মানবিকতা এখন শোডাউনঃ সংবাদ বন্দী অসহায় মানুষের হাহাকার
প্রায়শ পত্রিকার পাতায় শিরোনাম হচ্ছে জেলা প্রশাসক ও সিটি মেয়রের কিম্বা রাজনৈতিক নেতাদের দান বা ত্রাণ তৎপরতার গল্প। যা নিয়ে প্রশংসার ঝর। একজনকে দান সদকার জন্য দশ জনের শিরোনাম ছবি অহরহ প্রকাশ পাচ্ছে পত্রিকার পাতায়। অথচখোঁজ নিয়ে দেখা যায় শূণ্য খাঁ খাঁ অসহায় হতদরিদ্রের ঘর।
সরেজমিনে এমনই কিছু দান-খয়রাতের গল্প নিয়ে আমাদের এই প্রতিবেদন।
করোনাকালীন সংকটে চারিদিকে যখন কর্মহীনতা ও লকডাউনে বিপর্যস্ত জীবন ঠিক তখন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী, প্রশাসন ও মন্ত্রী সকলের দান-খয়রাতের গল্প যখন শিরোনাম পত্রিকার পাতায় ঠিক তখন সেই পত্রিকার পাতায় ছাপা হয়েছিল অসহায় ফুলবানু, পারুল বেগম, চাঁন মিয়া ও জাহাঙ্গীরের মানবিক জীবনযাপনের গল্প। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল বরিশাল জেলার প্রায় সব রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের যোগ্য ব্যক্তিত্বের। অথচ আজ পর্যন্ত ঐ অসহায় মানুষগুলোর কাছে পৌঁছেনি কোনো সাহায্য সহযোগিতা। এমনি সময় কানে এলো বরিশালের জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার এর উদারতার গল্প।
বুধবার! দিনটি বরিশালের জেলা প্রশাসক কক্ষে ছিলো গণশুনানির আয়োজন। প্রতি বুধবার সাধারণ মানুষের সাথে সরাসরি দেখা করে তাদের সমস্যা শুনে তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়ার একটি দিন এই বুধবার। অন্যসব দিনের তুলনায় এদিনের চিত্রও তাই ভিন্ন। জেলা প্রশাসক ভবনের সামনে ও ভিতরে দেখা যায় অসহায় দরিদ্র মানুষের উপচে পরা ভিড়।
বরিশাল জেলার দশ উপজেলা ছাড়িয়ে বিভাগের অন্যজেলার অসহায় অনেক মানুষ ছুটে আসেন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার এর সাথে একটু দেখা করে নিজের কষ্টের ও চাহিদার কথা বলতে। বাচ্চা নিয়ে অসহায় মা, বয়স্ক বৃদ্ধা, কর্মহীন নারী-পুরুষ, দুঃস্থ সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক ও সাহিত্যের মানুষের ভিড় এদিন জেলা প্রশাসক কক্ষে।
কিন্তু সবাইতো জেলা প্রশাসক কক্ষে প্রবেশ করতে পারেননা। আবার অনেকে আসেন যারা সাহসই পাননা ভবনের ভিতরে ঢুকতে। আশায় থাকেন যদি কোনো দয়াবান তাকে ডেকে নেন। আবার এমন অনেক অসহায় মানুষ আছেন এদিনটি সম্পর্কে জানেনই না তারা। যারা জানতে পেরেছেন ও কক্ষে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন তাদের একজন বিনাদোষে ২৬ বছর কারাভোগ করা অসহায় পেয়ারা বেগম। পিরোজপুর থেকে তিনি ছুটে এসেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসকের কাছে। কারণ, তিনিই তাকে কারাবাসের কবল থেকে মুক্ত করেছেন। এই পেয়ারা বেগমের বিয়ের ব্যবস্থায় নিজে ত্রিশ হাজার ও পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেনকে ফোনে অনুরোধ জানিয়ে বিশ হাজার টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করে দিলেন তাৎক্ষণিকভাবে। এরপর তিনি গলা জড়িয়ে ধরে সমস্যা শোনেন একজন বীরাঙ্গনা মায়ের। সাথে সাথে সমস্যার সমাধানও করেন আরো অনেক জনের। এর মাঝে মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় উদ্যোক্তা সহ রয়েছেন আরো অনেকে। সকলেই কিন্তু এসেছেন কোনো না কোনো মাধ্যম ধরে। রাজনৈতিক বা সাংবাদিক নেতাদের সাহায্য নিয়ে। কিন্তু বাহিরে অপেক্ষমান অনেক হতদরিদ্র নারী পুরুষ, বৃদ্ধ অসহায় মানুষ। যাদের দেয়া আবেদন সংগ্রহ করে অফিস সহকারী জমা দেন জেলা প্রশাসক কক্ষে। কিন্তু তাদের কখনো ভিতরে ডাকা হয় বলে মনে হয়নি প্রশাসনের লোকদের কথায়।
প্রতি গণশুনানিতে এরকম একশতের বেশি আবেদন জমা পড়ে, আবেদন অনুযায়ী সকলকে যথাসম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করেন জেলা প্রশাসক এ তথ্য জানালেন জেলা প্রশাসনের গোপনীয় বিভাগের কর্মকর্তা সুব্রত বিশ্বাস।
আর অপেক্ষমাণ মানুষদের দাবী, স্যার মোরাতো জেলা প্রশাসক স্যারকে চিনিনা। তারে একটু দেহাইয়া দেন।
আবার কেউ বলেন, মোগো লগে হেয় কি কথা কইবো? মোগো লইয়া একটা হলরুমে বসাইয়া দেন। হেইহানে স্যাররে মোরা দেখতেও পামু, মোগো কতা কইতেও পারমু।
আসলেও তাই। এই মানুষগুলোকে সভা কক্ষে বা সেমিনার কক্ষে বসিয়ে গণশুনানির আয়োজন করলে বিষয়টি অনেক প্রশংসনীয় হতো। এভাবে একজন একজন করে শুধু সুপারিশ প্রাপ্তদের ডেকে নিয়ে আদৌ গণশুনানি হয় কি?
