বিরোধী দল বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের অবরোধ হরতাল শেষে তারা যখন শান্তির পথে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা নামের সমাবেশের ডাক দিল ঠিক তখনই সরকারের অঘোষিত হরতাল অবরোধে অবরুদ্ধ হল ঢাকাবাসী। সারাদেশের সাথে সব ধরনের পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে স্বেচ্ছায় ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দিল সরকার নিজেই। শুধু তাই নয় জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি সমর্থিত সাংবাদিকদের সমাবেশে বিনা উস্কানীতেই হামলা চালালো আওযামী লীগ কর্মীরা। যা দেখে আরেক সাংবাদিক নেতা ও প্রধানমন্ত্র িশেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা বললেন, জাতীয় প্রেসক্লাব কোনো রাজনৈতিক সমর্থনপুষ্টদের সমাবেশ করার জায়গা না।
একইসময় আমরা বিভিন্ন টেলিবভশন চ্যানেলের মাধ্যমে দেখতে পেলাম সুপ্রিমকোর্টের দৃশ্য। সেখানে নয়াপল্টনের সমাবেশে যেতে আগ্রহী আইনজীবীদের গেট আটকে রেখে বাধা দিচ্ছিল পুলিশ। অথচ যেই আওয়ামী লীগের মিশিল এল ওমনি গেট খুলে দিলেন তারা যাতে আন্দোলনরত আইনজীবীদের উপর হামলা করতে পারে আওয়ামী সমর্থকরা।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে কেন্দ্র করে তা প্রতিহত করতে সরকার ও আওয়ামী লীগসহ মহাজোট দেশ জুড়ে যে পরিস্থিতি ও তাণ্ডব সৃষ্টি করেছে তা থেকে এটা নিশ্চিত বলা যায় যে এতোদিন বিরোধীদলের ঘাড়ে যে সব ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের দোষ চাপানো হয়েছে তা আসলে তাদেরই সৃষ্টি ছিল। তাদের আজকের এই কর্মকাণ্ডে ভোগান্তির চরম পরিণতির শিকার দেশের সাধারণ মানুষ।
গণতান্ত্রিক একটা রাষ্ট্রে সে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের চেয়ারপারসনকে আটকে রাখা হচ্ছে তারই বাসভবেন। যা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেকোনো মূহুর্তে পুনরায় এই সমাবেশের ডাক দিতে যাচ্ছেন। তাহলে কি সরকার অনির্দিষ্টকাল এই সরকারী অবরোধ অব্যাহত রাখবেন? এ সব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে সাহিত্য বাজার পত্রিকা ও বাংলাদেশ আমজনতা পরিষদ (বাপ)।
এমতাবস্থায় একটাই শুধু আশার প্রদীপ মৃদু জ্বলে উঠেছে যে, গত ২৮ ডিসেম্বর সিপিবি, সুজন ও টিআইবির উদ্যোগে সংকটে বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনায় বসেছেন দেশের নাগরিক সমাজ। সেখানে বিভিন্ন পথ নির্দেশ এসেছে। যার মধ্যে সাহিত্য বাজার প্রস্তাবিত গণ অনশন ও সংসদভবন বা প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান বিষয়টিও উঠে এসেছে। এতে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
যদিও মাননীয় প্রদানমন্ত্রী এটাকে এক/এগারোর কুশীলবদের সক্রিয় হয়ে ওঠা বলে আখ্যা দিয়েছেন।
বলাবাহুল্য যে, এই কুশীলবদের কারণেই কিন্তু তিনি আজ এতোটা বিশাল জনসমর্থন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হতে পরেছেন এবং ক্ষোভ থাকা সত্ত্বেও এই কুশীলবদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি বিগত ৫ বছরে।
আমরাও ক্ষমা প্রর্থনা করছি আপনাদের প্রতি বিরুপ মনোভাব পোষণ করার জন্য। কিন্তু সেই সাথে অনুরোধ জানাবো দয়া করে ভাবনা চিন্তায় আর সময় নষ্ট করবেন না। নাগরিক সমাজের দায়িত্বে এই দুইনেত্রীকে এক টেবিলে বসিয়ে সমস্যার সমাধান টানতেই হবে। তানা হলে এদের বয়কট করে বিকল্প রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আমজনতা পরিষদের (বাপ)গড়ে তুলুন। বাপ-এর প্রস্তাবণা গত ৫ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখা আছে (বিস্তারিত রয়েছে সাহিত্য বাজার, প্রথম আলো ব্লগে)।
সরকারী দল বা মহাজোটের আচারণে এটা স্পষ্ট যে, তারা এখন স্বৈরাচরী কায়দায় দেশের শাসনভার গ্রহণ করতে বদ্ধ পরিকর। গণতন্ত্রের মানসকন্যা এখন গণতন্ত্রের খুনী হতে নির্লজ্জ হয়েছেন। বিরোধী নেতার বাসার সামনে বালুভর্তি ট্রাক এ প্রমাণই দিচ্ছে। তাই নাগরিক সমাজের প্রতি অনুরোধ আর চুপ করে থাকবেন না। পথে নামুন, আমাদের ডাকুন। ৭১ প্রজন্ম আপনাদের পাশে থাকবে ইনশাহআল্লাহ।