৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর নতুন সরকারে এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির (জাপা) অবস্থান কি হবে? জাপার চেয়ারম্যান এরশাদেরই বা কি হবে? এ নিয়ে চমৎকার প্রতিবেদন করেছে প্রিয়দেশ নেট পত্রিকাটি। অবিকল সেটিই তুলে ধরলাম পাঠকের জন্য।
তবে তার আগে বলবো যে, সাহিত্য বাজার-এর রাজখবর বিভাগের জরিপে তৃতীয় শক্তিশালী দলটি হতে যাচ্ছিল এরশাদের জাতীয় পার্টি। কিন্তু নিজের কথায় নিজেই বিশ্বাস রাখতে পারেননি এরশাদ। তাই একটা চমৎকার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেল তার আচারণ গত কারণে। যে ভুলের মাশুল দিতেই কাজী জাফরও সরে গেলেন হয়ত। তিনভাগে বিভক্ত জাপা ভবিষ্যতে আর বাংলাদেশের কোনো উপকারে আসবে না এটাও বলে রাখা উত্তম।
এরশাদ কি এখনকার মতো ‘নাটকীয় চিকিৎসা’ নিতে থাকবেন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে? নাকি ‘সুস্থ’ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসবেন? গত ১২ ডিসেম্বর গভীর রাত থেকে ‘অসুস্থ’ এরশাদ ওই হাসপাতালের অফিসার্স মেসের ভিভিআইপি ওয়ার্ডে ‘চিকিৎসাধীন’ আছেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন কয়েক আগে এরশাদ নির্বাচন থেকে ‘সরে দাঁড়ানোর’ নাটকীয় ঘোষণা দেন। পাশাপাশি দলের সাত নেতাকে ‘নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিসভা’ থেকে ‘পদত্যাগের’ নির্দেশ দেন। তার ‘ঘোষণা’, ‘নির্দেশের’ রহস্য কাটছে না। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম শরীক এরশাদের জাপা।
সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদের ওই ‘ঘোষণা’, ‘নির্দেশের’ পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচন নিয়ে দেশ, বিদেশে আরো বেকায়দায় পড়ে। কেননা, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের জোট নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা আগে থেকেই স্পষ্ট করে দেয়। আওয়ামী লীগ বাদে নির্বাচনে অংশ নেয়া এগারোটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে এরশাদের জাপা ভোটের হিসাবে দেশের তৃতীয় দল। এসব ‘নাটকের’ জন্য এরশাদ কি আওয়ামী লীগের ‘প্রতিশোধের’ শিকার হবেন নতুন সরকার গঠনের পর?
‘রাজনীতিতে ডিগবাজির নায়ক’ এরশাদকে নিয়ে তার দলের কয়েক নেতাকর্মীর দুশ্চিন্তা বাড়ছে। ৫ জানুয়ারির পর এরশাদের কী হবে, দলের অবস্থান কী হবে, এর হিসাব তারা মেলাতে পারছেন না।
তারা মনে করছেন, এখন বেকায়দায় থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এরশাদের বিষয়ে এক ধরনের ‘চুপ’ আছে। ৫ জানুয়ারির পর আওয়ামী লীগের আর ওই বেকায়দা অবস্থা থাকবে না।
তবে জাপার শীর্ষ নেতারা আশাবাদী, এরশাদ ‘সুস্থ’ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরবেন। নতুন সরকারে জাপা থাকবে। নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় জাপার কয়জনকে রাখা হবে, কি কি মন্ত্রণালয় দেয়া হবে, এসব বিষয়ে এরশাদই দরকষাকষি করবেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে।
যোগাযোগ করলে জাপার সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রিয় দেশ ডটনেটকে বলেন, ‘এরশাদ সুস্থ হলে বাসায় ফিরবেন। তিনি নির্বাচনে আছেন। গতকাল শুক্রবার দলের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে। এর প্রতিটি শব্দ দলের চেয়ারম্যান এরশাদের দেয়া।’
দলটির সভাপতিমণ্ডলির সদস্য কাজি ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘নির্বাচনের পর নতুন সরকারে জাপাও থাকবে। কারণ, এবারের নির্বাচনে জাপার প্রার্থীরা ৬৩টি আসনে লড়ছেন। সরকার গঠনে তাই জাপারও ভূমিকা থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ, আওয়ামী লীগের শীর্ষ তিন নেতা প্রিয় দেশ ডটনেটকে জানান, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫ জানুয়ারি ভোট নেয়ার আগেই নতুন সরকার গঠন নিয়ে পরিকল্পনা, চিন্তা শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, দলটির নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দলের নেতারা। আগামী ২৭, ২৮ জানুয়ারি নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন হতে পারে, এমনটি ভাবা হচ্ছে। এরশাদের জাপার কয়েকজনকে মন্ত্রিত্ব দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।’
(প্রিয়দেশ নেট থেকে)