মানুষ গড়ার কারিগর থেকে জনতার সেবক মির্জা ফখরুল 

সাবা প্রতিবেদক

Sharing is caring!

মানুষ গড়ার কারিগর থেকে জনতার সেবক হলেন মির্জা ফখরুল 

একজন মানুষ গড়ার কারিগর এবং সত্যিকারের খাটি ভদ্রলোক বিএনপির বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০১১ সালের ২১ মার্চ প্রথমে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব পরে ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব নির্বাচিত হবার পর থেকে গত ১০ বছরে অনেক চড়াই উৎরাই দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করেছেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি আন্দোলন খুব একটা চাঙা হবার সুযোগ না পেলেও নেতৃবৃন্দের একতা ধরে রাখতে আপ্রাণ যুদ্ধ চালাচ্ছেন এই মানুষটি। অনেক বিরোধী মতের নেতাদের কাছেও নিপাট ভদ্রলোক খ্যাত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত দশবছরে কম হলেও ৫০ বার জেল খেটেছেন ও তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা প্রায় আড়াইশ বলে জানিয়েছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। আর বিএনপির ২০১৮ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২৪টি মামলা হয়েছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২১টি। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ৮৮টি মামলা হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে তিনটি, মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে নয়টি, তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৪টি, প্রয়াত এম কে আনোয়ারের বিরুদ্ধে ৩৪টি, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ৫২টি, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে ৩৭টি, নজরুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে সাতটি, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে নয়টি, সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা করা হয়েছে এবং মামলাগুলো বিচারাধীন রয়েছে।

এ ছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ২৪ জন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে মোট ২৯৪টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে বেশি মামলা হয়েছে আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে মোট ৯৬টি মামলা হয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদের ২১ জন নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৩০৮টি। ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে বেশি মামলা হয়েছে বরকত উল্লাহ বুলুর বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে ৬১টি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ গত ৩ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জের আদালতে মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও  বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। এছাড়াও ইশরাক হোসেন, চাকুরিচ্যুত মেজর দেলোয়ার হোসেন, নুরুল হক নুরু, মেজর (অব.) শহীদুল ইসলাম খান, মো. নুরে ইলিয়াস রিপন, এম রহমান মাসুম, আতিকুর রহমান সবুজ, জাহাঙ্গীর আলম, রেজাউল করিম, ইলিয়াস মোল্লা, জাকির হোসেন, শেখ মো. তিতুমীর আকাশ ও সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনকেও আসামি করা হয়। আর এসব অবাঞ্ছিত হামলা মামলা ও গুম খুনের ভয়ে আন্দোলনের মাঠে নিজেদের গাঁ বাচিয়ে চলার পরামর্শ নেতাকর্মীদের প্রতি। এ নির্দেশনা সয়ং ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকেও। যে কারণে সরাসরি মাঠে না নেমে অনেকটা ঘরোয়া বৈঠক, সমাবেশ ও ইফতার আয়োজনে বক্তব্য রাখছেন, বিভিন্ন প্রতিবাদ জানাচ্ছেন নেতাকর্মীরা।

তবে থেমে নেই মির্জা ফখরুল। সরকারের প্রতিটি বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে তিনি কখনো পিছপা হননি। তাইতো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেছেন, বর্তমান সরকারের একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করতে হলে সব রাজনৈতিক দলকে একত্র হয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করে নতুন সংসদ ও সরকার গঠন করতে হবে। ঈদের আগে সর্বশেষ গত ২৯ এপ্রিল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মেঘনাঘাট এলাকায় সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠান ও আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, র্যাবের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। কিন্তু এই গুম-খুন হত্যার নির্দেশদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ভারতের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়। এ জন্য এই সরকারকে ধিক্কার জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল দাবি করেন, বিরোধী দলকে দমন করার জন্য ৩৫ লাখ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ অনেক নেতাকর্মীকে এই সরকার গুম করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে আমেরিকার সরকার গুম–খুন–হত্যার সঙ্গে জড়িত আটজনের বিরুদ্ধে আমেরিকা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আর সেই নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য সরকার নানা জায়গায় ধরনা দিয়ে চলেছেন।

এর আগে গত ১৯ এপ্রিল গাজীপুরের এক সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যাঁরা জিয়াউর রহমানকে অস্বীকার করেন, তাঁরা স্বাধীনতার বিরোধী, তাঁরাই পাকিস্তানের অনুচর। সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন আপনারা যা করছেন, তা পাকিস্তানের থেকে কোনো অংশে কম নয়, বরং বেশি করছেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান যেভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল, মানুষকে হত্যা করেছিল। ঠিক একইভাবে আপনারা গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছেন। মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছেন। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই শুধু আপনাদের দুর্নীতির চিত্র পাওয়া যায়।’

১৯৮৬ সালে শিক্ষকতা ত্যাগ করে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। ইচ্ছে ছিলো শুধু ছাত্র-ছাত্রী নয়, মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করবেন নিজেকে। ১৯৮৮ সালে তার প্রথম স্বপ্ন পূরণ হয় পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। দেশজুড়ে যখন এরশাদ বিরোধী আন্দোলন দানা বাঁধে তখন ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে যোগদানের করেন এবং ১৯৯২ সালে ঠাকুরগাঁও জেলার সভাপতি নির্বাচিত হন মির্জা ফখরুল। এর আগে ছাত্র জীবনে কিন্তু তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এস এম হল শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। আর এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে, ঐ সময়ে ছাত্র ইউনিয়ন শুধু বাছাইকৃত মেধাবীদের সংগঠন ছিলো। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে বিএনপির ৫ম জাতীয় সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের জৈষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হন। এই সম্মেলনে তারেক রহমানকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান  করা হয়।

