অবাক রাজত্ব !!! : ইথিজা অবেরয়
আমাদের দেশে বর্তমানে গণতন্ত্র চর্চার মহোত্সব চলছে। এই গণতন্ত্র হচ্ছে— যা খুশি তাই করার গণতন্ত্র। এখানে এখন সবাই স্বাধীনভাবে এই ‘গণতন্ত্র’ চর্চা করছে। কেউ কোনো যুক্তিবুদ্ধির ধার ধারছে না। কেউ কাউকে মানছেন না। যে যাকে খুশি তাই বলছে। যে যার মর্জিমাফিক হরতাল দিচ্ছে, যে যার গোষ্ঠীস্বার্থ মত বিভিন্ন দফা ঘোষণা করছে, এসব দফা বাস্তবায়ন না করলে দেশের দফারফা করার কর্মসূচি দিচ্ছে। যে কোন ভুঁইফোড় সংগঠন দেশ অচল করার হুমকি দিচ্ছে। বিচিত্র সব দাবিদাওয়া উপস্থাপন করা হচ্ছে, সরকারকে দাবি মেনে নেয়ার জন্য নিয়মিত আলটিমেটাম দেয়া হচ্ছে। এ-ওর বিরুদ্ধে, সে-তার বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। দাবি-দাওয়ার ফল্গুধারা বয়ে যাচ্ছে। হিংসা, বিদ্বেষ ক্ষোভ, নিন্দা প্রতিবাদ নৈরাজ্য সন্ত্রাস সবকিছু চলছে সমানতালে। সরকার-বিরোধী দল-নাগরিক-ভবঘুরে সবাই সবাইকে গণতন্ত্রী হতে বলছেন, সবাই সবাইকে গণতন্ত্র শেখাচ্ছেন। যে যার অবস্থানে অনড় থেকে দাবি উত্থাপন করছেন, অনড় অবস্থানে থেকেই একে অপরের দাবি নাকচ করে যাচ্ছেন। এ যেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই গানের মত—’আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে’। আমাদের পেটে ভাত না থাকুক, পরনে কাপড় না থাকুক, রোগ-শোক-জ্বরা যতই গ্রাস করুক না কেন, আমরা সবাই রাজা, আমাদের এই ‘অবাক’ রাজত্বে, অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা-নিরাপত্তা নয়, আমাদের আকাঙ্ক্ষা ‘রাজা’ হওয়া, ‘গণতন্ত্র’ চর্চা করা। এই চর্চা বর্তমানে জোরেশোরে চলছে।
আমরা অনেক কিছুই জানি, কিন্তু মানার বেলা মানি না। জাতির ভালোর জন্য শিল্পী-সাহিত্যিক-কবি-গায়ক-দার্শনিকরা অকাতরে উপদেশ বিলিয়েছেন। যা করলে আমাদের কল্যাণ হয়, উপকার হয়, এমন অসংখ্য কথামালা তারা আমাদের উদ্দেশ্যে রচনা করেছেন। সেসব বাণী এবং উপদেশ আমরা নিয়মিত শুনি, মুখস্ত বলি, গুণগুণ করে আওড়াই, মনে রাখি, কিন্তু যা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন—সেগুলো মানা—তা করি না। লালনের গান আমাদের দেশে অনেকে পছন্দ করেন। কতগুলো গান তো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ‘সময় গেলে সাধন হবে না’—গানটির কথাই ধরা যাক। এই গানটি আমরা অনেকেই শুনেছি। নীতি নির্ধারক, মন্ত্রী, আমলা, রাজনীতিবিদ সবাই শুনেছেন। কিন্তু কেউ-ই সময়ের কাজ সময়ে করার ব্যাপারে উত্সাহী হননি। ফলে আমরা বিশ্বের উন্নত জাতিগুলো থেকে পিছিয়ে থেকেছি।
আমাদের দেশে অনির্বাচিত সরকারের উত্পাত নির্বাচিত সরকারকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দিতে পারেনি। ওদিকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারগুলো নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করতে পারেনি। এক্ষেত্রে তাদের সংকল্প-সততা-নিষ্ঠার অভাব তো আছেই, বিরোধী পক্ষের সর্বাত্মক বিরোধিতা ও হিংসাও রয়েছে। এই হিংসা আর বিরোধিতা মোকাবেলা করতে গিয়ে তাদের আয়ু আর শক্তি শেষ হয়ে যায়। আসল কাজ করা আর হয়ে উঠে না।
