গত ১৫ মে ঢাকা ঘুরে দর্শক মাতিয়ে গেল গাইবান্ধার অন্যতম নাটকের দল পদক্ষেপ। ঐ দিন সন্ধ্যায় দলটি তাদের ৫৭ তম প্রযোজনা নতুন নাটক ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’ নাটক মঞ্চায়ন করে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায়। রোমের মিথ অবলম্বনে নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন টেলিভিশন ও মঞ্চের নির্দেশক এম. সাখাওয়াত হোসেন। নাটকে কগা, মগা, বগা নামের তিন ক্লাউন চরিত্র গাইবান্ধার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে দেশের নানা দুর্নীতি ও অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেন। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাকসুদুল হক, মম্পি দেব, আলাল আহমেদ, মৌ দেব, পারুল, শরিফুল হক লিখন, মিঠু খন্দকার, রওশন আরা মুক্তি, মাসুদ বাসার, খন্দকার ফয়সাল আহম্মেদ, বুলবুল, আরিফ, আখু চৌধুরী, মেহেদুল হক সুজন, শিশির, মোহাম্মদ আলী মুন্না, রাশেদুল ইসলাম তপু, জাহাঙ্গীর, অনন্যা বিশ্বাস, আহসান, বিপ্লব ও মোশারফ প্রমুখ।
এ বছরের ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং পরে ১০ ও ১১ এপ্রিল পদক্ষেপের নিজস্ব মঞ্চে নাটকটির ৪টি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নাট্যধারায় পদক্ষেপ তাদের দর্শক নন্দিত নাটক নিয়ে অনেক প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। ঢাকায় নাটকটি মঞ্চায়নের বিষয়ে পদক্ষেপের সভাপতি মিঠু বলেন, ‘এর আগে ঢাকায় আশিষ খন্দকার নির্দেশিত ‘মেশিন’, আজাদ আবুল কালাম নির্দেশিত ‘বাহে নিধুয়া পাথার’, আলাল আহমেদ নির্দেশিত ‘ট্রেন’, সুলতান মোহাম্মদ রাজ্জাক রচিত ও মাফুজুল ইসলাম নির্দেশিত নাটক ‘কালাপানি’ মঞ্চায়ন করে পদক্ষেপ দর্শকদের নজড় কাড়ে। ঢাকার বাইরের দল হয়েও ভালো করার প্রশংসা পেয়েছেন দলটির কলাকুশলীরা।’ তিনি আরো বলেন, ‘সবাই নিয়মিত মহড়া করছেন। সবেমাত্র নাটকটি মঞ্চে আনা হয়েছে। ঢাকা থেকে নির্দেশক সাখাওয়াত হোসেন এসে মহড়ায় পুরো দলকে উজ্জীবিত করছেন।’ নাটকটি নিয়ে নির্দেশক এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি চেষ্টা করেছি একটি ভালো প্রযোজনা হিসেবে দাঁড় করাতে। অভিনেতারা অনেক পরিশ্রম করেছেন। আশা করছি সবার ভালো লাগবে। ঢাকার বাইরের দল বা নাট্য কর্মীরা কেমন কাজ করছে তা দেখতে দর্শকদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’ নাটকের গল্প নিয়ে তিনি বলেন, ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’ নাটকটি সপ্তদশ শতকের শেষাংশে রোমান সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র শাসক সম্রাট ক্লডিয়াস দ্যা সেকেন্ড-এর সময়কালের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে। ওই সম্রাট উদ্ভট কিছু নিয়ম-কানুন যুবকদের উপর চাপিয়ে দিয়ে তৈরি করেন এক মর্মস্পর্শী ইতিহাস। সেই ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’-ভালোবাসার এক কালজয়ী বিপ্লবী পুরুষের নাম। তিনি একাধারে ধর্মযাজক ও বিশপ। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রূপসী নারী লাভিয়ার ভালোবাসার মানুষ ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন বিপ্লবী কয়েদী আর লাভিয়া জেলারের কন্যা। জেলার সম্রাটের অনুগত হলেও লাভিয়া ছিলেন স্বাধীনচেতা নারী। তাদের দু’জনের ভালবাসার শুরু হয় গারদে। আবার ভালবাসার বিসর্জন ঘটে সেখানেই। এই প্রেম বিসর্জনে সৃষ্টি হয় কিংবদন্তি ভালবাসার উপাখ্যান।’