সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির কাগজ সাহিত্য বাজারের সম্মানে ২২ জুন রবিবার বিকালে ওয়ানগালা নাটকের মঞ্চায়ন করছে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়-এর নাট্যকলা অনুষদ। ময়মনসিংহের ত্রিশালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নাট্যমঞ্চে এ নাটকের ২২তম প্রদর্শনী করছে নাট্যকলার শিক্ষার্থীরা। প্রদর্শনী দেখার জন্য ইতিমধ্যে ময়মনসিংহের সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দকে নিয়ে নির্বাহী সম্পাদক স্বাধীন চৌধুরী ত্রিশালের পথে যাত্র শুরু করেছেন।
ওয়ানগালা। আদিবাসী জীবনের এক চমকপ্রদ কাহিনী। গারোদের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব। কেন, কিভাবে এই ওয়ানগালা যুক্ত হলো গারোদের জীবনে তারই তথ্যচিত্র নিয়ে ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়র থিয়েটার এন্ড পারফর্ম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ মঞ্চায়ন করছে নাটক ওয়ানগালা।
এ নাটকের নির্দেশক সৈয়দ মামুন রেজা জানান, ওয়ানগালা মূলত গারো আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষায় রচিত একটি সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব। মি. দান সিং সাংমা কতৃক রচিত আপাসান আগানা (গারো ভাষায় লিখিত) গ্রন্থে এটি প্রথম সংকলিত হয়েছে। উপজাতীয় কারচারাল একাডেমি বিরিশিরির পরিচালিকা বিভা সাংমা ওয়ানগালার এই কাহিনীটি প্রথম বাংলায় অনুবাদ করেন একাডেমি থেকে প্রকাশিত গ্রন্থে। পরবর্তীতে তাদের সহযোগিতা নিয়ে নাট্যকলা অনুষদ এটির মঞ্চায়নে সক্ষম হয়েছে। নাটক ওয়ানগালার রচনা করেছেন অরণ্যচারী ।
এ নাটকের নির্দেশক সৈয়দ মামুন রেজা জানান, ওয়ানগালা মূলত গারো আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষায় রচিত একটি সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব। মি. দান সিং সাংমা কতৃক রচিত আপাসান আগানা (গারো ভাষায় লিখিত) গ্রন্থে এটি প্রথম সংকলিত হয়েছে। উপজাতীয় কারচারাল একাডেমি বিরিশিরির পরিচালিকা বিভা সাংমা ওয়ানগালার এই কাহিনীটি প্রথম বাংলায় অনুবাদ করেন একাডেমি থেকে প্রকাশিত গ্রন্থে। পরবর্তীতে তাদের সহযোগিতা নিয়ে নাট্যকলা অনুষদ এটির মঞ্চায়নে সক্ষম হয়েছে। নাটক ওয়ানগালার রচনা করেছেন অরণ্যচারী।
নির্দেশক মামুন রেজা আরো বলেন,
গারো সমাজ ও সংস্কৃতির হাজার বছরের ঐতিহ্য ওয়ানগালা উৎসব। ওয়ানগালা গারোদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবও বটে। আবহমান গারো সংস্কৃতির পরিμমায় ‘ওয়ানগালা’ গারোদের একটি বিশেষ এবং অবশ্য পালনীয় কৃত্য রূপে বিবেচিত। গারো মিথ অনুযায়ী; ‘তাতারা রাবুগা’ বিশ্বসৃজনের পর পৃথিবীতে সূর্য ও ফসলের দেবতা ‘মিসি সালজং’কে পাঠালেন। মিসি সালজং ফসলের ফরমান নিয়ে পৃথিবীতে আসলেন এবং এক দল মানুষকে ফসল ফলাবার বীজ প্রদান করলেন, সালজং দেবতার আশীর্বাদে ধরণীতে ফসল ফলে উঠলো। ফসলের এক ভাগ সালজং এর নামে উৎসর্গ করে যাবার প্রতিশ্রুতি পালিত হলো। নাচে, গানে আর পানে শুরু হলো সালজং এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাহেন্দ্রক্ষণ। আর এই থেকে প্রচলন ঘটলো ওয়ানগালা উৎসবের। গারো সমাজে প্রচলিত এই মিথকে অবলম্বন করে যে উৎসব, তাকে অবলম্বন করেই আমাদের আজকের এই নাট্য উপস্থাপন।
গারোদের জীবন ব্যবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ, তাদের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল সম্পর্কে পঠন-পাঠনের মাধ্যমে এবং পারষ্পরিক বিনিময় প্রথাতেই গড়ে উঠেছে “ওয়ানগালা” প্রযোজনা। কৃত্যাশ্রিত আমাদের এই পরিবেশনাটি দীর্ঘ দিনের গবেষনার ফসল। দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের প্রতি ভালবাসার নিদর্শন স্বরূপ আমাদের এই ওয়ানগালা নাট্য পরিবেশন।
ওয়ানগালা নাটকের দৃশ্যায়নে যাদের পরিশ্রম আর একাগ্রতা এটিক সফল মঞ্চনাটকে পরিণত করেছে – ইউসুফ মুনসুর, বিলকিছ, মাহ্ফুজুর রহমান অর্নব, পাপিয়া সিংহ, তারেকুল ইসলাম, তানজিনা পিয়াস মিষ্টি, মনির হোসেন, তাহমিনা হোসেন বৃষ্টি, গ্রীতু মানখিন, ডালিয়া আক্তার, উদ্দীপন ম্রং, মুনকাসির হোসেন, সজল কুমার ভৌমিক, চন্দন রবি দাস মিঠুন, বাঁধন চন্দ্র পাল, হুমায়ুন কবীর, সায়মা আফরোজ নিশি, শামসুন্নাহার মুক্তা, কাউসার আহম্মেদ তুষার, শাহনাজ আক্তার ইতি, হাবিবুর রহমান জনি, সঞ্জয় সরকার হীরা, আফরোজা হোসেন কনিকা, এস এম হাসান মাহমুদশবনম মুস্তারী স্বর্ণা, শুভ আচার্য্য প্রমূখ।
চমৎকার কোরিওগ্রাফী ও কস্টিউম ডিজাইনের দায়িত্ব পালন করেছেন ইমরান হাসান শিমূল, সাদ্দাম হোসেন, চৈত্রী তৃতীয়া ঘাগরা, নেপথ্যে কণ্ঠ ও অন্যান্য সহযোগিতা দিয়েছেন নুসরাত জাহান শিমু, আফসানা আক্তার নওরীন, রনাল্ড সুবীর রখো। অঙ্গসজ্জায় ছিলেন দীপংকর বৈরাগী এবং নির্দেশনা সহযোগীর দায়িত্ব পালন করছেন ইমরান হাসান শিমূল।
আগামী ২৩ ও ২৪ জুন নেত্রকোনার বিরিশিরি উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি আয়োজিত আদিবাসী মেলায় এ নাটকের প্রদর্শনী চলবে।