গণশুনানির শুরুটা বরাবরই কিছুটা বিলম্ব হয়। একঘন্টা দেড়িতে বেলা ১২ টায় শুরু হয় গণশুনানির আয়োজন। অপেক্ষমান সাধারণ মানুষের মাঝে হাল্কা নাস্তা হিসেবে কিছু খাদ্যও বিতরণ করা হয় এরই মাঝে। জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার এর কক্ষে তখন হোসনে আরা নামের একজন বৃদ্ধা, সাংবাদিক ও মৃত মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রীসহ আরো কয়েকজন। বৃদ্ধার ঘর নেই। ঘরের আবেদন নিয়ে ছেলের সাথে এসেছেন গৌরনদী থেকে। এনজিও কর্মী এসেছেন শুভেচ্ছা উপহার নক্সিকাথা নিয়ে। অসহায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ঘর চান। তার বেশভুষায় দারিদ্রতার কোনো ছাপ নেই। তাই কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের ছাপ জেলা প্রশাসকের চোখে। তারপরও আন্তরিকতা নিয়েই আশ্বাস দিয়ে বিদায় করলেন তাদের। একইসাথে গৌরনদীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ফোন করে বলে দিলেন যাচাই বাছাই করে তাকে ঘর দেয়ার জন্য।
এভাবেই কক্ষে অপেক্ষারত আরো মানুষের সাথে কথা বলেন তিনি। সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানও দিয়ে দেন সাথে সাথে। এভাবে জনাবিশেক মানুষের সাথে কথা বলতে বলতে বেলাশেষ, ছুটতে হয় তাকে অন্য কাজে। পথে যেতে যেতেও আরো দুজন সাংস্কৃতিক কর্মি ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কথা শুনলেন বটে, কিন্তু শিশু সন্তান নিয়ে সকাল থেকে বসে থাকা ক্লান্ত দুই মা তার দৃষ্টিতে ধরা পরেননি। যদি পড়তো তাহলে হয়তো সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হতেন জসিম উদ্দিন হায়দার নিজেই।
কেননা, অসহায়ের পাশে থাকা তার মজ্জাগত আদর্শ। যার প্রমাণ ইতিমধ্যেই রেখেছেন তিনি ভিক্ষুক মুক্ত বরিশাল গড়ার অঙ্গিকারে। ভিক্ষুক শাহ আলম, সুমন, নূর জাহানকে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে ফিরিয়ে আনতে মুদি দোকানের মালামাল, ভ্যানগাড়ি ও সেলাইমেশিন দিয়ে সাহায্য করেছেন। এ পর্যন্ত জেলায় কম হলেও দুই শতাধিক ভিক্ষুককে তিনি ব্যক্তিগত সাহায্য দিয়েছেন বলেও জানা গেছে। কক্ষ থেকে বের হবার আগে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার আক্ষেপ করে বললেন, ১৪টা জেলায় চাকুরী করেছি। যেখানে কাজ করেছি, সেখানের চিত্র বদলে দিয়েছি। কিন্তু বরিশালের মতো দারিদ্র্য কোথাও নেই। নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালি ও ঢাকার মতো বরিশালকে সাজাতে চাই আমি। কিন্তু পথ পাইনা। এখান থেকে বিদায় নেবার আগে বানিজ্যিক নগরীতে বদলে দিতে চাই বরিশালকে। আপনারা শিল্পকারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়ে আসুন। আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা দেব। যদিও বরিশাল বিসিক শিল্পনগরী আজো অবহেলিত একটি নাম। তবে বিসিককে শক্তিশালী করার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানালেন তিনি। গত ৩ জানুয়ারি ২০২১ তিনি বরিশালের জেলা প্রশাসক হয়ে কাজে যোগদান করেছেন। এর আগে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। বছরও হয়নি অথচ তার জনপ্রিয়তা এখন এমন যেন তিনি আজন্ম বরিশালবাসী।
