অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪-এর সমাপনী আজ। বিদায় হে একুশ আর বিদায় নতুন বইয়ের প্রকাশনা। প্রতিবছর এই বইমেলাকে ঘীরেই পাঠক-লেখক ও প্রকাশকের যত ভিড়। বইমেলা শেষ মানেই প্রকাশনারও ইতি ঘটবে আজ ২৮ ফেব্রুয়ারিতেই। এমনকি অনেক লেখককে আগামিতে আর খুঁজেই পাওয়া যাবে না। হারিয়ে যাবেন অনেক প্রকাশকও। আর এ কারণেই বেশিরভাগ লেখকের অনুরোধ শুধু ভাষার মাসেই নয়, প্রতিমাসেই দেশের কোথাও না কোথাও বইমেলার আয়োজন এখন খুবই জরুরী। তানা হলে পাঠক হারিয়ে যাবে চিরতরে।
এ প্রসঙ্গে কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল. বলেন, আমি দরজা জানালা খোলা রাখার পক্ষপাতি। কারণ শিশু, কিশোর বা তরুণ যে-ই হোক, তারা যদি বিদেশী লেখকের বই পড়ে তাহলে বিদেশী সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে আমরা শিশুদের বিদেশী কোন্ বইটি পড়তে দেব। এক্ষেত্রে প্রকাশককে সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, আকাশ সংস্কৃতির কারণে আমাদের শিশুরা সর্বক্ষণই বিদেশী কার্টুন বা রূপকথার কল্পকাহিনী শুনছে ও দেখছে। যেহেতু এ সংস্কৃতি থেকে আমরা বের হতে পারছি না, সে ক্ষেত্রে আমাদের টিভি চ্যানেলগুলোর উচিত দেশীয় লোকসাহিত্য, ঠাকুরমার ঝুলি, ঈশপের গল্প নিয়ে বিদেশী চ্যানেলগুলোর মত কার্টুন ও রূককথার গল্প তৈরি করা। যেন আমাদের শিশুরা নিজস্ব সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে বিদেশী সংস্কৃতির ভালটি গ্রহণ করতে পারে।
অপরদিকে মেলার ভিড় অনুপাতে বিক্রি অনেক কম দাবি প্রকাশকদের। সোহরাওয়ার্দি উদ্যান ও একাডেমি চত্বরে মেলা দু’ভাগ হবার কারণে কিছুটা সংকটও তৈরি হয়েছে। দর্শনার্থ ও ক্রেতার অনেকে বুঝতেই পারেনি কোনপাশে আগে যাবেন। প্রকাশকদের মতে এবার নতুন বইয়ের প্রকাশনা বিগত বছরগুলোর তিনগুন বেশি। সে তুলনায় বিক্রি বেশি নয় বলে দাবি করলেন শিরিন প্রকাশনীর মামুনুর রহমান খান। তিনি বলেন এ বছর গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০টি নতুন বই প্রকাশ করা হয়েছে। সেই হিসেবে ২৮ দিনে ৫৬০০ নতুন বই।
তবে বাংলা একাডেমির দেয়া তথ্যে এ বছর মোট প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৫০০০। একুশে গ্রন্থমেলার শেষ দিনে মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৭৪টি। আজকের বিষয়ভিত্তিক বই : গল্প-৩০টি, উপন্যাস-২৪টি, প্রবন্ধ-১২টি, কবিতা-৩৭টি, গবেষণা-৩টি, ছড়া-১৩টি, শিশুতোষ-৩টি, জীবনী-৭টি, রচনাবলি-১টি, মুক্তিযুদ্ধ-৪টি, নাটক-৩টি, বিজ্ঞান-৩টি, ভ্রমণ-৪টি, ইতিহাস-৩টি, রাজনীতি-০টি, চিকিৎসা-১টি, কম্পিউটার-১টি, রম্য/ধাঁধা-২টি, ধর্মীয়-২টি, অনুবাদ-০টি, অভিধান-১টি, সায়েন্স ফিকশন-০টি এবং অন্যান্য-২০টি। আজ মেলায় ১৪টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
বাংলা একাডেমির তথ্যমতে অমর একুশে বই মেলায় প্রথম ১০ দিনে নতুন বই এসেছে ৭৬১টি। ১২ ফেব্রুয়ারী মেলার মোট নতুন বইয়ের সংখ্যা ছিল ৯৪৮টি। এর মধ্যে গল্প ১২১টি, উপন্যাস ১৮৭টি, প্রবন্ধ ৬২টি, কবিতা ২২২টি, গবেষণা ১৪টি, ছড়া ১৪টি, শিশুতোষ ২৩টি, জীবনী ৩৩টি, রচনাবলি ৪টি, মুক্তিযুদ্ধ ২২টি, নাটক ১১টি, বিজ্ঞান ১১টি, ভ্রমন ২৮টি, ইতিহাস ১৩টি, রাজনীতি ৯টি, চিকিৎসা ৩টি, কম্পিউটার ৪টি, রম্য/ধাঁধা ৩২টি, ধর্মীয় ২২টি অনুবাদ ৮টি, সায়েন্স ফিকশন ১৩টি ও অন্যান্য ৮৫টি বই এবারের মেলায় প্রকাশিত হয়েছে।
তবে একডেমি প্রদত্ত তথ্যে বাংলা একাডেমী থেকে জানুয়ারী ২০১৩ সাল পর্যন্ত মোট ৪৯৬৫ টি পুস্তক ও পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। এতে রয়েছে কথা সাহিত্য, কবিতা, সাধারণ অভিধান, পরিভাষা অভিধান, বিভিন্ন লেখক-কবির রচনাবলী, সাহিত্য গবেষণা, সাহিত্য সমালোচনা, দর্শন, ইতিহাস ,ভূগোল, গণিত, বিজ্ঞান, সাংবাদিকতা, ভাষা-আন্দোলন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, শিশু-কিশোর সাহিত্য, অনুবাদ, ধর্ম, সংস্কৃতি, জীবনী ইত্যাদি বিষয়ের গ্রন্থাবলী।
এদিকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলায় নতুন বই এসেছে ২২৫১টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে কবিতার বই। মেলার ২২তম দিনে নতুন বই এসেছে ১৬০টি এবং মোড়ক উন্মোচিত হয়েছে ২০টি বইয়ের।
এদিকে অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রথমদিনেই জনসংযোগ বিভাগ সাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একাডেমি থেকে প্রকাশিত মোট ৬৫টি নতুন বইয়ের তালিকা ও নাম দেয়া সত্বেও এখন পর্যন্ত কোনো বই-ই প্রকাশিত হয়নি বলে দাবি করছে বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমির আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইটে। এ সাইটে (www.banglaacademy.org.bd) বাংলা একাডেমির লোগোর নিচে লেখা আছে ‘বাঙালি জাতিসত্তার প্রতিক’।
সাইটটির প্রথম পৃষ্ঠায় (হোমপেজ) অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪ অংশের নিচেই লেখা আছে ‘এবারের গ্রন্থমেলায় এ পর্যন্ত মোট ০টি বই প্রকাশিত হয়েছে’। এর নিচে সাম্প্রতিক প্রকাশনা নামের বক্স করা অংশে তিনটি বইয়ের নাম আছে, তবে প্রচ্ছদ অন্য বইয়ের। যেমন হুমায়ূন আহমেদের মাতাল হাওয়া বইয়ের প্রচ্ছদের নিচে লেখা আছে নজরুল রচনাবলি বইয়ের নাম। (এতে প্রমাণ হয় যে প্রজেক্ট-এর আঢ়ালে একাডেমি কর্তৃপক্ষের ব্যস্ততা এতো বেশি ছিল যে ২০০৮ এর পর এদিকে কোনো নজরই দেয়নি কেউ)
গত শনিবার (দু সপ্তাহ আগে) এ ব্যাপারে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেছেন, ‘এখন প্রতিদিনই কিছু তথ্য হালনাগাদ করা হচ্ছে। আশা করছি, এক মাসের মধ্যে একটি পরিপূর্ণ ওয়েবসাইট আমরা দিতে পারব।’ এত দিন হালনাগাদ না করার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমরা মেলার বিভিন্ন কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় ওদিকে সময় দিতে পারিনি।’ তিনি জানান, ওয়েবসাইটের জন্য আলাদা করে কোনো বাজেট নেই। এবার বই বিক্রি থেকে যে আয় হবে, তার একটি অংশ ওয়েবসাইটের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
বাংলা একাডেমির সাইটটি প্রচার করছেসমন্বয় ও জনসংযোগ বিভাগ এবং কারিগরি সহযোগিতা করছে প্রফেশনালস সিস্টেমস নামের একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলা একাডেমির উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুরশিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আসলে ওয়েবসাইটে আমার বিভাগের নাম থাকলেও আমি এই ওয়েবসাইটের বিষয়ে কিছুই জানি না। ২০০৮ সাল পর্যন্ত ওয়েবসাইটটি আমার দায়িত্বে ছিল।’
প্রফেশনালস সিস্টেমসের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেলা শুরু হওয়ার এক দিন আগে তাদের মৌখিকভাবে সাইটটির তথ্য হালনাগাদ করতে বলা হয়েছে। তবে সময়মতো প্রয়োজনীয় তথ্য না পাওয়ায় হালনাগাদের কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না।
শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, ক-শাখায় : সামারা মজুমদার (১ম), সুমাইতা নুসাইবা (২য়) এবং ইনারা আলম আমিরা (৩য়)। খ-শাখায় : নাহিয়ান মাঈশা আয়মী (১ম), মুহতাসিম জামান খান (২য়) এবং জয়া সরকার (৩য়)। গ-শাখায় : অমিয় কৃষ্ণমূর্তি সাহা (১ম), শ্রাবন্তী সাহা (২য়) এবং শায়লা আক্তার উর্মি (৩য়)।
শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, ক-শাখায় : প্রিয়ন্ত দেব (১ম), তানিশা জাহান নরিকা (২য়) এবং যুগ্মভাবে ৩য় হয়েছেন ক. মাশুক কায়সার ইভান ও খ. সুনাম নাদভী-সামন্তি। খ-শাখায় : শিতাব তাহ্মিদ (১ম), মাশায়েখ হাসান (২য়) এবং নুজহাত সাবিহা পুষ্পিতা (৩য়)।
শিশু-কিশোর সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, ইনতিসার তাহমিদ (১ম), তামীম কাইসান (২য়) এবং মারজান শাওয়াল রিজওয়ান।
শিশু-কিশোর উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, সালমান শাহ্রিয়ার সাকিব (১ম), রিজওয়ান আমির ফাহিম (২য়) এবং রোজা শাওয়াল রিজওয়ান (৩য়)।
প্রাবন্ধিক বলেন, একাত্তর সালে সালে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে সারা বিশ্বের বিস্ময় ও আকাশসম বাঁধার প্রাচীর ডিঙিয়ে এবং দেশে বিদেশে ক্রিয়াশীল বৈরী শক্তির মোকাবেলা করে বাংলাদেশের টিকে থাকা এবং বিপুল অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাঝে দৃষ্টিনন্দন আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন যে একটি বিস্ময়কর চমক তার সাফল্যগাঁথা রয়েছে বেশুমার। জাতির জনকের অকুতোভয়, গতিময়, উদ্ভাবনী ও প্রত্যয়ী নেতৃত্ব যেমন দেশের স্বাধীনতা এনেছে তেমনি তাঁর অর্থনৈতিক মুক্তির আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিষাণÑকিষাণী ও শ্রমজীবি মানুষের অকান্ত পরিশ্রম ও অসাধারণ প্রজ্ঞার অধিকারী শিল্প উদ্যোক্তাদের সৃষ্টিকুশলতা মিলেই আজকের বাংলাদেশের অর্থনীতির মজবুত অবস্থান ও দৃঢ় পদেেপ এগিয়ে যাবার চলার পথ।
আলোচকবৃন্দ বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা অুণœ থাকলেই বাংলাদেশের বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক সাফল্য অব্যাহত থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ বলেন, বাংলাদেশের বিস্ময়কর আর্থ-সামাজিক সাফল্যের ধারা বেগবান করতে শুধু সরকারি উদ্যোগই যথেষ্ট নয় এর সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
গ্রন্থমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান
সন্ধ্যা ৬:০০টায় অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪-র সমাপনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা ভাষণ প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। গ্রন্থমেলার ২০১৪-র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন অমর একুশে গ্রন্থমেলার সদস্য-সচিব ও একাডেমির পরিচালক শাহিদা খাতুন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস এনডিসি। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
শুভেচ্ছা ভাষণে শামসুজ্জামান খান বলেন, অত্যন্ত সফল ও সার্থকভাবে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪ সমাপ্ত হয়েছে। একুশে গ্রন্থমেলা আজ শুধু বইয়ের মেলা নয় বরং তা হয়ে উঠেছে বাঙালির সৃজনপ্রতিভার অনন্য নিদর্শন। বর্তমান বছরে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার স্থানান্তরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামীবছর থেকে গ্রন্থমেলার পরিসর আরো বিস্তৃত হবে।
প্রতিবেদন উপস্থাপন করে শাহিদা খাতুন বলেন, প্রতিবেদন উপস্থাপন করে শাহিদা খাতুন বলেন, বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলা এখন গোটা বাঙালি জাতির প্রাণের মেলাতে পরিণত হয়েছে। এবারের একুশে গ্রন্থমেলা ঘিরে দেশ ও দেশের বাইরে যে বিপুল চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে তা আমাদের সাংস্কৃতিক অগ্রসরমানতারই প্রতীক। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় গত ২৭ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত প্রকাশিত বিভিন্ন বিষয়ে নতুন বইয়ের সংখ্যা ২,৯৫৯টি। গ্রন্থমেলা গতকাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির নিজস্ব বিক্রয় ছিল ১ কোটি ১০ ল ২৪ হাজার ৫ টাকা ৭০ পয়সা এবং বাংলা একাডেমিসহ এবারের গ্রন্থমেলায় মোট বিক্রির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকা। তিনি বলেন, সম্প্রসারিত মেলার স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান-অংশের প্রাকৃতিক পরিবেশকে রা করে অপরিহার্য দিকগুলো বিবেচনায় রেখে নান্দনিক সাজসজ্জায় বিন্যাসের মাধ্যমে ২০১৫ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজন করা সম্ভব হবে বলে আমরা আশা রাখি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামন নূর বলেন, সকলের একান্ত সহযোগিতায় অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গ্রন্থমেলা স্থানান্তর আমাদের জন্য ছিল একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। ভবিষ্যতে আরো সুপরিসরে মেলা আয়োজনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহায়তা প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, স্থায়িত্ব ও বৈচিত্র্যের দিক দিয়ে ঐতিহাসিক বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলা সুন্দরভাবে শেষ হতে চলেছে যা আমাদের উজ্জ্বল সাংস্কৃতিক ভবিষ্যতেরই বার্তা বহন করে।
সভাপতির বক্তব্য অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, একুশে গ্রন্থমেলা আজ এক জাতীয় উৎসবের নাম। বইয়ের প্রতি যে ভালোবাসা এই মেলা উপলে প্রকাশ হতে দেখি তা তুলনাহীন তবে এই মেলা সম্প্রসারনের পাশাপাশি এর আঙ্গিক নিয়েও নতুন করে ভাবনার সময় এসেছে।
শহীদ মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ও চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার প্রদান
গ্রন্থমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে সর্বাধিক সংখ্যক মানসম্মত গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ‘শহীদ মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হয় – মাওলা ব্রাদার্স, প্রথমা প্রকাশন ও অন্বেষা প্রকাশনকে। সেরা গ্রন্থের জন্য ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হয় বেঙ্গল পাবলিকেশন্স-এর অন্তর্দাহ এবং পাঠক সমাবেশের কাফকা সমগ্র গ্রন্থটিকে। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে পুষ্পস্তবক, ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন সংস্কৃতি মন্ত্রী, বাংলা একাডেমির সভাপতি এবং মহাপরিচালক।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শাহীন সামাদ, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ইফফাত আরা দেওয়ান, বুলবুল মহলানবীশ, ইফফাত আরা নার্গিস, শ্রেয়সী রায়, সানজিদা মনজুরুল হ্যাপী এবং নবিন কিশোর। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বিশ্বজিত সরকার (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), আবু কামাল (বেহালা), ডালিম কুমার বড়–য়া (কী-বোর্ড) এবং নাজমুল আলম খান (মন্দিরা)।