হৃদয় জুড়ে গোলাপের পাপড়ি
অপূর্ব গৌতম
লক্ষ কোটি শুক্রাণু আর ডিম্বানুকে পরাস্ত করে
আমি বীরদর্পে জায়গা করেছি মাতৃগর্ভে
আমি হারিনি তখন
আমি আছি, দিনে দিনে বহু দিন
মাসে মাসে বহু মাস
আমি খেয়েছি, আমি বেড়েছি
আমি আদর নিয়েছি আমার মায়ের
আমি জানান দিয়েছি –
মা, মা আমি আছি তোমার গর্ভে
আমি ভাল আছি, আমি বাড়ছি
প্রতিদিন আমি বড় হচ্ছি আমার মত করে
অবিরাম সংগ্রামের পর আমি এলাম
আমার পৃথিবীতে, আমার বাংলায়
আমি জানান দিলাম, আমি চিৎকার দিলাম
আমি আনন্দ করলাম, আমি উল্লাস করলাম
সবাই আমাকে উষ্ণতায় বরণ করল
চারিদিকে শুধুই আনন্দের হিল্লোল।
এ আনন্দ আমার বিজয়ের
এ আনন্দ আমার আগমনের
মানুষের এ আনন্দকে বহমান রাখতেই
আবার আমার নতুন সংগ্রাম।
অতি আদরের আমি বড় হতে হতে দেখি
কিছু নষ্ট লোক, দাঁত কেলিয়ে
ফিক ফিক করে হাসে
ওদের মুখের দুর্গন্ধে আমার
পেটের নারিভুরি বেড় হয়ে আসে
দিন দিন ওরা হাসতে হাসতেই দুর্গন্ধ ছড়ায়
পুঁতিময় এমন দুর্গন্ধে ধ্বংস হচ্ছে
বাংলার আকাশ-বাতাস, গাছ-গাছালি
জীব-জন্তু, যানবাহন
দুর্গন্ধের আগুনে পুড়ছে মানুষ, পুড়ছে যান
পুড়ছে শিশু, পুড়ছে বাইবেল, গীতা, কোরআন
এমন ধ্বংসযজ্ঞ স্বাধীন বাংলায় হয়নি কখনো আর
আমি কষ্ট পাচ্ছি, আমার জন্য
আমার মায়ের জন্য
আমার অনাগত ভবিষ্যতের জন্য।
আমি ঘুরে দাঁড়ালাম
আমি রুখে দাঁড়ালাম
আমার মাকে, আমার মাটিকে
নির্বিঘ্নে বসবাসে আমি প্রত্যয়ী হলাম
আমি দুর্গন্ধ সরাব, আমি জঞ্জাল সরাব
আমি হাহাকার মুছে কোমল শিশুর
হৃদয় জুড়ে গোলাপের পাপড়ি সাজাব
আমি বাংলার শ্রমজীবী মানুষের
লক্ষ কোটি হাতে
শ্রমের ন্যায্য মূল্য দেব।
মাটি থেকে নিচে, আরও বহু নিচে
দুর্গন্ধ আর কেলানো দাঁত
শক্ত হাতে পুঁতে
নতুন করে রচিব আমি
আমার বাংলার শ্যামল আঙিনা।
অপূর্ব গৌতম
২৭-১২-২০১৩
শুক্রবার
বরিশাল