সম্মানীত সূধীজন, প্রিয় পাঠক, লেখক ও শুভানুধ্যায়ীগণ, আপনাদের সকলের প্রতি মহান সৃষ্টিকর্তার অসীম দয়া, রহমত ও শান্তি অব্যহত থাকুক। সবাইকে বাংলা নববর্ষের অভিনন্দন। একইসাথে সাহিত্য বাজারের ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা।
সাহিত্যের আয়নায় জেগে উঠুক মানুষের মুখ
সত্য আর সুন্দরের সন্ধানে এসো হই উন্মুখ।
ধর্ম-কর্ম বল কিম্বা আল্লাহ-ইশ্বর-ভগবান
বিশ্বজুড়ে যা কিছু সুন্দর সব সাহিত্যের অবদান।
এ কবিতাটি লেখা শেষ করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়া মাত্রই আমার এক পীরজাদা বন্ধু ফোন করে বললেন, আরিফ তুমি সাহিত্য আর ধর্মকে এক করে ফেললে? আমি হেসে বললাম, হাঃ বন্ধু, করলাম, তা না হলে যে ধর্ম আর সাহিত্যের দন্দ্ব কিছুতেই যাচ্ছে না।
উত্তরে বন্ধুটি বললেন, ব্যাখ্যা দাও।
ক্ষমা করবেন সাহিত্যজনেরা। আমি সাহিত্য নিয়ে খুব একটা জ্ঞান রাখিনা। স্মরণশক্তির খুব ঘাটতি থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছি, তারপরও আমার মনে হয়েছে সাহিত্য দুই প্রকারের। একটা ঈশ্বর বা আল্লাহ প্রদত্ত সাহিত্য, অন্যটি মানুষের রচিত সাহিত্য। যুগ যুগ ধরে মানুষের মঙ্গলের জন্য যেসব পবিত্র গ্রন্থ এসেছে যেমন বেদ, বাইবেল ও কোরআন, এসব পবিত্র গ্রন্থ সবসময় মানুষে মানুষে ভালবাসা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট রাখার চেষ্টা করেছে। তাই ইউরোপীয় ও আমেরিকান গবেষকগণ এক বাক্যে স্বীকার করেছেন যে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান ও সাহিত্য হচ্ছে বাইবেল ও কোরআন।
ঈশ্বর প্রদত্ত এ সাহিত্যকে অনুসরণ করেই মানুষেরা রচনা করেছেন তাদের সাহিত্যকর্ম। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম গুলোকে যদি মিলিয়ে দেখেন তাহলে দেখা যাবে লক্ষ্য উদ্দেশ্য প্রায় একই। আলাওল, আল্লামা ইকবাল, শেখ সাদী, ওমর খৈয়াম, ম্যাক্সিম গোর্কি, ভলতেয়ার বা সেক্সপিয়রকে যারা পড়েছেন, তারা লক্ষ্য করবেন যে, এদের প্রত্যেকেই মানবতার দাবীতে রচনাশৈলীকে পুঞ্জিভূত করেছেন।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুর ইসলাম ও মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাদের ছেলেবেলায় রীতিমত মক্তবে যেয়ে আরবী ও ফারসী ভাষা আয়ত্ব করেছেন। তারা সংস্কৃত জানতেন বলেই অনায়াসে বেদ, মনুসংহিতা পড়তে পেরেছেন। পবিত্র কোরআন ও বাইবেল অর্থ বুঝে পড়তে পেরেছেন বলেই তারা আজ বিশ্বকবি ও মহাকবি হতে পেরেছেন।
মাপ করবেন সুধীজন, আমাদের বিজ্ঞজনদের অনেকে বলেন -‘রবীন্দ্রনাথ পড় ও বোঝ তাহলে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পড়তে হবেনা।’ কিন্তু সাথে সাথে কেউ এই কথাটি কেন বলেন না যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গুলো অর্থ বুঝে পড়েছেন বলেই তিনি আজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়েছেন। পবিত্র গ্রন্থ বেদ, বাইবেল ও কোরআন ছিল তাঁর নখদর্পে। তাহলেই কিন্তু সব দন্দ্ব দ্বিধা দূর হয়ে যেত। এতে রবীঠাকুর কখনো ছোটো হবেন না।
আমার এ ব্যাখ্যা শুনে বন্ধু পীরজাদা সেলফোনেই আমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও আলিঙ্গন করার ইচ্ছা ব্যক্ত করে বললেন, ঠিক এভাবে যদি আমাদের সাহিত্য বোদ্ধাগণ তাদের চিন্তাকে প্রকাশ করতেন, তবে সাহিত্য সংস্কৃতির সাথে ধর্মের দন্দ্ব অনেক কমে যেত।
এখনকার সাহিত্য নিজের অস্তিত্ব প্রকাশে দ্বিধাম্বিত। তাই রবীঠাকুর ও নজরুলের পর আর কেউ এখ নপর্যন্ত স্থায়ীত্ব লাভ করতে পারেনন্ িএ সত্য অস্বীকার করার তি কোনো উপায় আছে? সত্য আর সুন্দরের ধারক বাহকরাই এখানে স্থায়ীত্ব পাবেন, বাকীরা ঝড়ে যাবেন সময়ের চাপে এটাই স্বাভাবিক। তাই আসুন, মিথ্যার বেশাতী নয়, সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহিত্যচর্চায় উম্মুখ হই।
পূর্বেই আরিফ আহমেদ ভাই এর কিছু লেখা আমি পড়েছি । খুব ভালো লেগেছে । আজ তার সম্পর্কে জানতে পেরে আরো ভালো লাগলো ।