গদাধর সরকার এর কবিতা
ঘুম
আমি দুললাম মেঘনা । পাতায় আমি ডুবলাম জলে ।
গান গেয়ে যায় কবিতা দেশ । গান গেয়ে পথ চলে ।
বাউল সাগর আগুন দিলেন । হেসে বললেন ওহে,
গুন টেনে যাও । গুন টেনে যাও । শুধু বাঁচবার মোহে,
ছবি আঁকলাম । উড়িয়ে দিলাম । উড়তে উড়তে তারা —
দুলিয়ে দিলো আমার বুকে আকাশমনির চারা — !
আকাশ আমার । আকাশ আমার । হাজার বছর শেষে ,
কেউকি নেশায় পড়বে ছবি ? কেউকি হাওয়ায় ভেসে —
বলবে আবার ও শিউলি দ্বীপ ! তোমায় খোঁজা বাকি !
ভাবতে ভাবতে পাথর পুরের পথিক হতে থাকি !
পাথরে রাত , পাথরে রাত , পাথরে রাত পড়ে —
কিশোরী তুই জাগাস আমায় হাজার বছর পরে।
দুই
একশো প্রদীপ জ্বালি
আমড়া পাতা আমড়া পাতা
আমড়া পাতার ফালি !
আমরা দ্যাখো আকাশ জুড়ে
একশো প্রদীপ জ্বালি !!
প্রদীপ ! প্রদীপ ! ও দ্বীপ বলে
নাড়ছে দু হাত কারা ?
মাছরাঙা নয়, নাচ জুড়েছে
পাঁচটি নতুন তারা !!
দিক হারিয়ে নাবিক গুলো
অমোঘ আশায় ছোটে !
বুকের ভিতর বুলবুলি দেশ
শিউলি টগর ফোটে !!
গুন গুনিয়েই দেবদারু গাছ
বলছে আমায় পাখি !
তোমার হাতেই পরিয়ে দেবো
শাপলা গানের রাখী !!
আমড়া পাতা, আমড়া পাতা,
আমড়া পাতার ফালি !
আমরা দ্যাখো আকাশ জুড়ে
একশো প্রদীপ জ্বালি !!
তিন
হাত বাড়ালে
হাত বাড়ালে তোমরা সবাই
রাতের তারা গুনতে পারি ।
ধান ছড়িয়ে ময়না পুরের
আশার ভূবন বুনতে পারি ।
হাত বাড়ালে তোমরা সবাই
মেঘের হাসি চাইতে পারি ।
পথ কুড়িয়ে চোখের ভিতর
খুশির ভেলাও বাইতে পারি।
হাত বাড়ালে তোমরা সবাই
পলাশ, জবা আঁকতে পারি ।
ঢেউ জড়িয়ে বাউরী আলোয়
কদম রেনু মাখতে পারি ।
হাত বাড়ালে তোমরা সবাই
হৃদয় পুরো মেলতে পারি ।
রঙ বিছিয়ে ঝরনা তলায়
সবার সাথে খেলতে পারি ।
হাত বাড়ালে তোমরা সবাই
পেখম তুলে নাচতে পারি ।
রোজ বাজিয়ে ধামসা, মাদল
আবার সুখে বাঁচতে পারি ।
হাত বাড়ালে তোমরা সবাই
চিতার মতো ছুটতে পারি ।
গুন গুনিয়ে শিউলি, টগর
ফুলের মতো ফুটতে পারি ।