ময়মনসিংহ ৩ঃ গৌরীপুরে কবি ও অভিনেত্রীর নিরব প্রচারণা
ময়মনসিংহ সদর থেকে সড়কপথে ২০ কিলোমিটার ভেতরে গৌরীপুর উপজেলা। রেলপথে ৩০ কিলোমিটার। একসময় জমিদারদের তীর্থ ভূমি বলা হত ময়মনসিংহের এই গৌরীপুর উপজেলাকে। এখানের পৌর এলাকাসহ আনাচকানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেকগুলো ঐতিহাসিক স্থাপনা। একটু যত্ন পেলেই যা হতে পারে পর্যটন আয়ের উৎস। একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলা জাতীয় সংসদের ১৪৮ আসন (ময়মনসিংহ-৩)। প্রায় চার লাখ জনগোষ্ঠীর বসবাস এখানে। শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ গৌরীপুরের রাজনৈতিক নেতৃত্বও বেশ প্রশংসিত। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের এই আসনে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ সমানতালে নেতৃত্ব দিয়েছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসনের ভোটারদের সঙ্গে কথা হয় সাহিত্য বাজার পত্রিকার। কেমন এমপি বা নেতা চান এ অঞ্চলের মানুষ? এমন প্রশ্ন ছিল তাদের কাছে।
সকলের উত্তরও প্রায় কাছাকাছি, ‘জনবান্ধব ও সৎ নেতা’ চাই। যাকে প্রয়োজনে সহজেই পাশে পাওয়া যায়। যে এলাকার মানুষের সুখ দুঃখে ছুটে আসবে, সহানুভূতি জানাবে। বিপদে সাহায্য করবে এমন একজন নেতা আসলে শুধু গৌরীপুর নয়, সারা বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন। কিন্তু বিগত ৫০ বছরে এ স্বপ্ন পূরণ করার মতো নেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি বাংলাদেশের কোথাও। নীলফামারীর আসাদুজ্জামান নূর, চাঁদপুরের দীপু মনি ও মেজর অবঃ রফিকুল ইসলাম এবং বরিশালের কর্ণেল অবঃ জাহিদ ফারুক এমপি নিজ নিজ আসনে জনপ্রিয় হলেও তাদের কাছাকাছি অবস্থানও তৈরি হয়নি ময়মনসিংহের কোনো সাংসদের। বেশিরভাগ সময় এলাকার মানুষ তাদের পাশে পান না বলেই অভিযোগ ময়মনসিংহের ১১ টি আসনের ৮০ ভাগ মানুষের। তবে হ্যাঁ, এখানে রাজনৈতিক কোন্দল খুব একটা নেই বললেই চলে। আদি ঐতিহ্যের ধারক গৌরীপুর বাজারে এক ব্যবসায়ী ও কলেজ ছাত্র মুহিত বলেন, ‘আমাদের এখানে রাজনৈতিকভাবে সবাই মিলেমিশেই থাকে। তেমন সমস্যা নেই। তবে গৌরীপুর বাসীর চাহিদা শুধু গ্যাসের। এখানে গ্যাস নেই। এছাড়া স্থাপত্য সংরক্ষণ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে নেতারা খুব উদাসীন বলে অভিযোগ এই ব্যবসায়ী ছাত্রটির। আরেক শিক্ষার্থী বিনয় দাস বলেন, ‘আমাদের এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে। আমরা মুসলমানদের দাওয়াতে যাই। মুসলমানরাও আমাদের পূজা-পার্বনে আসে। এখানে সবাই মিলেমিশে থাকি। আমরা মনে করি, এখানে সবাই এক পরিবার।’ আগামীতে কেমন নেতা চান, এমন প্রশ্নের জবাবে তারা দুজনেই বলেন, ‘জনবান্ধব নেতা চাই। যাকে মানুষ সহজে পাবে, সুখ-দুঃখ বলতে পারবে, সমস্যা সমাধান করতে পারবে সহজেই।’ বর্তমান নেতাদের বিষয়ে তাদের মূল্যায়ন, আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি নাজিম উদ্দিনের কাছে সবাই যেতে পারে। তিনি প্রতি সপ্তাহে এলাকায় আসেন, সবার কথা শোনেন। বিএনপি নেতা এম ইকবাল হোসাইনও ভালো লোক। তিনিও এলাকার খোঁজখবর রাখেন। বিএনপির আরেক নেতা কবি সেলিম বালা এলাকায় ইদানিং কম আসেন, তবে সবসময় অসহায় মানুষেরা তার সাহায্য পান। করোনাকালীন সময়ে আশরাফুল ইসলাম সেলিম ভাই আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে। দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, এখানে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের এমপি থাকায় তাদের অবস্থান বেশ ভালো। পুলিশ প্রটোকলে বা প্রটোকল ছাড়াও এখানে বিএনপি নানাবিধ কর্মসূচি পালন করে। জাপাও বিভিন্ন সময় স্বল্প লোকবল দিয়ে হলেও কর্মসূচি পালন করছে। গৌরীপুর সদর থেকে ৪/৫ কিলোমিটার ভিতরে মুখরিয়া গ্রামে কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এলাকার লোকজন বয়স্কভাতাসহ সরকারের নানা সুবিধা পাচ্ছেন। কমিউনিটি ক্লিনিকেরও সেবা পাচ্ছেন। ঘরে ঘরে পেয়েছেন বিদ্যুৎ। তবে তাদের এলাকায় এমপির দেখা মেলে না। তারা বলেন, ‘নেতারা করেন রাজনীতি, বড় বড় লোকের সঙ্গে চলেন। এখন গ্রামে আসবেন কী করতে? এখন ভোট চাওয়ার দরকার নাই। ভোটের সময় আবারও হয়তো আসবেন। কেমন নেতা চান জানতে চাইলে বিরক্ত হয়ে কৃষকরা বলেন, ‘নেতা তো চাই এমন, যারে ডাক দিলে দেহে। কাছে কাছে থাহে। একটা কিছু দরখাস্ত করলে এমপির মাধ্যমে মঞ্জুর করাইতে পারি। ধরুন (যেমন) আমার একটা বাড়ি ভিটা নাই। কতহানে দৌড় দিলাম একটা ঘরের লাইগ্গা। সরকারি জায়গায় আমারে একটা ঘর করে দিক। তাও করলো না কেউ। মাইনষের বাড়িত থাকি, জায়গা জমি কিছু নাই। কতজনের কাছে কতবার আইডি কার্ড দিয়া আইছি। কাজ হয় নাই।’ ‘বিএনপি লোকরাও এলাকায় আসে না। তবে বিএনপি নেতারা নিজেদের কর্মীদের বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করে’বলে জানান এই দুই বয়োবৃদ্ধ ভোটার।