আমাদের দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই দুই শিবিরে ভাগ হয়ে গেছে। একদল এটা করে তো আরেক দল এর বিপক্ষে দাঁড়ায়। ফলে ল্যাং মারামারি আর কাছা টানাটানি শেষ হয় না। স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পরও আমরা নির্বাচন ব্যবস্থা বা নির্বাচন প্রক্রিয়ার একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারিনি। যখন যে ক্ষমতায় গেছে তারা নিজেদের মতো একটা ব্যবস্থাকে সমর্থন করেছে। আর যারা ক্ষমতার বাইরে থেকেছে তারা অন্য এক ব্যবস্থার জন্য প্রাণপাত করেছে। ঠ্যালায় পড়লে তারা আবার একে-অপরের দাবি মেনেও নিয়েছে। কিন্তু প্রতিবার তারা সেই একই ইস্যু নিয়ে গোঁয়ার্তুমি অব্যাহত রেখেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিরোধীদল আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তারা এই দাবি না মানলে নির্বাচনে যাবে না বলে স্পষ্ট ঘোষণাও দিয়েছে। পক্ষান্তরে সরকারপক্ষ এই দাবি মানা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। নিজ নিজ অবস্থানে উভয় পক্ষ অনড় এবং অবিচল রয়েছে। বিরোধীরা তাদের প্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য করা হবে বলে হুঙ্কার ছাড়ছেন। এই প্রস্তাবের ভালমন্দ বিশ্লেষণ করে পক্ষে-বিপক্ষে লেখক-বুদ্ধিজীবীরাও ব্যাপক লেখালেখি শুরু করেছেন, আলোচনা-অভিমত প্রদান করছেন। আপাতত দেশজুড়ে আগামী নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে কি হবে না; বিরোধীদলের সঙ্গে সরকারপক্ষ আলোচনায় বসবে কি বসবে না, এ আলোচনা সংসদে হবে না সংসদের বাইরে হবে—এ নিয়ে চলছে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা, শোরগোল। এই শোরগোলে আমাদের কান ঝালা-পালা হচ্ছে। অথচ শোরগোল থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যে যার অবস্থানে অনড় থেকে কথা চালাচালি করছেন। এসব বায়বীয় কথামালায় সৃষ্ট সঙ্কট সমাধানের কোনো আভাস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যথারীতি এই রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে দাতাগোষ্ঠীর প্রতিনিধি ও বিদেশি কূটনীতিকরাও মাথা ঘামাচ্ছেন। তারা সরকার ও বিরোধীদলকে আলোচনার টেবিলে বসার আহ্বান জানাচ্ছেন। সব বিরোধপূর্ণ ইস্যু আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকি সরকার ও বিরোধীদলকে আলোচনার টেবিলে বসাতে তারা কূটনৈতিক উদ্যোগও নাকি চালাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো এক্ষেত্রে আপসহীন। বিদেশিদের উপদেশ-পরামর্শও তাদের টলাতে পারছে না। যে যার অবস্থানে শক্ত হয়ে বসে থেকে সমস্যার সমাধান চাইছেন। কিন্তু সমস্যার সমাধানের জন্য কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না। জেদ ও একগুঁয়েমি ছেড়ে উদার ও নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কেউই এগিয়ে আসছেন না। ফলে সমস্যা ক্রমেই সঙ্কটে রূপ নিচ্ছে। আমাদের দেশের রাজনীতিকরা অবশ্য ঘোলা জল পান করতেই বেশি পছন্দ করেন। যে সমস্যা খুব সহজেই মিটিয়ে ফেলা যায়, তা তারা করেন না। গোঁ ধরে বসে থাকেন। এরপর পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন তারা ঠিকই আপস করেন। ছাড় দেন। নব্বই সালে সব রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবির পরও এরশাদ সরকার গোঁ ধরেছিল। কোনো অবস্থাতেই পদত্যাগ করা হবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আন্দোলনের তীব্রতার মুখে শেষ পর্যন্ত এরশাদ পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। এরশাদের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণার কয়েক মিনিট আগেও বর্তমান বিএনপি নেতা, সাবেক আইনমন্ত্রী ও এরশাদ সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি মওদুদ আহমদ এরশাদের পক্ষে সাফাই গাইছিলেন। কেন সরকার পদত্যাগ করবে না বা সরকারের পদত্যাগ করা উচিত হবে না, পদত্যাগ করলে কী কী অসুবিধা বা সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হবে-এসব বিষয়ে নসিহত করছিলেন। বাঙালকে হাইকোর্ট দেখানোর মতো মওদুদ আহমদের ‘সংবিধান’ দেখানোর কয়েক মুহূর্ত পরই এরশাদের পদত্যাগের ঘোষণা আসে। আন্দোলনের ঠ্যালায় আইন-সংবিধান সবকিছু তুচ্ছ হয়ে যায়। এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এরপর ১৯৯৫ সালেও সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের তীব্র দাবি ওঠে। এই গণদাবিও ক্ষমতাসীন বিএনপি সরকার নাকচ করে। তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ‘পাগল ও শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়’ বলে মন্তব্য করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জোরেশোরে অস্বীকার করেন। কিন্তু দেশব্যাপী ব্যাপক অসহযোগ আন্দোলন গড়ে উঠলে তিনি শেষ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে নিয়ে পদত্যাগে বাধ্য হন।
দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীনরা ব্যাপক আন্দোলনের মুখে ঠিকই পদত্যাগ করেছেন, গণদাবি মেনে নিয়েছেন। পদত্যাগ করে আলোচনার টেবিলে বসেছেন। সাংবিধানিক ধারাকেও সমুন্নত রেখেছেন। এ জন্য তাদের অনেক ছাড়ও দিতে হয়েছে। কিন্তু এ কাজটি ক্ষমতাসীনরা কখনই সময় থাকতে করেননি। অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম, রক্তপাত, নৈরাজ্য ও শক্তিক্ষয়ের পর তারা ঠিকই গণদাবি মেনে নেন। অথচ এই গণদাবি মেনে নিতে বাধ্য করার আগেই তারা যদি তা মেনে নিতেন তাহলে এত ক্ষয়ক্ষতি, বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য সৃষ্টি হতো না। জাতিকেও এ জন্য বার বার এত মূল্য দিতে হতো না। আমাদের প্রধান দুই দল এবং দুই দলের প্রধান দুই নেত্রীর পারস্পরিক বৈরিতা এখন অলঙ্ঘনীয় নিয়তি বা ধ্রুব সত্যে পরিণত হয়েছে। একে অপরের বিরুদ্ধাচরণ ও পারস্পরিক সর্বনাশ কামনাই এই দুই দল এবং দুই নেত্রীর একমাত্র লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। বিএনপি চায় না আওয়ামী লীগ আর এক মুহূর্তের জন্য ক্ষমতায় থাকুক। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ চায় বিএনপি কখনই আর ক্ষমতায় না আসুক। উভয় দলই ক্ষমতা চায়, ক্ষমতায় থাকতে চায়, একই সঙ্গে অন্যদলের ধ্বংস বা সর্বনাশও চায়।
এই চাওয়ায় কোনো খাদ নেই, নেই কোনো গোঁজামিল। রাজনৈতিক দলগুলোর এ সর্বনাশা ও আত্মঘাতী নীতির কারণে আমাদের দেশ ক্রমেই পেছনে চলে যাচ্ছে। নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, অস্থিতিশীলতা, সন্ত্রাস দিন দিন বাড়ছে। সব সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে হতাশা। আর এসবের হাত ধরে বিকশিত হচ্ছে মৌলবাদী চক্রসহ অন্ধকারের অদৃশ্য অপশক্তি। সবাই মিলে দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে করছে নির্মম টানাহেঁচড়া।