একইরকম অভিজ্ঞতা বরিশালের সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে নিয়ে। গত ২০১৮ সালে মেয়র এর দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ১৮ জনের মাঝে ৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরবর্তী অর্থ বছর গুলোতে তিনি অর্থ সহায়তা গ্রহনকারী ও অর্থের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে থাকেন। এ ধারাবাহিকতায় ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১৭৪ জন অসহায়ের মাঝে ২৭ লাখ ৭৬ হাজার এবং ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ২৯৩ জন অসহায় দরিদ্রের মাঝে ৫৬ লাখ ৩৬ হাজার ও সর্বশেষ ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের শুরুতেই ১২৩ জনের মাঝে ১৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা প্রদান করে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন। সরকারি টাকার অপব্যবহার না করে তা সঠিকভাবে জনসাধারণের হাতে তুলে দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও মেয়র সাদিক সত্যি প্রশংসার দাবীদার। কিন্তু এ দাবী ম্লান হয়ে যায় যখন পত্রিকার পাতায় খুঁজে পাওয়া হতদরিদ্র ফুলবানু, পারুল বেগম, চাঁন মিয়া, জাহাঙ্গীর এবং বিছানায় ছটফট করা অসুস্থ নুরুল ইসলাম জমাদ্দার এর গল্প কানে আসে। তাদের জন্য সাহায্য চেয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের দীর্ঘদিন পরেও যখন তাদের জীবনযাপনের একইচিত্র চোখে পড়ে তখন কষ্ট হয় ভীষণ।
বরিশালে এসে সাংবাদিকতার কাজে বের হয়ে চার পাঁচজন অসহায় মানুষের মুখোমুখি হয়ে তাদের কথা তুলে ধরার ব্যর্থ চেষ্টায় প্রশাসন ও নেতাদের শোডাউনই চোখে পড়ে বারবার। এমন শোডাউনের নজীর অসংখ্য। এমনকি প্রশাসন বা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের কোনো দানই পায়না সত্যিকারের অসহায় মানুষগুলো। কারণ, ক্ষুদার্ত ঐ মানুষেরাতো জেলা প্রশাসন বা সিটি করপোরেশন কার্যালয় সম্পর্কে জানেনা। তাদেরতো কোনো নেতা বা গণমাধ্যমের বন্ধু নেই। ফলে আজ পর্যন্ত কোনো সাহায্য জোটেনি তাদের কপালে। এমনকি সব নেতা, সাংসদ, মন্ত্রীদের সংবাদ লিংক দিয়ে বিশেষ অনুরোধ জানানোর পরও কেউই গুরুত্ব দেননি এই অসহায় মানুষগুলোর প্রতি।
বরিশালের বিএনপি নিজেদের গৃহবন্দী দাবী করে করোনাকালীন সংকটে তাদের দায় এড়িয়ে যান। সযং মজিবর রহমান সরোয়ার ও শিরিন জাহান শোনান আওয়ামী লীগের বাঁধা দেওয়ার গল্প। আর আওয়ামী লীগ নেতাদের দান খয়রাত বেশিরভাগই বাছাইকৃত সমর্থক ও অনুসারীদের জন্য। তালুকদার মোঃ ইউনুস ও জাহাঙ্গীর খোকনের ব্যস্ত দান খয়রাত শুধু উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কর্মীদের মাঝে।
বাসদ নেত্রী ডাঃ মনীষা ব্যস্ত মহা শোডাউন অক্সিজেন, ঔষধ সরবরাহ ও অটোরিকশা চলার অনুমতি নিয়ে। যদিও বিপদগ্রস্ত কেউ তাকে ফোন করলে জানতে পারেন- তিনি খুব ক্লান্ত। এখন বিশ্রামে।
অসহায় ফুলবানুর গল্প
এদিকে না খেতে পাওয়া ফুলবানু সন্তান নিয়ে বরিশালের ২৩ নং ওয়ার্ড রুয়ারপুল এলাকায় একটি ঘর ভাড়া করে থাকেন। তাঁর এক সন্তান আত্মহত্যা করেছে স্কুলের বেতন দিতে না পারার যন্ত্রণায়। রাতের অন্ধকারে শাঁক বিক্রি করে জীবীকা তার। করোনাকালীন সংকটে কিশোর ছেলেটার বন্ধ হয়েছিলো সব উপার্জন পথ। এলাকাবাসী কেউ কেউ টুকটাক কাজ করিয়ে তাকে সাহায্যের চেষ্টা করেন। সরকারের গৃহহীন ঘর কর্মসূচির আওতায় সবার আগে ফুলবানুর নাম আসা উচিত বলে মনে করেন রুয়ারপুল এলাকার বাসিন্দারা।
পারুল বেগম