ময়মনসিংহ-৩ এই সংসদীয় আসনের আয়তন ২২৭ বর্গকিলোমিটার। এ আসনটিতে মোট ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮ জন। যেখানে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৮ হাজার ২১৭ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩২১ জন। এ সংখ্যা চলতি বছর নতুন ভোটার তালিকায় আরো কিছু বৃদ্ধি পাবে। এ আসনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তিনবারের সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মজিবুর রহমানের মৃত্যুতে ২০১৬ সালের উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হন প্রবীণ রাজনীতিক অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন আহমেদ। দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পূর্ব পাকিস্তানের সময়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ নানা পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তবে সংসদ সদস্য হয়ে উন্নয়নে খুব একটা চমক দেখাতে না পারায় এবং দলের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করতে না পারায় তাকে নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে। আর এ কারণেই আসনটিতে নতুন মুখ চান নেতাকর্মীদের অনেকেই। আসনটিতে দলীয় প্রার্থীর কোনো অভাব নেই। হালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী থেকে শুরু করে পোড় খাওয়া সাবেক ছাত্রনেতারাও রয়েছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মনোনয়ন লড়াইয়ে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ হাসান অনু, জেলা আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক ড. সামীউল আলম লিটন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোর্শেদুজ্জামান সেলিম, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মতিউর রহমান, গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নাজনীন আলম, অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আবু কাউছার চৌধুরী রন্টি ও তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা এম এম মামুন। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ হাসান অনু বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েও প্রায় ৫০ হাজার ভোট পান। এবার সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার আশায় রয়েছেন। আরো আছেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন খান। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহসম্পাদক মোর্শেদুজ্জামান সেলিমও শক্ত মনোনয়ন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম টানা দুবার মেয়র নির্বাচিত হয়ে জনপ্রিয়তার স্বাক্ষর রেখেছেন। এবার নৌকার মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য হবার স্বপ্ন তারও। এরা সবাই গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ করেছেন বলে জানান এলাকাবাসী।
অপরদিকে, গৌরীপুরে বিএনপিতে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে বলে দাবী কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের। বর্ষীয়ান বিএনপি নেতা ও দুইবারের সংসদ সদস্য প্রয়াত আইনজীবী এএফএম নজমুল হুদার মৃত্যুর পর গৌরীপুরে বিএনপির রাজনীতিতে আর কেউ প্রভাব বিস্তার করতে পারেন নি। তবে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রকৌশলী এম ইকবাল হোসাইন ও উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক উপজেলা চেয়ারম্যান আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে। নেতা-কর্মীরাও বিভক্ত এই দুই নেতাকে ঘিরে। ২০১৪ সালে বিএনপির প্রার্থী হিরণ বিপুল ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দলের বৃহৎ একটি অংশ নিয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। অন্যদিকে হিরণের প্রার্থিতা ঠেকাতে দলের বিরোধী নেতা-কর্মীরা ইকবালের বলয়ে ভিড়তে শুরু করায় মাঠের রাজনীতির দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করেছে বলে অভিমত অনেকের। যদিও এই আসনটিতে বিএনপির পরিচ্ছন্ন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন তরুণ প্রজন্মের বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা ও জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের যুগ্ম মহাসচিব কবি সেলিম বালা। তার ভালো নাম মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম সেলিম। এছাড়াও আছেন ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির দুইবারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল হক। স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন, যোগ্য নেতৃত্ব পেলে এ আসনে বিএনপি শক্তিশালী অবস্থার প্রকাশ ঘটাতে সক্ষম হবে। ভোটের হিসাবে দেখা যায়, ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৩২ শতাংশ, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ২৮ শতাংশ এবং বিএনপির প্রার্থী ২১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিএনপি ৩৫ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ২৯ শতাংশ ও জাতীয় পার্টি ২৮ শতাংশ ভোট পায়। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩৯ শতাংশ ও বিএনপি ৩৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ৬৮ শতাংশ ও বিএনপি ২৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৭৪ শতাংশ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী ২৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ওই নির্বাচন বিএনপি বয়কট করে।ভোটের এই পরিসংখ্যান বলছে, আসনটিতে আওয়ামী লীগের অবস্থান ক্রমাগতভাবে মজবুত হয়েছে। জনসমর্থনের পাশাপাশি ভোটও বেড়েছে। তবে দলীয় কোন্দল আর দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে বিরোধীপক্ষও সুবিধা নিয়ে অবস্থান শক্ত করছে এখানে। বিশেষ করে বিএনপির জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় যুগ্মসচিব আশরাফুল ইসলাম সেলিম ওরফে কবি ও গীতিকার সেলিম বালার জনসংযোগ এবং যুব তরুণদের মাঝে তার জনপ্রিয়তা আগামী নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবে বলে মনে করেন গৌরীপুরের বাসিন্দারা। গৌরীপুর উপজেলার মুখরিয়া গ্রামের বাসিন্দা কবি সেলিম বালা। তিনি ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশায় গণসংযোগ করলেও সে সময় দল অংশ না নেওয়ায় তিনি প্রার্থী হতে পারেননি। আগামীতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় গণসংযোগ চালালেও তিনি বলেন, দল নির্বাচনে অংশ নিলে তবেইতো আমাদের নির্বাচনী প্রচারণা হবে। এখন আমরা দলকে শক্তিশালী করতে কাজ করছি। তিনি এলাকায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও কারামুক্তির দাবিতে লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার সাঁটিয়ে জনমত গড়ে তোলারও চেষ্টা করছেন। এলাকার শিক্ষাব্যবস্থা প্রসারের জন্য তার প্রচেষ্টায় ২০০৫ সালে মুখরিয়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। নির্বাচনী এলাকার চাতুল ও আগ্রাইল বিলের পানি নিস্কাশনের জন্য স্লুইস গেট নির্মাণে আর্থিক সহযোগিতা করেন সেলিম বালা। এতে শত শত কৃষকের জমি বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়া থেকে সুরক্ষা পায়। নির্বাচনী এলাকার দুস্থ নারীদের স্বাবলম্বী করার জন্য তিনি গড়ে তুলেছেন সায়দা ফাউন্ডেশন নামে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এলাকার বড়ইকান্দা, মুখরিয়া বাজার মাওহা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের কাছেও সেলিম বালা জনপ্রিয় একটি নাম।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এখানে এবার অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতির সমর্থন বাড়ছে বলে জানান গৌরীপুর বাজার এলাকার বাসিন্দারা। ২০১৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনে আলোচিত অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন, ‘এলাকার লোকজনের সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তারা চান আমি এখানে প্রার্থী হই। তবে নেত্রী যাকেই মনোনয়ন দেবেন তাকে বিজয়ী করতে বরাবরের মতোই মাঠে থাকবো আমি।’
কবি সেলিম বালা ও অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতির নিরব জনসেবা মূলক কাজের মধ্যে একধরণের প্রতিযোগিতা রয়েছে বলে মনে করেন গৌরীপুরবাসী। বিষয়টি তাই মুখরোচক আলোচনার বিষয়ও এখানে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির এখানে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রচারণা চোখে পড়েনি। সম্প্রতি গৌরীপুরের নুরুল আমিন খান উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা জাতীয় পার্টির উপদেষ্টা আব্দুল হাই খান পাঠান (৭৪) এর মৃত্যুতে এখনো শোকের ছায়া গৌরীপুর জাপা নেতৃত্বে। এখানে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সামছুজ্জামান জামাল ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর।