উন্মুক্ত হলো স্বপ্নের পায়রা সেতুঃ বানিজ্যিক বরিশালের প্রথম দ্বার

আরিফ আহমেদ

Sharing is caring!

“আমরা আর ভিক্ষা করবোনা। আমরা নিজেরা সয়ং সম্পূর্ণ হয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো। ” এই দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের প্রথম দ্বার পায়রা সেতু চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দিলেন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৪ অক্টোবর রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বহু প্রতিক্ষিত চার লেনের দৃষ্টিনন্দন এই সেতুর উদ্বোধন করেন তিনি ।

এর ফলে পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের সাথে বরিশাল শহর তথা বাংলাদেশের সব জেলায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হলো। এতে করে বানিজ্যিক নগরীর যাত্রায় বরিশাল একধাপ এগিয়ে গেলো। পদ্মাসেতু চালু হলেই বরিশালকে বানিজ্যিক নগরী ঘোষণার সব পথ উম্মুক্ত হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বরিশালের সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ দুলাল।

এতে করে রাজধানী থেকে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের নগরী কুয়াকাটার দূরত্ব অনেক কমে গেল এবং কক্সবাজারের চেয়েও কুয়াকাটার পর্যটক বেশি হবার আশাবাদ ব্যক্ত করলেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদল।

এ সেতুর দ্বার উম্মুক্ত হওয়ার ফলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পৌঁছতে এখন সময় লাগবে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা।
এবং বরিশাল থেকে একঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হবে কুয়াকাটায়।

ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী এলাকার পায়রা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এই পায়রা সেতু। নদীর নামেই সেতুটির নামকরণ প্রচলিত হয়ে গেছে জনমনে। তাই নতুন কোনো নামকরণ ছাড়াই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এর উদ্বোধন ঘোষণা দিলেন আনন্দের সাথে।  এ সময় পটুয়াখালী প্রান্তে যুক্ত হয়ে উদ্বোধন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল অবঃ জাহিদ ফারুক সহ বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার প্রায় সব সাংসদ এতে উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আমির হোসেন আমুসহ জেলা মহানগর নেতৃবৃন্দ। বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদল এবং জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার সহ বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।

তবে টোল আদায়ের বিষয়ে অতিরিক্ত টোল ভাড়ার অভিযোগের কোনো সুরাহা না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন পরিবহন নেতারা।
তারা টোল না কমানো পর্যন্ত ফেরী ব্যবস্থা চালু রাখা ও টোল পূনঃনির্ধারনের দাবী জানান।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সদস্য সচিব রফিকুল আলম বলেন, পায়রা সেতুর উদ্বোধন ও যান চলাচলের সুফল এই নয় যে টোল অস্বাভাবিক বৃদ্ধি করা। এতে ভাড়াই শুধু বাড়বে তা নয়, বরং সবকিছুতে এর প্রভাব পরবে। নিত্যপণ্যের দামেও পরবে।

বাংলাদেশ সরকার ও কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের যৌথ অর্থায়নে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘লংজিয়ান রোডস অ্যান্ড ব্রিজ কোম্পানি’ সেতুটি নির্মাণ করেছে।

সর্বাধুনিক ‘এক্সট্রাডোজড কেবল স্টেইড’ প্রযুক্তিতে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর শাহ আমানত সেতুও একইভাবে নির্মাণ করা হয়।
১ হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার প্রস্থের সেতুটি কেবল (তার) দিয়ে দুই পাশে সংযুক্ত। পানির উপরিতল থেকে সেতুটি ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচু। উভয় পাড়ে সাত কিলোমিটারজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে সংযোগ সড়ক। এই সেতুতে ১৩০ মিটার গভীর পাইল বসানো হয়েছে। নদীর মাঝখানে মাত্র একটি পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!

About the author

ডিসেম্বর ৭১! কৃত্তনখোলার জলে সাঁতার কেটে বেড়ে ওঠা জীবন। ইছামতির তীরঘেষা ভালবাসা ছুঁয়ে যায় গঙ্গার আহ্বানে। সেই টানে কলকাতার বিরাটিতে তিনটি বছর। এদিকে পিতা প্রয়াত আলাউদ্দিন আহমেদ-এর উৎকণ্ঠা আর মা জিন্নাত আরা বেগম-এর চোখের জল, গঙ্গার সম্মোহনী কাটিয়ে তাই ফিরে আসা ঘরে। কিন্তু কৈশরী প্রেম আবার তাড়া করে, তের বছর বয়সে তের বার হারিয়ে যাওয়ার রেকর্ডে যেন বিদ্রোহী কবি নজরুলের অনুসরণ। জীবনানন্দ আর সুকান্তে প্রভাবিত যৌবন আটকে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় পদার্পন মাত্রই। এখানে আধুনিক হবার চেষ্টায় বড় তারাতারি বদলে যায় জীবন। প্রতিবাদে দেবী আর নিগার নামের দুটি কাব্য সংকলন প্রশ্ন তোলে বিবেকবানের মনে। তার কবিতায়, উচ্চারণ শুদ্ধতা আর কবিত্বের আধুনিকায়নের দাবী তুলে তুলে নেন দীক্ষার ভার প্রয়াত নরেণ বিশ্বাস স্যার। স্যারের পরামর্শে প্রথম আলাপ কবি আসাদ চৌধুরী, মুহাম্মদ নুরুল হুদা এবং তৎকালিন ভাষাতত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রাজীব হুমায়ুন ডেকে পাঠান তাকে। অভিনেতা রাজনীতিবিদ আসাদুজ্জামান নূর, সাংকৃতজন আলী যাকের আর সারা যাকের-এর উৎসাহ উদ্দিপনায় শুরু হয় নতুন পথ চলা। ঢাকা সুবচন, থিয়েটার ইউনিট হয়ে মাযহারুল হক পিন্টুর সাথে নাট্যাভিনয় ইউনিভার্সেল থিয়েটারে। শংকর শাওজাল হাত ধরে শিখান মঞ্চনাটবের রিপোটিংটা। তারই সূত্র ধরে তৈরি হয় দৈনিক ভোরের কাগজের প্রথম মঞ্চপাতা। একইসমেয় দর্শন চাষা সরদার ফজলুল করিম- হাত ধরে নিযে চলেন জীবনদত্তের পাঠশালায়। বলেন- মানুষ হও দাদু ভাই, প্রকৃত মানুষ। সরদার ফজলুল করিমের এ উক্তি ছুঁয়ে যায় হৃদয়। সত্যিকারের মানুষ হবার চেষ্টায় তাই জাতীয় দৈনিক রুপালী, বাংলার বাণী, জনকণ্ঠ, ইত্তেফাক, মুক্তকণ্ঠের প্রদায়ক হয়ে এবং অবশেষে ভোরেরকাগজের প্রতিনিধি নিযুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়ান ৬৫টি জেলায়। ছুটে বেড়ান গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। ২০০২ সালে প্রথম চ্যানেল আই-্র সংবাদ বিভাগে স্থির হন বটে, তবে অস্থির চিত্ত এরপর ঘনবদল বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, আমাদের সময়, মানবজমিন ও দৈনিক যায়যায়দিন হয়ে এখন আবার বেকার। প্রথম আলো ও চ্যানেল আই আর অভিনেত্রী, নির্দেশক সারা যাকের এর প্রশ্রয়ে ও স্নেহ ছায়ায় আজও বিচরণ তার। একইসাথে চলছে সাহিত্য বাজার নামের পত্রিকা সম্পাদনার কাজ।