বাকেরগঞ্জ থানাধীন পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের পাটশিবপুর গ্রামের দুই মেয়ের জীবন মান রক্ষার জন্য পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দুটি বছর ধরে। বরিশাল শহরের সার্কুলার রোডে চা বিক্রি করে জীবীকা তার। পারুল বেগম দান খয়রাত চাননা। চান পাটশিবপুরে নিজ ঘরে ফিরে যাওয়ার নিশ্চয়তা। তিনি গ্রামের স্থানীয় প্রভাবশালীদের অত্যাচারের শিকার। যুবতী মেয়েদের নিরাপত্তা চান প্রশাসনের কাছে।
চাঁন মিয়া
উজিরপুর উপজেলার ৮নং শিকারপুর উজিরপুর কিম্বা ১ নং সাতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা চাঁন মিয়া বাজারে বাজারে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে ঘুরে বেড়ান সত্তুরের বেশি বয়সে। বয়স্ক ভাতাতো দূরের কথা এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার থেকে সামান্য সাহায্যটুকু পান না বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার কথার অস্পষ্টতায় উঠে আসে দূটি ইউনিয়নের নাম। তবে বরিশালের পোর্ট রোড বাজারের অনেকেই চেনেন এই চাঁন মিয়াকে। তারা এটাসেটা বাজার দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন অসহায় এই বৃদ্ধের জীবন। আল্লাহর কাছে তাই হাজার শুকরিয়া জানান বৃদ্ধ চাঁন মিয়া। অভিযোগ একটাই চেয়ারম্যান মেম্বার কেউই তাকে সাহায্য করেন না।
অসহায় জাহাঙ্গীর
ক্রাচে ভর করে পথচলা গাড়িচালক জাহাঙ্গীরকে নথুল্লাবাদ বাসসষ্টান্ডের সবাই চেনেন। তিনি ছুটে বেড়ান ত্রাণের গাড়ির পিছনে কিম্বা কোথাও দান খয়রাত হচ্ছে শুনলেই ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করেন বটে, কিন্তু খুড়িয়ে খুড়িয়ে তিনি যখন পৌঁছান তখন শেষ হয়ে যায় ত্রাণ তৎপরতা। ফলে স্থানীয় কাউন্সিলর লিটন মোল্লার কিছু সাহায্য তিনি পেলেও তা যথেষ্ট নয় ছয় সদস্যের পরিবারের জন্য। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহও গত বছর কিছু সাহায্য করেছেন বলে জানান তিনি। তবে চলতি বছর বউ সন্তান নিয়ে কষ্টে আসেন।
নরুল ইসলাম জমাদ্দার
বাকেরগঞ্জ থানাধীন সঠিখোলা গ্রামের নরুল ইসলাম জমাদ্দার দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে বিছানায় পরে আছেন। সুচিকিৎসার অভাবে যন্ত্রণায় ছটফটানি তার অভাবের সংসার। তিনি দান খয়রাত চাননা। চান সুচিকিৎসার ব্যবস্থা। পৈতৃক সুত্রে প্রাপ্ত তার সয়সম্পত্তি কিছু আছে। সেগুলোর ব্যবহারের শক্তি নেই শরীরে। ভাইবোনদের সাথে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ঝামেলা থাকায় বিক্রি করে নিজের চিকিৎসাও করাতে অক্ষম তিনি। উপার্জনহীন গত দুটিবছর। বড় মেয়েটি দশম শ্রেণির পরীক্ষার্থী। আর ছোট ছেলেটি শিশু। তাঁর একটু সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয়ার আকুতি লাড়া দিতে পারেনি কোনো নেতা বা প্রশাসনের লোকের বিবেকে। তাকে নিয়ে সংবাদ হয়েছে। সংবাদ লিংক পেয়েছেন সবাই।
হাঃ এদের সকলের সংবাদ প্রতিবেদন লিংক প্রতিবেদক নিজে দায়িত্ব নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হোয়াটসএ্যাপ ও ইনবক্সে যুক্ত করেছেন, ফোন করে নিশ্চিত হয়েছেন। সিটি মেয়র, ইউএনও এবং জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, সাংসদসহ সবাই জেনেছেন ঘটনা। তারপরও দেখিয়েছেন উদাসীনতা।
তাহলে সরকারের দেয়া কোটি কোটি টাকার শীতবস্ত্র, পুনর্বাসন ঘর ও খাদ্য ত্রাণ কোথায় যায়, কারা পায় সরকারের সহানুভূতি ? এ প্রশ্নের উত্তর জানা নেই আজো কারো।