশের সাঁকো দুটোই একই এলাকায়। এমনকি এ দুটোর দূরত্ব মাত্র ৫০ গজ বা কিছু বেশী হবে হয়তো। এই ভাঙা সেতু ও সাঁকো পার হয়েই চলমান লকডাউন সময়ে প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত মানুষের যাতায়াত এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে। আর লকডাউন উঠে গেলে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হলে প্রতিদিন প্রায় পাঁচশত মানুষের যাতায়াত শুরু হবে আবার হয়তো। জানালেন চরকরঞ্জী বাজারের ব্যাবসায়ী বাবুল হাওলাদার।

হাঃ এটাই সেই বহুল আলোচিত পূর্ব কর্ণকাঠি সেতু ও সংযোগ সাঁকো। ২০০৩ এর পর যা ধ্বংস করেছে এলাকার সাধারণ শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রায় ৩০ বছর ধরে সড়ক ও সেতু নির্মাণের দাবীতে শিক্ষক, ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তারপরও দুই কিলোমিটার মাটির সড়ক ও দুটি সেতুর নির্মাণ আজো অনিশ্চিত হয়ে আছে। কেন এই অবজ্ঞা দুটি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের প্রতি?
বরিশালের সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি তার এলাকা কর্ণকাঠী নিয়ে কথাই বলতে রাজী নন।
কিন্তু সাংসদ পানি প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল অবঃ জাহিদ ফারুক কি একবার হেঁটেছেন এ পথে।
চরকারঞ্জী হাইস্কুলের শিক্ষক ছাত্রদের মানববন্ধন, ব্যবসায়ীদের দাবী সবকিছু অগ্রাহ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে কতটা শক্তিশালী করছেন এই রাজনৈতিক নেতারা ?
আগের চেয়ারম্যান প্রয়াত শাহজাহান ভুইয়ার সাথে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই নাকি এই এলাকায় আসেননা চেয়ারম্যান ছবি। মাটির এই সড়কটির আপাতঃ দৃষ্টিতে যেটুকু উন্নতি সবটাই প্রয়াত শাজাহান চেয়ারম্যান এর অবদান বলে জানান পূর্ব কর্ণকাঠীর বাসিন্দারা। বাঁশের সাঁকোটিও গ্রামবাসী চাঁদা তুলে চলাচলের জন্য তৈরি করে নিয়েছেন বলে জানান ব্যাবসায়ী শহিদুল।
ভূইয়া মসজিদ থেকে ইটবিছানো পথটুকু নিজস্ব টাকায় এলাকাবাসী ও সাবেক চেয়ারম্যান এর ছেলেরা করে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
কর্ণকাঠী ইউনিয়ন এর মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। এর মধ্যে পূর্ব কর্ণকাঠী ৮ নং ইউনিয়ন এর মোট ভোটার প্রায় পাঁচ হাজার। এখানে আশেপাশে কোনো হাইস্কুল না থাকায় গ্রামের বেশিরভাগ ছেলেমেয়েরা ওপারে চরকরঞ্জী হাইস্কুলে পড়াশুনা করে। সেতু ও সড়কের বেহাল দশায় তাদের লেখাপড়ার সুযোগ নষ্ট তো হচ্ছেই, একইসাথে এলাকার অসুস্থ মানুষকেও সুচিকিৎসার জন্যও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বরিশাল সদর থেকে নৌকায় অথবা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অটোরিকশায় ২০ মিনিটের পথে এই গ্রামের মানুষের যাতায়াত। পূর্ব কর্ণকাঠী থেকে সেতু ও সাঁকো পার হলে চরকরঞ্জী বাজার ও স্কুল। এখানের সড়কের একটি চলে গেছে ঘোপের হাট হয়ে তালুকদার হাট হয়ে কাটাদিয়া বা গোমা। অন্যটি রাণীর হাট হয়ে গোমা বা বাকেরগঞ্জ। পুরো এলাকাটিতেই সদর উপজেলার প্রভাব। চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি হাওলাদার এবং সাংসদ পানি প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!