শাইখ সিরাজ । সাংবাদিক, কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। তিনি কৃষি সাংবাদিকতাসহ নানামুখী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গ্রামীণ জীবনে জাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে সেই ১৯৮২ সাল থেকে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় কৃষিভিত্তিক অনুষ্ঠান মাটি ও মানুষ উপস্থাপনা করেন। খিলগাঁও গভঃ হাইস্কুল, নটরডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটে তার শিক্ষাজীবন। তিনি ভূগোলে সম্মানসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন। বর্তমানে তিনি ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড চ্যানেল আই’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বার্তাপ্রধান।
সাহিত্য বাজার থেকে বিনয়ের সাথে পরপর তিনবার তার সাথে যোগাযোগ করা হলেও ব্যস্ততার কারণে তিনি সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় দিতে অপারগ ছিলেন হয়ত। তাই ব্যক্তিগত পরিচয় ও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা থেকে সংগ্রহকৃত তথ্য নিয়েই সাঁজানো হয়েছে আমাদের আজকের এই কাব্যিক জীবনকথা।
কৃষিবন্ধু বলে তারে ডাকে দেশবাসী
কৃষকের সাথে ভাগভাগি তার সকল কান্না-হাসি।
কৃষক-কৃষাণীর সাথে খেলা করে তার
কাটে রাত্রি-দিবা।
ষাটটি বছরের জীবনে তার
রইলো বাকি কিবা?
তিনটি যুগ কেটেছে তার
ক্যামেরা হাতে ফসলের ক্ষেতে ঘুরে
আরো শত যুগ কেটে যাক এভাবে
প্রার্থনা স্রষ্টার দরবারে।
জন্ম তার চাঁদপুরে ১৯৫৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর
কৃষকের সন্তান তাই ছাত্র জীবনেই
কৃষির উন্নয়নে ব্যস্ত ছিলেন সর্বদাই।
১৯৮২ সাল থেকে টানা ১৪টি বছর
‘মাটি ও মানুষ’ ছুঁয়ে যায় দর্শক হৃদয়
ঐসময় বাংলাদেশ টেলিভিশনের
এটাই ছিল সেরা বাছাই।
উন্নয়ন সাংবাদিকতায়
১৯৯৫ সালে পেলেন একুশে পদক, জাতিসংঘের
এএইচ বুর্মা অ্যাওয়ার্ড, বৃটেনের
বিসিএ গোল্ডেন জুবিলি অনার অ্যাওয়ার্ড আর
বিসিএ পদকসহ যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্স-এর
পেয়েছেন বিশেষ সম্মাননা।
তিনি শাইখ সিরাজ এ দেশের কৃষির অনন্য সন্তান
আর কেউ সম নয় তার তুলনা।
মানুষ তিনি মনুষত্বের উর্ধে এসে
মিশে গেছেন এ দেশের মাটি আর মানুষের মনে
হৃদয়ে তার মাটির ঘ্রাণ
মননে মানুষের উন্নয়ন
কৃষি তার লক্ষ্যবস্তু – জানেন
এতেই জাতির প্রকৃত ভাগ্যের উন্নয়ন।
ক্যামেরা হাতে গ্রাম-গঞ্জে, ক্ষেতে-খামারে
হাঁটুজলে নেমে কাঁদামাখা দেহে
কৃষকের চিত্র আঁকেন বিশ্ববাসীর স্মরণে-
কি করলে কি হবে?
কোন মৌসুমে কি ফসল?
কোন সময় কোন সার দিতে হবে ক্ষেতে
এ সবই উপজিব্য তার
হাসেন, কাঁদেন সবই
দু-চোখে যেন সারাটাক্ষণ কৃষকের ছবি
তিনি কলমের কবি নন বটে
তবে ক্যামেরার বড় কবি।
‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ প্রিয় শাইখ সিরাজ
আপনাকে আমাদের হৃদয়ের গভীরের
সালাম শত কোটি ।।
শাইখ সিরাজ সম্পর্কে আরো তথ্যকিছু
তার কৃষিবিষয়ক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় দেশের সব পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে কৃষিভিত্তিক কার্যক্রমের পরিধি বেড়েছে। টেলিভিশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি ও বিভিন্ন উন্নত চাষ পদ্ধতি, কৃষি ব্যবস্থাপনা, বেকার ও শিক্ষিত যুবকদের কৃষিকাজে উৎসাহিত করার জন্য তার অপরিসীম চেষ্টা তাকে পৌছে দিয়েছে খ্যাতির শীর্ষে।
২০০৪ সাল থেকে তিনি যে শুধু ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ‘ নামে চ্যানেল আইতে সাপ্তাহিক অনুধ্ঠান উপস্থাপনা করেন তা-ই নয়, চ্যানেল আই-এর জাতীয় সংবাদে প্রতিদিনের কৃষি সংবাদ চালুর মধ্য দিয়ে তিনিই প্রথম দেশের গণমাধ্যমে কৃষিকে প্রাত্যহিক গুরুত্বের মধ্যে নিয়ে আসেন। এর ধারাবাহিকতায় চ্যানেল আইতে একটি পৃথক ও বিশেষ বুলেটিন আকারে প্রচার শুরু হয় কৃষি সংবাদ। কলেজ – বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঠপর্যায়ে কৃষকের সাথে কাজ করতে আগ্রহী করে তুলছেন ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান ফিরে চল মাটির টানে-এর পরিকল্পনা, উপস্থাপনা ও প্রযোজনার মাধ্যমে।
২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তার উপস্থাপিত ও পরিচালিত অনুষ্ঠান কৃষি দিবানিশি শুরু হয়। একই সঙ্গে তিনি মুদ্রণমাধ্যমেও চালু রেখেছেন কৃষি সাংবাদিকতা। নব্বইয়ের দশক থেকেই পত্র-পত্রিকা ও জার্নালে অবিরাম লিখে চলেছেন কৃষি ও গণমাধ্যম বিষয়ক নিবন্ধন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অশোকা ফাউন্ডেশনেরও একজন ফেলো।
এ যাবৎ প্রকাশিত তার কৃষি বিষয়ক গ্রন্থসমূহ
- মৎস্য ম্যানুয়েল,
- মাটি ও মানুষের চাষবাস,
- ফার্মার্স ফাইল,
- মাটির কাছে মানুষের কাছে,
- বাংলাদেশের কৃষি : প্রেক্ষাপট ২০০৮,
- কৃষি ও গণমাধ্যম,
- কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট (সম্পাদিত),
- আমার স্বপ্নের কৃষি,
- কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট (২০১১),
- সমকালীন কৃষি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (২০১১)