বাংলাদেশের প্রায় সব বিষয়েই ভারতের আগ্রহ অতিমাত্রায়। পড়শী হিসেবে বড়ভাই সুলভ আচরনের পাশাপাশি আমাদের রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও ভারতের ভূমিকা অপরিসীম। তারই প্রমাণ বহন করছে গত পাঁচদিন আনন্দবাজার পত্রিকার এই শিরোনাম ও সংবাদ। গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত আনন্দ বাজার পত্রিকায় প্রকাশিত উর্লেখযোগ্য শিরোনাম
১)মিছিলেই ভাসল হরতাল, সংঘর্ষে নিহত ৫
২) আবার ৬০ ঘণ্টার হরতাল বাংলাদেশে
৩) হরতাল উঠল, তারেকের প্রত্যর্পণ চেয়ে চিঠি
৪) ৭২ ঘণ্টা হরতাল, মোকাবিলায় কড়া হাসিনা
বাংলাদেশের পাঠকের জন্য ঐ সংবাদগুলো হুবহু তুলে ধরা হলো।
৭২ ঘণ্টা হরতাল, মোকাবিলায় কড়া হাসিনা
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঢাকা
ফের লাগাতার হরতালের পথই বেছে নিল বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। ইতিমধ্যেই পর পর দু’সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টা করে দু’টি হরতাল করেছে তারা। এ বার রবিবার থেকে তা বেড়ে ৭২ ঘণ্টা। হরতালের নামে বেপরোয়া ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে সরকারও এ বার কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। প্রাক্তন মন্ত্রী মওদুদ আহমেদ-সহ বিএনপি-র সর্বোচ্চ নেতৃত্ব স্থায়ী কমিটির তিন নেতাকে রাতেই আটক করেছে পুলিশ। বেগতিক বুঝে বিএনপি-র অনেক নেতাই গা-ঢাকা দিয়েছেন। কিন্তু খোদ প্রধানমন্ত্রী টেলিফোনে বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াকে আলোচনায় ডাকার পরে অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা নিয়ে ঐকমত্য সৃষ্টির যে আশা দেখা গিয়েছিল, সরকার ও বিরোধী পক্ষের কড়া অবস্থানে তা এক রকম ভেস্তেই যেতে বসেছে।
বিএনপি ও তার জোটসঙ্গী জামাতে ইসলামির ডাকা আগের দু’দফার হরতালে অন্তত ২৭ জন মারা গিয়েছেন। আহত প্রায় ৭০০। কিন্তু দু’বারই হরতালের আগের দিন থেকে দেশজুড়ে বেপরোয়া নাশকতা চালিয়েছে বিএনপি-জামাত কর্মীরা। সংবাদপত্র দফতর ও বিচারকদের বাড়ির সামনেও বোমাবাজি হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগানো হয়েছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ট্রাক। ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে। মানুষ আতঙ্কে বাড়ির বাইরে বার হয়নি। প্রধানমন্ত্রী কালই জনসভায় জানান, ফের হরতাল ডাকা হলে সরকার কড়া হাতে তার মোকাবিলা করবে।
এ দিন স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পরে বিএনপি নেতৃত্ব রবিবার থেকে ফের ৭২ ঘণ্টার হরতালের কর্মসূচিই ঘোষণা করেন। তার পরেই পুলিশ বিএনপি-র অফিস ঘিরে ফেলে। বিপদ বুঝে অনেক নেতাই দফতর ছেড়ে চলে যান। প্রাক্তন মন্ত্রী মওদুদ আহমেদ, এম কে আনোয়ার ও রফিকুল ইসলাম মিয়াকে সাদা পোশাকের পুলিশ একটি পাঁচতারা হোটেলের চত্বর থেকে আটক করে। তাঁরা একটি সংবাদপত্রের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন।
জানুয়ারিতে এই সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সরকারের এক শীর্ষ সূত্রের মতে, আলোচনা এড়িয়ে তত দিন পর্যন্ত দফায় দফায় হরতাল চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি নেতৃত্ব। তাঁর দাবি সরকার ও দেশকে অচল করার অন্যতম লক্ষ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করে দেওয়া। এর পরেই সরকার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক, কড়া হাতে হরতালকারীদের দমন করা এবং দুই, বিভিন্ন দলের নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে একটি সর্বদলীয় সরকার গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করা। তার প্রস্তুতি হিসেবে এ দিন ৩ মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর দফতরে তাঁদের পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। আগামী কয়েক দিনে আরও কয়েক জন মন্ত্রী ইস্তফা দিতে চলেছেন।
