ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা” এমনই বেশ কয়েকটি দেশত্ববোধক ও প্রেমের গানে রেহানা মাতলুবের গীটারের ঝংকারে শুরু হয়েছিল ‘বৈশাখী ভালোবাসা: কবিতা গানে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের সূচনাপর্ব। ১১ মে রবিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে গণমাধ্যম সংস্থা ঘাসফুল আয়োজিত এই কবিতা পাঠের ব্যতিক্রমী আযোজনের সভাপতি ছিলেন কবি রুবী রহমান।
২য় পর্বের সূচনা করেন আবৃত্তিকার ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু। রবিঠাকুরের নির্ঝরের স্বপ্ন ভঙ্গ দিয়ে তার আবৃত্তি শুরু হলেও শেষ হয়েছিল রাবিয়া সুলতানা পান্নার জীবনানন্দ আবৃত্তি দিয়ে। এরপরই মঞ্চে আসেন কবি কাজী রোজী অবাধ্য আমি কবিতা পাঠের মাধ্যমে স্বরচিত কবিতার আসরের যাত্রা শুরু হয়।
মাঝখানে ছিল কবি ফরিদ আহমদ দুলালের রচনা ও উপস্থাপনায় বৈশাখের ভালোবাসা : ভালোবাসার কবিতা শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ। কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা, পারভীন আক্তার, মাহবুব তালুকদার, জাকির আবু জাফর, সেলিম মাহমুদ, সজ্জাদ আরেফীন প্রমূখদের কবিতা প্রেমের কবিতা পাঠের পাশাপাশি কবিতা পড়েন কবি আল মুজাহিদি, আসলাম সানি, জাহিদ হায়দার প্রমূখ। ঘাসফুল প্রায় প্রতি মাসই এ ধরনের কবিতার আড্ডা করছে। তবে কবিতার আড্ডায় শুধু কবিদের উপস্থিতি, কোনো কবিতা প্রেমী শ্রোতা কখনোই দেখা যায় না। তবে কি কবিতা শুধুই কবিদের নিজেদের জন্য?
এ প্রশ্নের উত্তরে কবি আসলাম সানি বলেন, দেখ এই যে নোবেল পুরুস্কার বা ফিলিপস পুরস্কার দেয়া হচ্ছে, কোনোদিন শুনেছো যে কোনো পাঠক বা শোতা এতে জড়িত। কোনো পাঠক কি কখনো কোনো লেখককে পুরুস্কার দিয়েছে? কারা দিয়েছে? হয় লেখকরাই নিজেদের মধ্যে নিজেরা বাছাই করে নিয়েছে কিম্বা কোনো ধনী ব্যবসায়ী তার পণ্যের বাজারজাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে। তাহলে কবিতা কারা শুনবে বল? কবিরাই, এই কবিরাই কবিতার পাঠকও লেখকও।
তাহলে আমরা কেন সাধারণ শ্রোতাকে এখানে টানতে পারছিনা? কেনই বা পাঠকরা লেখকদের পুরস্কার দিতে পারে না?
এ প্রশ্নের উত্তরে ঘাসফুলের আহ্বায়ক গল্পকার আতা সরকার বলেন, আসলে এটা মিডিয়ার যুগ, পাঠকরা আসলে কি চায় বা চায় না, সেটা মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে। যারফলে আমরা সত্য থেকে অনেক দূরে সরে এসেছি। ঘাসফুল চেষ্টা করছে এই সত্যটাকে আবারো প্রতিষ্ঠিত করতে। এভাবে কবিতা, গানে আড্ডায় একজন দুজন করে হয়ত পাঠক শ্রোতার ভিড় বাড়বে।
ঘাসফুল আয়োজিত এই বৈশাখী কবিতা পাঠের আসরের সবশেষে ছিল কাজী রওনক হোসেনের পরিচালনায় সরগম শিল্পী গোষ্ঠীর সঙ্গীত পরিবেশন।