অথচ আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও এসব দলের নেতানেত্রীরা সবাই দেশপ্রেমের কথা বলেন, দেশের কল্যাণ চান, গণতন্ত্র চর্চা এবং গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের কথা বলেন। আইনের শাসন ও মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলেন। তারা বলেন এক; কিন্তু করেন ঠিক তার উল্টো। কী এক অদৃশ্য মোহেরবশে ও রিপুর তাড়নায় আমাদের নেতানেত্রীরা পারস্পরিক খেয়োখেয়ি ও ঝগড়া-কলহকেই নীতি হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এর ফলে দেশের বারোটা বাজছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো জাতি। আর উপকৃত হচ্ছে মতলববাজ সুবিধাবাদী শ্রেণী; অন্ধকারের কীটরা। তবু কারও হুঁশ নেই। সংশ্লিষ্ট নেতানেত্রীদের মধ্যে শুভবুদ্ধির উন্মেষ ঘটবে এমন কোনো সম্ভাবনাও আপাতত দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের অবস্থা বর্তমানে মহাভারতের দ্রৌপদীর মতো। দ্রৌপদীর ছিল পাঁচ স্বামী—যাদের পঞ্চপান্ডব বলা হতো। এই পঞ্চপান্ডবের প্রত্যেকেই দ্রৌপদীকে ভালবাসত। অথচ রাজসভায় যখন দ্রৌপদীর কাপড় খোলার চেষ্টা হচ্ছিল তখন পাঁচ-পাঁচটা বীর বসে বসে দাঁত দিয়ে আঙুলের নখ কাটছিল।
কারণ? কারণ ওই বীর পঞ্চপান্ডব দ্রৌপদীকে বাজি রেখে পাশা খেলায় হেরে গিয়েছিল। শকুনি মামার খিলখিল হাসি আর দুঃশাসনের শাড়ি ধরে টানাটানি চুপচাপ চেয়ে দেখা ছাড়া তাদের অন্য কোনো উপায় ছিল না। আমাদের দেশেরও বর্তমানে দ্রৌপদীর দশা। এই দেশের এখন অসংখ্য স্বামী। ক্ষমতার পাশা খেলায় স্বামীরা মত্ত। অদৃশ্য থেকে শকুনি মামারা পরামর্শ দিয়ে চলেন। আর মুখ টিপে হাসেন। শকুনি মামার পরামর্শে নিশ্চিত পরাজয়ের পাশাখেলা আর থামে না। ওদিকে দ্রৌপদী-বাংলার বস্ত্র একটু একটু করে খসে যাচ্ছে। দ্রৌপদীকে শেষ পর্যন্ত শ্রীকৃষ্ণ রক্ষা করেছিলেন; কিন্তু আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে কে রক্ষা করবে? এখানে কৃষ্ণরা যে স্বয়ং দুঃশাসন ও শকুনি মামাদের দলে!
লেখক : ইথিজা অবেরয়
এই শোরগোলে আমাদের কান ঝালা-পালা হচ্ছে। অথচ শোরগোল থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যে যার অবস্থানে অনড় থেকে কথা চালাচালি করছেন। এসব বায়বীয় কথামালায় সৃষ্ট সঙ্কট সমাধানের কোনো আভাস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বাংলাদেশের অবস্থা বর্তমানে মহাভারতের দ্রৌপদীর মতো। দ্রৌপদীর ছিল পাঁচ স্বামী—যাদের পঞ্চপান্ডব বলা হতো। এই পঞ্চপান্ডবের প্রত্যেকেই দ্রৌপদীকে ভালবাসত। অথচ রাজসভায় যখন দ্রৌপদীর কাপড় খোলার চেষ্টা হচ্ছিল তখন পাঁচ-পাঁচটা বীর বসে বসে দাঁত দিয়ে আঙুলের নখ কাটছিল।
এ লেখা পড়েও যদি রাজনীতিবিদদের হুশ না আসে, তাহলে বিকল্প খোঁজাই উত্তম। ধন্যবাদ লেখক ঈথিজাকে সময়োপযোগি এ লেখনীর জন্য।
বাংলাদেশ আমজনতা পরিষদ (বাপ) গঠন এখন খুবই জরুরী। দেশকে ভালোবাসেন, দেশের প্রতি দায়বদ্ধ প্রতিটি মানুষের প্রতি অনুরোধ আসুন নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলি। বাপ-এর প্রধান পর্ষদ কখনো ক্ষমতালোভী হবে না। কেন্দ্রিয় পদ আকঁড়ে রেখে বাপ-এর কোনো সদস্য বা সন্তান কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
সব ধর্মের প্রতি যারা শ্রদ্ধাশীল। সব মানুষের প্রতি যারা সহযোগিতার হাত বাড়ায় তারাই এ দলের নেতৃত্ব গ্রহণের যোগ্য হবেন।
কোনো ছাত্র সংগঠন, সাংবাদিক বা পেশাজীবী সংগঠন বাপ অনুমোদন করবে না।
দলীয় রাজনীতি থাকবে তবে কর্মক্ষেত্রে দলমতের উপরে থেকে কাজ করবেন বাপ সদস্যরা। জাতীয় সব ইস্যুতে একটাই দল থাকতে হবে – বাংলাদেশী দল।
যারা সহমত, আসুন ঐক্য গড়ি
বাংলাদেশ আমজনতা পরিষদ গঠন করি।
কিভাবে কি করতে হবে আমি জানিনা। তাই সাহয্য করুন। শ্রম দেব।