Sharing is caring!
খুব কাছ থেকেই বীভৎস দৃশ্যটা দেখতে হলো –
আমার কানে এখনো বাজে অস্ফুট সেই আওয়াজ,
“পরী, তোর লাল জামা ……”
বয়সটা আর কতই হবে, বারো তেরো ‘র কাছাকাছি।
হয়তো রঙধনু দোয়েলের একবুক স্বপ্ন ছিলো এই ঈদে বোনকে নিয়ে ;
হাড়ভাঙা পরিশ্রমের দামে কিনবে সে
একট টুকরো লাল কাপড় আদরের বোনের জন্য।
শান্ত তুলতুলে বোনটির মুখ চেয়ে
সে ভুলে যেতো আর্তনাদের বর্ণমালার সমস্ত ব্যথা বেদনার কথা।
মা বাবা হারা ভাইবোনের ঠিকানা ছিলো ফুটপাতের ধারে ;
ভাইটি তার টোকাইয়ের কাজ করে জমিয়েছিল
কিছু পয়সা, তার আদরের বোনের জন্য।
যে বোনটি বিগত সন্ধ্যার ফুলের ন্যায়, সারাদিন বসে থাকে ভাইয়ের পথ চেয়ে,
কখন আসবে ভাই দুহাত ভরে মিঠাই নিয়ে।
এই ঈদে বোনের চাওয়া ছিলো রাস্তায় হেটে
যাওয়া, পথিক শিশুর গায়ে থাকা একটি লাল জামা।
আর তাই ভাইটি একটি একটি করে জমিয়েছিল টাকা
বোনের হাতে তুলে দিতে শরৎ ফুলের ন্যায় ইপ্সিত চাওয়াকে ।
আর কিনতে চেয়েছিল কোটি টাকার মূল্যের
বোনের অধরে ফিনকি ঝরা অম্লান হাসি ;
আজ সেই ভাইটি নিথর দেহে পড়ে আছে রাস্তায়,
হাতে ধরে আছে একটি লাল জামা, পরীর জন্য।
পরীর মতোই সাজাতে চেয়েছিল বোনকে এই জামায়,
কিন্তু ঘাতক ট্রাকের নিষ্ঠুর থাবায়,
জোনাকির মৃত্যুর নিষ্ঠুর দংশনে পরে আছে পিচঢালা রাস্তার মাঝে।
সেই জামার লাল ক্যানভাসে লেগে আছে
তাজা রক্তের আঁধার মৃত্তিকার জীবনের প্রতিচ্ছবি।
তার দেখা হলোনা শিশির নির্মলতার বোনের মুখে কোটি মূল্যের হাসি,
এভাবেই হাজারো মানুষের নীলাম্বরী ছোঁয়ার মুখের হাসি, প্রতিনিয়ত মুছে যায় দানব ঘাতকের চাকার তলে।
কালো রাজপথ হয়ে উঠে নিষ্ঠুরতার আধার, জ্বলন্ত ফুসফুস ছুঁয়ে রক্ত শুষে নেয় পিচাশ থাবার আড়ালে।
এখনো আমার খুব কাছ থেকে সেই শব্দটা
কানে বাজে “পরী, তোর লাল জামা। “
13/9/14
Sharing is caring!