ঝালকাঠিতে এখন বিদ্যালয়ের মাঠে চলছে ধান চাষ : শফিকুল ইসলাম জুয়েল

অতিথি লেখক

Sharing is caring!

ঝালকাঠিতে এখন বিদ্যালয়ের মাঠে চলছে ধান চাষ
শফিকুল ইসলাম জুয়েল

Exif_JPEG_420

ঝালকাঠি প্রতিনিধি ঃ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় তিনটি বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ চষে পুরোদমে চাষাবাদ শুরু করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজ করে শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠে চলছে এখন আমনের চাষাবাদ। উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুরের ইউসুব আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফিরোজা মজিদ বিদ্যালয় ও ৩১নং দক্ষিণ রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এখন এ দৃশ্য চোখে পড়বে।
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অর্থের বিনিময় ম্যানেজ করে স্থানীয় প্রয়াত সেকেন্দার আলী হাওলাদারের ছেলে মো. মোশারফ আলী হাওলাদার ট্রাক্টর দিয়ে দক্ষিণ রাজাপুরের ইউসুব আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে চাষ করেছেন। পাশাপাশি এ দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি মাঠেই শিক্ষার্থীরা খেলাধূলা করে আসেছিলো।
এদিকে শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ নষ্ট হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলেন, টাকার বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক স্কুলমাঠ নগদ টাকায় চুক্তিতে লাগিয়ে দিয়েছেন। বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা এখানে ফুটবল খেলে। কিন্তু এখন আর খেলাধূলার সে সুযোগ থাকলোনা।
সরেজমিনে, ইউসুব আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মোশারফ আলী হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে জমি চাষ করতে দেখা যায়। জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিকের কাছ থেকে নগদ টাকার বিনিময়ে স্থানীয় যুবলীগনেতা মাইনুল ইসলাম স্কুল মাঠ চাষ করার অনুমতি নিয়েছেন।
অপরদিকে দক্ষিণ রাজাপুরের ফিরোজা মজিদ বিদ্যালয়ের মাঠেরও একই অবস্থা। সেখানেও বীজতলা তৈরির অনুমতি দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই মাঠেও চাষাবাদ করে ধানের বীজ বপন করা হয়েছিল। এখন ধানের চারাও বড় হতে শুরু করেছে। ফিরোজা মজিদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফিরোজ আলম বলেন, স্কুলের দপ্তরী আমার অনুমতি নিয়েই বীজতলা তৈরী করেছে। এখন স্কুল বন্ধ তাই অনুমতি দিয়েছি।
ইউসুব আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু বকর সিদ্দিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না, সব বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি করেছে।
ইউসুব আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আলিম আল মাসুদ জানান, এখনতো বিদ্যালয় বন্ধ, মাঠে বীজতলা তৈরী করলে এর সুবিধা কোন না কোন ভাবে সবাই ভোগ করবে।
যুবলীগ নেতা মাইনুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় মাঠে ধান চাষের বিষয়টি আমি জানি, তবে এখানে টাকার কোনো লেনদেন হয়নি।
এ ব্যাপারে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোক্তার হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ধান চাষ করার কোন বিধান নেই। মাঠটি শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য উম্মুক্ত থাকবে। বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। এবিষয়ে প্রধান শিক্ষককে ডেকে যথাযথ ব্যববস্থা গ্রহন করা হবে।
(দৈনিক বরিশাল প্রতিদিন থেকে গৃহিত)

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!