বইয়ের সাথে হোক বন্ধুত্ব । মননশীলতার বিকাশ,শুদ্ধতার চর্চা,মানবিকতার জাগরণ কিংবা জ্ঞাণার্জনের মাধ্যম, যাই বলুন- বইয়ে সান্নিধ্য অবশ্যই প্রয়োজন।কারন বই পাঠের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী যেমন তার জ্ঞার্ণাজনের মাধ্যমে জীবনের শুরু করেন তেমনি শিক্ষালাভের পর প্রত্যেক ব্যাক্তি তার মেধা-মননকে বিকশিত করার জন্য বইকেই সঙ্গী করে এগিয়ে যান অভীষ্ঠ লক্ষে।প্রায় ক্ষেত্রেই বই মানুষের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হিসেবে সাথে থাকে। মানুষের অভ্যাসগুলোর মধ্যে নি:সন্দেহে পাঠ্যাভাস একটি অন্যতম ভাল অভ্যাস।বই পড়ার অভ্যাস বা নেশা যাই হোক ব্যাক্তি জীবনের ব্যাস্ততা,সময়ের সাথে আর প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যাবহারে ক্রমেই কমছে।ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি এলেই বই মেলাকে ঘিরে বই প্রকাশ এবং পাঠকের সংখ্যা বাড়ে।বাঙালীর প্রাণের মেলা বাংলা একাডেমির এই মহা আয়োজন বই প্রেমিদের মাঝে সৃষ্টি করে অন্য রকম অনুভূতি যা বই পড়ার ক্ষেত্রে সৃষ্টি করে উৎসব আমেজ। প্রযুক্তি নির্ভতা কাগজে ছাপা বই থেকে পাঠক ফেরালেও ইন্টারনেটের মাধ্যমে একজন পাঠক খুব সহজেই যেকোন ধরনের বই পড়ছেন ইচ্ছেমত ।
বইয়ের সাথে হোক বন্ধুত্ব : সফিউল্লাহ আনসারী
অতিথি লেখক
ইদানিং স্যাটেলাইট ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতায় ছেলে-মেয়ে,শিক্ষার্থীরা টিভি দেখা ও ফেসবুকে আড্ডা দেয়ার প্রতি যেমন আগ্রহী ও উৎসাহী, বই পড়ার প্রতি তেমন নয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি আর ইন্টারনেট,গেম,ফেসবুকিংয়ে সময় পার করে দিচ্ছে,অথচ বই হাতে নেয়ার বা দু-এক পৃষ্ঠা পড়ার নেই কোন ইচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে জাতী একসময় হারাবে তার মেধা আর মননের প্রতিযোগীতা।জাতী হিসেবে আমরা পিছিয়ে পড়বো,কারন ব্যাক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয়-আন্র্তজাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠার জন্য বই পড়ার মাধ্যমে জ্ঞাণ অর্জন কিংবা জানার জন্য বইয়ের কোন বিকল্প ভাবা যায় না।
একটি সৃষ্টিশীল বই একজন পাঠকের মনোজগতকে প্রভাবিত করে,জাগিয়ে তোলে তার স্বত্বা,উজ্জীবিত করে মানবিক গুনাবলি।বই পাঠের দ্বারা একজন মানুষের মনে ভেতরে আলোড়ন তোলে, তার সৃজনশীল মানসিকতার জগতকে প্রচণ্ড ভাবে নাড়িয়ে দেয় । একটি শিশুর মনের বহুবিধ বিকাশের জন্য বইয়ের বিকল্প নেই তা প্রমানিত। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থী সাধারণজ্ঞান-বিজ্ঞান জগৎ, শিশু সাহিত্য, রাজনীতি, সমাজনীতি, বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী, বিষয় ভিত্তিক বই পড়তে দিলে জ্ঞাণ অর্জনের বহুমুখিতা আসবে। প্রতিদিন কমপক্ষে আমাদের পড়ার অভ্যাস করা এবং বইয়ের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টিতে উদ্যোগী হওয়া দরকার,পড়তে-পড়তে একসময় আমাদের ভালো লাগবে এবং জন্ম নেবে একজন আদর্শ পাঠকের।
এক্ষেত্রে বেশীকরে সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে পাঠাগার স্থাপন ও পাঠচক্রের আয়োজন করে পারিবারিক-সামাজিক,স্কুল-কলেজ, ক্লাব সদস্য ও সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহন বই পড়ুয়া বাড়াতে সাহায্য করবে।এভাবে পাঠচক্রের মাধ্যমে বই পড়া, এবং বই নিয়ে আলোচনা দুটিই হবে,তাই বই পড়া অড্ডার বিষয় করা গেলে কাজে আসবে।অনলাইল কালচার ও ফেসবুকিং যেহেতু বর্তমানে বেশী তাই অনলাইনে পাঠকদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলে পাঠক বাড়ানো সম্ভব।একটা মানবতাবাধী, সুখী-সমৃদ্ধ এবং শিক্ষিত জাতি পেতে এবং গড়ে তুলতে বর্তমান প্রজন্মের হাতে বই তুলে দেয়া ও পাঠাভ্যাস তৈরীর বিকল্প নেই।
কথায় আছে‘যতই পড়িতে-ততই পারিবে’। না পড়লে জানার জগৎ বাড়েনা। বই পড়ার অভ্যাস যার যত বেশি তার জানার পরিধিও বেশি।মনীষিগণ ও আলোকিত ব্যক্তিদের জীবনীতে জানা যায় ছোটকাল থেকে শুরু করে জীবন ভর তাঁরা প্রচুর বই পড়েছেন এবং অন্যদেরকে বই পড়ার প্রতি উৎসাহিত করে গেছেন ।আমাদের সকলেরই বই পড়ার অভ্যাস অব্যহত রেখে আগামী প্রজন্মকে বই পড়ায় অনুপ্রাণিত করে, জানার মাধ্যমে জ্ঞাণের জগৎকে প্রসারিত করা প্র্র্র্রয়োজন। বই পড়ার অনীহা দূর করতে বইয়ের সাথেই হোক বন্ধুত্ব। এর জন্য- পরিবার,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,শিক্ষক,পাঠাগার,সরকা র,সামাজিক সংগঠন, এনজিও গুলোর উদ্যোগ, বই পড়ার অভ্যাস গঠনে সহায়ক ও সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখতে পারে।