বনসাই সংস্করণ
দু’চারজন অভ্যাগত আর আমাদের ঘরবাসিরার বিনোদনে সঙ্গ দিতে গিয়ে এ্যাকুরিয়ামের মাছগুলি বেঁচে চলছে বছরকে বছর ।
পানির উদ্দাম তোড় লেগে লাফিয়ে উঠার কথা তারা ভুলে গেছে – ভুলে গেছে বুকেবুক সঙ্গকাম – তারা যেন নতুন এক বনসাই সংস্করণ!
দেখি – চলনীতি ভুলে ছুটছে একটা মাছ – মাথাটা দেহ ছাড়িয়েছে অন্যটার – ঘুরতে ঘুরতে অন্ধ হয়েছে আরেকটা মাছ। বাঁচতে বাঁচতে হাঁফিয়ে উঠেছে ওরা। মাছগুলি মরতে চায় অথচ ফাঁসিটা বাঁধবে কে – লোক নেই,বিষ নেই,মন্ত্র নেই
কী নির্মম বেঁচে যাওয়া !
বিধ্বস্ত ইমেজ
কিছু দিন থেকে জোস্নার জ্বর হয়েছে সেই ভয়ে সরে গেছি উর্ধ্বলোক-প্রভার ফাঁদহীন শূণ্যতায় ।
গল্পটা আলেয়াকে নিয়ে – শৈল’র কাছে শোনেছি
ভালোবাসতো না বলে ঘনঘন অসুখ করতো মেয়েটার
আমি নাকি আগাগোড়া গোঁয়ার ভোলা
শোনেছি তার অন্য বান্ধবির কাছে
আর যা হোক অন্তত প্রহরি হতে হয়নি সেজন্য
উপরনিচ সটান কদলি!
আমাকে হয়ত নির্লিপ্ত কাটা জমি ভেবে বসবেন
আসলে এও এক ধরনের খেদ কান্নার পাঠ
কিন্তু যা দেখছিলেন তা হচ্ছে বালিকার গোধূলিকাল – বিধ্বস্ত ইমেজ …
কালো মায়ের গল্প
বাবা বকাঝকা করছেন, আমরা ভয়ে জড়সড় দুইভাই
দাঁড়িয়ে আছি মা’র পাশে
ভুল শুধরে দিবো কিংবা প্রতিবাদে আঙুল উড়াবো
তেমন বয়স আমাদের ছিলো না
তাই নির্বিকার আমরা – এরকম বহুবার
মায়ের কালো গাল বেয়ে অশ্রু গড়াতে দেখেছি
রোজ তিন বেলা আমরা রাঁধতে দেখেছি মাকে
কিন্তু হালিমের মা’র মতো সাজতে দেখিনি কখনো
অলংকার কিংবা অনাদৃত পালকের এসব আচ্ছাদন
স্পর্শ করেনি – ও জননির কৃষ্ণমুখ
বাবা বাইরে বেরুতেন আর তিনি চুপচাপ পিছু নিয়ে
কাচারি ঘর পর্যন্ত এগিয়ে কতণ দাঁড়িয়ে থাকতেন
তারপর সারাদিন – অস্থিরতা ,অপোর শ্বাস
মা কালো – কিভাবে বাবার মন ভলো থাকবে
তাই আমরা কৈশোরেই পৌঢ় হয়ে উঠি
আরো শান্ত হতে শিখি –
আর আমাদের মা ছিলেন মাটি ॥
সৌম্য সালেক, কালচারাল অফিসার, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, চাঁদপুর। মোবাঃ ০১৮৫৫৫১৮৯০৮