 

উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন পত্রিকা ঘেটে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্পর্কে ব্যক্তিগত তথ্য 

 

রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৬ জানুয়ারি ১৯৪৮ সালে ঠাকুরগাঁও জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মির্জা রুহুল আমিন ও মাতা মির্জা ফাতেমা আমিন। শিক্ষাজীবনে মির্জা ফখরুল ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।

১৯৭২ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষা ক্যাডারে ঢাকা কলেজে অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেন। অন্যান্য সরকারি দায়িত্বের মধ্যে মির্জা ফখরুল বাংলাদেশ সরকারের পরিদর্শন ও আয়-ব্যয় পরীক্ষণ অধিদপ্তরে একজন নীরিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তৎকালীন উপ-প্রধানমন্ত্রী এস. এ. বারীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৮২ সাল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর বারী পদত্যাগ করার পূর্ব পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। বারী পদত্যাগ করার পর মির্জা ফখরুল তার শিক্ষকতা পেশায় ফিরে যান। এ সময় তিনি ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (অধুনা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন) একজন সদস্য ছিলেন এবং সংগঠনটির এস.এম. হল শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সময়ে তিনি সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন।

১৯৮৬ সালে পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মির্জা ফখরুল তার শিক্ষকতা পেশা থেকে অব্যহতি নেন এবং সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৮৮ সালের ঠাকুরগাঁও পৌরসভার নির্বাচনে অংশ নিয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। জেনারেল এরশাদের সামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যখন দেশব্যাপী আন্দোলন চলছে, তখন মির্জা ফখরুল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগদান করেন। ১৯৯২ সালে মির্জা ফখরুল বিএনপির ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। একইসাথে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সহ-সভাপতির দয়িত্ব পালন করেন।

মির্জা ফখরুল ১৯৯১ সালে পঞ্চম ও ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচন করে যথাক্রমে ৩৬,৪০৬ ও ৫৮,৩৬৯ ভোট পান এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থী খাদেমুল ইসলামের কাছে পরাজিত হন।

২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের রমেশ চন্দ্র সেনের সাথে প্রতিযোগিতা করে ১,৩৪,৯১০ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন ও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই বছর নভেম্বরে বিএনপি সরকার গঠন করলে খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় প্রথমে তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও পরবর্তীতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০০৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।

মির্জা ফখরুল ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের রমেশ চন্দ্র সেনের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে পরাজিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি একই সাথে ঠাকুরগাঁও-১ ও বগুড়া-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভ করেন এবং বগুড়া-৬ আসনে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে শপথ গ্রহণ না করায় নির্বাচন কমিশন তার আসনটি শূন্য ঘোষণা করে এবং সেখানে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

২০০৯ সালের ডিসেম্বরে বিএনপির ৫ম জাতীয় সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব পদে নির্বাচিত হন। এই পদটিতে এর আগে তারেক রহমান বহাল ছিলেন। তারেক রহমান এই সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যানের পদ লাভ করেন। একই সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এবং মির্জা ফখরুল বিরোধী দলীয় মুখপাত্র হিসেবে গণমাধ্যমে পরিচিতি পান।

২০১১ সালের ২০শে মার্চ বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব খন্দকার দেলওয়ার হোসেন মৃত্যুবরণ করার পর দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ঘোষণা করেন। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতা এই মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। কেউ কেউ বলেন বিএনপির সংবিধানে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের কোন বর্ণনা নেই। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া ২১ মার্চ ২০১১ তারিখে সৌদি রাজপরিবারের আমন্ত্রণে সৌদি আরব যাবার আগমুহুর্তে মির্জা ফখরুলকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ঘোষণা করে গেলে এই সংক্রান্ত বিভ্রান্তির অবসান ঘটে। ২০১৬ সালের ১৯শে মার্চ দলটির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনে মির্জা ফখরুল মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন।

বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালনকালে মির্জা ফখরুল বিভিন্ন ইস্যুতে আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। এছাড়া দেশব্যাপী বিএনপির একাধিক বিক্ষোভ ও আন্দোলন কর্মসূচীর নেতৃত্ব দেন, যেগুলো অধিকাংশেরই কেন্দ্রে ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবী।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্যক্তিগত জীবনে রাহাত আরা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির দুই মেয়ে রয়েছে। রাহাত আরা বেগম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন ও বর্তমানে ঢাকার একটি বীমা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তার বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে এই প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকার একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।

মির্জা ফখরুলের বাবা মির্জা রুহুল আমিন একজন আইনজীবী ছিলেন এবং ঠাকুরগাঁওয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে ও পরে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশে মির্জা রুহুল আমিন বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। মির্জা ফখরুলের চাচা মির্জা গোলাম হাফিজ ছিলেন একজন বিএনপি নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের ৪র্থ স্পিকার। 

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!