হরতাল উঠল, তারেকের প্রত্যর্পণ চেয়ে চিঠি
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঢাকা
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিরোধী বিএনপি-জামাতে ইসলামি জোটের ডাকা দ্বিতীয় দফার ৬০ ঘণ্টা হরতাল বুধবার সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে। আলোচনা শুরু না-হওয়ার জন্য সরকার ও বিরোধীরা একে অপরকে দোষারোপ করা ছাড়া বিষয়টি নিয়ে নতুন কোনও অগ্রগতি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে দুর্নীতির একটি মামলার আসামি বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে দেশে ফেরাতে নতুন তৎপরতা শুরু করল বাংলাদেশ সরকার।
আদালতের পরোয়ানা-সহ প্রত্যর্পণের আর্জি জানিয়ে একটি চিঠি মঙ্গলবার কূটনৈতিক মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারের ‘ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো’র কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এর আগে জুনেও একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। অর্থ পাচার ছাড়া শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলার একটি মামলারও আসামি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান। আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পুলিশ হেফাজতে তাকার সময়ে মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত পান তারেক। চিকিৎসার জন্য তিনি এখন লন্ডনে। সেখানে আইন নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি বিএনপি-কে নেতৃত্বও দিচ্ছেন সাবেক সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের এই পুত্র। বিএনপি-র কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভি বুধবার বলেন, তারেকের জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়েই সরকার তাঁকে নানা মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। নির্বাচনের আগে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই নতুন করে তৎপরতা শুরু হয়েছে।
জানুয়ারিতে মেয়াদ ফুরোচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের। তার মধ্যেই বাংলাদেশে নির্বাচিত নতুন সরকার গঠন হওয়ার কথা। কিন্তু কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে তা নিয়ে সরকার ও বিরোধী পক্ষের ঐকমত্য না হওয়ায় রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনার ভিত্তিতে একটি সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি চায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। প্রধানমন্ত্রী ফোন করে বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াকে আলোচনায় ডাকলেও সঙ্কট কাটেনি। নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেওয়ার শর্ত চাপিয়ে তারা আলোচনা এড়িয়ে হরতালের পথ নিয়েছে। এর মধ্যেই মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তা স্টিভ শ্যাবট ঢাকায় এসে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, বাংলাদেশে সব পক্ষের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোটই তাঁদের কাম্য।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বুধবারও বলেছেন, সরকারের তরফে নিঃশর্ত আলোচনার প্রস্তাব দেওয়াই রয়েছে। বিরোধীরা এলেই তা শুরু হতে পারে। ইনু আশা প্রকাশ করেছেন, দ্বিতীয় দফার হরতাল কর্মসূচি শেষ করে এ বার নিশ্চয়ই তারা আলোচনায় বসার ফুরসত পাবে। উল্টো দিকে বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বুধবারও বলেছেন, সরকার আবার আলোচনায় ডাকলে তাঁরা যাবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগের আলোচনার প্রস্তাব সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য তিনি একটি নির্দিষ্ট দিন দিয়েছিলেন। বেগম জিয়া জানিয়েছিলেন, পূর্বনির্ধারিত হরতালের কর্মসূচি থাকায় ওই দিন আলোচনায় বসা যাবে না। সুতরাং, সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে গিয়েছে। সরকারকে আবার আলোচনায় ডাকতে হবে। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি-র ওপর চাপ সৃষ্টির জন্যই তারেককে প্রত্যর্পণে নতুন করে উদ্যোগ শুরু করা হল বলে মনে করা হচ্ছে।
বিএনপি-জামাত জোটের পর পর দু’বার ডাকা ৬০ ঘণ্টার হরতালে অন্তত ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার শেষ হওয়া দ্বিতীয় দফার হরতালে প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন। আহতের সংখ্যা প্রায় ৫০০। অজস্র বাড়ি-গাড়ি পুড়েছে। রেল লাইন উপড়ে, ট্রেনে আগুন লাগিয়েছে হরতালকারীরা। ফলে সন্ধ্যায় হরতাল উঠে গেলেও বাংলাদেশের জনজীবন স্বাভাবিক হতে পারেনি। বিএনপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে শীঘ্রই আবার তারা রাস্তায় নামছে।
সুতরাং আরও হরতালের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে ।
আবার ৬০ ঘণ্টার হরতাল বাংলাদেশে
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঢাকা
নির্বাচনের আগে অর্ন্তবর্তী সরকার গঠন নিয়ে ঐকমত্যের আশা ক্রমেই ক্ষীণ হচ্ছে বাংলাদেশে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচনা প্রস্তাবে সাড়া না-দিয়ে সোমবার থেকে দ্বিতীয় দফার লাগাতার ৬০ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামাতে ইসলামি জোট।
এর আগে গত সপ্তাহেই এই জোট ৬০ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছিল। সেই হরতালে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ ও নাশকতায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন শ’দেড়েক মানুষ। বিএনপি-জামাত কর্মীরা রেল লাইন উপড়ে, ট্রেনে আগুন দিয়ে জনজীবন অস্তব্যস্ত করে দেয়। পরিকল্পিত ভাবে হামলার নিশানা করা হয়েছে সংবাদমাধ্যম, বিচারপতি ও আইনজীবীদের। আগুন লাগানো হয়েছে বহু গাড়ি ও সরকারি অফিসে। এ বারে হরতালের মধ্যেই পড়েছে অষ্টম শ্রেণির স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা।
ফলে বিপাকে পড়েছে প্রায় ২১ লক্ষ পরীক্ষার্থী। বিষয়টি বিএনপি নেতৃত্বের নজরে আনা হলে দলের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম শুধু বলেন, পরীক্ষা হরতালের আওতায় পড়বে না। কিন্তু গোটা দেশের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে গেলে ছাত্রছাত্রীরা কী ভাবে পরীক্ষা দিতে আসবে, ফখরুল ইসলাম তার কোনও জবাব দেননি।
আগের হরতালেই ব্রিটিশ কারিকুলামের ‘এ’ এবং ‘ও’ লেভেলের প্রায় হাজার দশেক পড়ুয়া পরীক্ষা দিতে না-পারায় তাদের এক বছর করে নষ্ট হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বছরের শেষে বাংলাদেশে প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থী নানা পরীক্ষায় বসছে। তাদের স্বার্থে হরতাল থেকে সরে আসার জন্য বিরোধীদের প্রতি আর্জি জানিয়েছেন মন্ত্রী।
আর্জি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। রাজবাড়িতে একটি জনসভায় হাসিনা আজ বলেন, আলোচনার প্রস্তাব দেওয়াই রয়েছে। মানুষের স্বার্থে বিরোধীরা হরতাল ছেড়ে আলোচনা শুরু করুক।
মিছিলেই ভাসল হরতাল, সংঘর্ষে নিহত ৫
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঢাকা
অগ্নিপরীক্ষায় সফল, এ এক আধুনিক বাংলাদেশ! হাতে জাতীয় পতাকা। মাথায় বাঁধা জাতীয় পতাকা। উত্তাল মিছিলে মৌলবাদীদের ডাকা হরতাল বানচাল করে দিলেন বাংলাদেশের নতুন, ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল প্রজন্ম।
শুক্রবার জামাতে ইসলামির সমর্থক ১২টি মৌলবাদী দল অতর্কিত হামলা চালিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক অশান্তি বাধায়। ঢাকার শাহবাগ চত্বরে আন্দোলনের সমর্থনে বাংলাদেশের প্রতি জনপদে যে গণজাগরণ মঞ্চ গড়া হয়েছিল, মৌলবাদী দুষ্কৃতীরা সেগুলি নিশানা করে ভাঙচুর করে। কয়েক জায়গায় ভাষা শহিদ মিনারও ভাঙা হয়, ছেঁড়া হয় জাতীয় পতাকা। তার পরেই রবিবার হরতালের ডাক দেয় মৌলবাদীরা। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও জামাতে ইসলামি হরতালকে সমর্থন করে।
অন্য দিকে শাহবাগের বিক্ষোভকারীরা এই হরতাল উপেক্ষা করে জনজীবন স্বাভাবিক রাখার আবেদন জানায়। গত কাল শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতিসৌধে শপথ নিয়ে শাহবাগের বিক্ষোভকারীরা বলেন, “লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে একাত্তরে যে পতাকা আমরা অর্জন করেছিলাম, তাতে ওরা আগুন দিয়েছে, অসম্মান করেছে আমরা এর বিচার চাই আমাদের প্রাণের পতাকার, সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে চাই।”
অন্য বার হরতালের আগের সন্ধে থেকেই জামাতের দুষ্কৃতীরা যানবাহন পুড়িয়ে সন্ত্রাস শুরু করে।
হরতালের দিন সকালেও তারা পথচলতি মানুষ ও গাড়ির ওপর হামলা চালায়। এর আগে গত সোমবার মানুষ রাস্তায় নেমে জামাতের ডাকা হরতাল ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন। তার পরে এ দিন। হরতালকারীদের বদলে সকাল থেকেই ঢাকা-সহ গোটা দেশের পথের দখল নেন জাতীয় পতাকা হাতে মিছিলের মানুষ। তাঁদের অনেকের মাথাতেও জাতীয় পতাকা বাঁধা। কোথাও কোথাও মৌলবাদীরা জড় হওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ ও বিজিবি তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। মানিকগঞ্জে সশস্ত্র জামাত কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন কক্সবাজারেও সংঘর্ষে ১ জন মারা গিয়েছেন।
ঢাকায় সকালে মানুষ যে ভাবে পথে নামেন, সেই অনুপাতে গাড়িঘোড়া ছিল কম। তার পরে বেলা একটু গড়াতে হরতালকারীরা একেবারেই উধাও হয়ে যান। ট্রেন ও লঞ্চ চলে স্বাভাবিক ভাবে।
এই প্রথম হরতালের দিনেও চালু ছিল হাইকোর্ট। ব্যাঙ্ক ও অফিস-আদালতে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। শেয়ারবাজারে লেনদেনও হয়েছে আর পাঁচ দিনের মতোই।
রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ, এমনকী সমস্ত প্রাথমিক স্কুলও এ দিন ছিল খোলা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা শান্তিতে পরীক্ষা দিয়ে শাহবাগ স্কোয়্যারে এসে জড়ো হন। সকালে শাহবাগের তরুণরা হরতাল বানচাল করার ডাক দিয়ে কয়েক কিলোমিটার মিছিল করেন। সামিল হন বিভিন্ন ছাত্র ও যুব সংগঠনের কর্মীরা। এই মিছিলে মেয়েদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
ঢাকার বাইরেও চিত্রটা ছিল একই। মানুষ হরতাল উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছেন। কোথাও কোথাও গাড়িঘোড়া সকালের দিকে কম থাকায় তাঁদের ভোগান্তিও হয়। চট্টগ্রামে গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙে শুক্রবার প্রেস ক্লাবেও ভাঙচুর করেছিল দুষ্কৃতীরা। আজ সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করেন। নতুন মঞ্চ বানানো হয় খুলনা, বগুড়া, রংপুর ও রাজশাহিতেও। হাজারো মানুষের প্রতিরোধে গোটা দিন মৌলবাদীদের রাস্তায় দেখা যায়নি।
হরতাল বানচাল করার জন্য সরকার ও আওয়ামি লিগ মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুনল ইসলাম বলেন, গণজাগরণের যে ঢেউ উঠেছে, তার বিরোধিতা করে কেউই সুবিধা করতে পারবে না।
মৌলবাদীদের হরতাল সমর্থন করে নিজেদের মুখোস বিএনপি নিজেই খুলে ফেলেছে। কিন্তু বিএনপি-র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি অভিযোগ করেছেন, আওয়ামি লিগ ও প্রশাসন সর্বত্র হামলা চালিয়ে শান্তিপূর্ণ হরতাল বানচাল করেছে। হরতালকারীরা অশান্তি এড়াতেই রাস্তায় নামেননি। মানিকগঞ্জে ৪ জনের প্রাণহানির প্রতিবাদে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে।
হরতালের সমর্থন করলেও বিএনপি-র কর্মীরা তা সফল করতে কেন সে ভাবে মাঠে নামেনি, সে প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান রিজভি।
নেমে জামাতের ডাকা হরতাল ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন। তার পরে এ দিন। হরতালকারীদের বদলে সকাল থেকেই ঢাকা-সহ গোটা দেশের পথের দখল নেন জাতীয় পতাকা হাতে মিছিলের মানুষ। তাঁদের অনেকের মাথাতেও জাতীয় পতাকা বাঁধা। কোথাও কোথাও মৌলবাদীরা জড় হওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ ও বিজিবি তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। মানিকগঞ্জে সশস্ত্র জামাত কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন কক্সবাজারেও সংঘর্ষে ১ জন মারা গিয়েছেন।
ঢাকায় সকালে মানুষ যে ভাবে পথে নামেন, সেই অনুপাতে গাড়িঘোড়া ছিল কম। তার পরে বেলা একটু গড়াতে হরতালকারীরা একেবারেই উধাও হয়ে যান। ট্রেন ও লঞ্চ চলে স্বাভাবিক ভাবে।
এই প্রথম হরতালের দিনেও চালু ছিল হাইকোর্ট। ব্যাঙ্ক ও অফিস-আদালতে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। শেয়ারবাজারে লেনদেনও হয়েছে আর পাঁচ দিনের মতোই।
রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ, এমনকী সমস্ত প্রাথমিক স্কুলও এ দিন ছিল খোলা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা শান্তিতে পরীক্ষা দিয়ে শাহবাগ স্কোয়্যারে এসে জড়ো হন। সকালে শাহবাগের তরুণরা হরতাল বানচাল করার ডাক দিয়ে কয়েক কিলোমিটার মিছিল করেন। সামিল হন বিভিন্ন ছাত্র ও যুব সংগঠনের কর্মীরা। এই মিছিলে মেয়েদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
ঢাকার বাইরেও চিত্রটা ছিল একই। মানুষ হরতাল উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছেন। কোথাও কোথাও গাড়িঘোড়া সকালের দিকে কম থাকায় তাঁদের ভোগান্তিও হয়। চট্টগ্রামে গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙে শুক্রবার প্রেস ক্লাবেও ভাঙচুর করেছিল দুষ্কৃতীরা। আজ সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করেন। নতুন মঞ্চ বানানো হয় খুলনা, বগুড়া, রংপুর ও রাজশাহিতেও। হাজারো মানুষের প্রতিরোধে গোটা দিন মৌলবাদীদের রাস্তায় দেখা যায়নি।
হরতাল বানচাল করার জন্য সরকার ও আওয়ামি লিগ মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুনল ইসলাম বলেন, গণজাগরণের যে ঢেউ উঠেছে, তার বিরোধিতা করে কেউই সুবিধা করতে পারবে না।
মৌলবাদীদের হরতাল সমর্থন করে নিজেদের মুখোস বিএনপি নিজেই খুলে ফেলেছে। কিন্তু বিএনপি-র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি অভিযোগ করেছেন, আওয়ামি লিগ ও প্রশাসন সর্বত্র হামলা চালিয়ে শান্তিপূর্ণ হরতাল বানচাল করেছে। হরতালকারীরা অশান্তি এড়াতেই রাস্তায় নামেননি। মানিকগঞ্জে ৪ জনের প্রাণহানির প্রতিবাদে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে।
হরতালের সমর্থন করলেও বিএনপি-র কর্মীরা তা সফল করতে কেন সে ভাবে মাঠে নামেনি, সে প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান রিজভি।