বরিশালে নির্বাচন নিয়ে অনুৎসাহী ভোটার: সরগরম আওয়ামী লীগ
বিশেষ প্রতিবেদক
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মে থেকে জুনের মধ্যে এ নির্বাচন হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আর সেই থেকে বেশ কিছু রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতাদের প্রচারণা বা জনসংযোগ দেখা গেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায়। আবার একইসাথে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও তোড়জোড় অনেক নেতার মধ্যে। কেননা ২০২৩ সালের শেষ কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রত্যাশা। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই ধারাবাহিকতায় বরিশালের রাজনীতিতে সরগরম সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পরিসংখ্যানই বেশি। যদিও সিটি করপোরেশন বা জাতীয় সংসদ, কোনো নির্বাচন নিয়েই সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন কোনো আগ্রহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেবে কি নেবেনা তা নিয়ে কৌতূহল আছে অনেকের মাঝেই। দলটি শেষপর্যন্ত যদি নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে হয়তো বদলে যাবে বরিশালের রাজনৈতিক মেরুকরণ। যদিও তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এতোটাই যে, নিজেদের গুছিয়ে আনতে অনেক সময় নেবে দলটির নেতারা। বিশেষ করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবী, প্রচণ্ডভাবে নেতৃত্ব সংকটে রয়েছে বরিশাল বিএনপি এখন। কেউ কাউকে মানছেনা। যারফলে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই মারামারি, ঝগড়াঝাটি হচ্ছে অহরহ।
তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই বিএনপির – একথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশালে বিএনপির নির্বাচনী প্রাণপুরুষ মজিবর রহমান সরোয়ার। তিনি বলেছেন, এই সরকারের উপর ভরসা করে বিগত নির্বাচনে কিভাবে ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে, দিনের ভোট রাতে হয়েছে তা জনগণ দেখেছেন। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এই সরকারের অধিনে কোনো নির্বাচনেই বিএনপি অংশ নেবেনা বলে জানান মজিবর রহমান সরোয়ার।
তবে দলীয় অনুমতি পেলে নির্বাচনে আগ্রহী বরিশাল মহানগর বিএনপির অনেকেই। তালিকায় রয়েছেন আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবীর ছাড়াও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবায়দুল হক চানও। অন্যদিকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার পাশাপাশি বিভিন্ন কৌশলে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন। প্রার্থী হতে পারেন রয়েল পরিবারের অন্যতম আরেক সদস্য খোকন সেরনিয়াবাত, মহানগর যুবলীগের সহসভাপতি আফজালুল করিম, উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু এবং বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জিয়াউল ইসলামও। এদের কেউ কেউ বসিক ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
বরিশালের রূপাতলী হাউজিং, কাউনিয়া আবাসিক এলাকা, বটতলা ও নবগ্রাম রোড এবং নতুন বাজার এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষের সাথে অনেকটা জোর করেই আলাপচারিতা শেষে জানা গেল, ইতিমধ্যেই নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ব্যাপক জনসংযোগ চালাচ্ছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস এবং বরিশাল আব্দুর রব সেরনিয়াবাত প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক মতবাদ পত্রিকার প্রকাশক এসএম জাকির হোসেন। এছাড়াও প্রচারণায় এগিয়ে আছেন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীরের নামও বললেন কেউ কেউ।
তবে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বরিশালের জেলা ও মহানগরের দলীয় সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বরিশালে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ আমাদের একমাত্র প্রার্থী। কেউ বিরোধিতা করলে কঠোর শাস্তি।
এদিকে বরিশাল ফরএভার লিভিং সোসাইটি এর ব্যানারে বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নগরীর বস্তি এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস। তিনি জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হিসেবে গত বছরের প্রথমদিকেই বরিশালের আগাম মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। অবশ্য ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, মেয়র হবার চিন্তা থেকে নয়, সেবা করার চিন্তা থেকে ফরএভার লিভিং সোসাইটি তৈরি করেছি। ভবিষ্যতে মেয়র হলেও আমার এই কাজ এই প্রতিষ্ঠানিক সেবা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, আমাকে সেবা করার সুযোগ দিলে, আমি প্রথমেই নগরীর সাতটি খালকে ঘীরে উন্নয়ন পরিকল্পনা সাজাবো এবং সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ও সাধারণ নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে বরিশাল উন্নয়ন কমিটি (বউক) গঠন করবো।
একইসময় আগাম প্রচারণায় এগিয়ে থাকা মাহমুদুল হক মামুন বরিশাল ৫ আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল অবঃ জাহিদ ফারুক শামীম এর অনুসারী হিসেবে ইতিমধ্যেই বরিশালে নিজের একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে পেরেছেন। তার প্রচারণা ও চিন্তা বিষয়ে মাহমুদুল হক খান মামুন বলেন, বংশপরম্পরায় আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। আমার বাবা প্রয়াত শামসুল হক, বড় ভাই শহীদুল্লাহ আওয়ামী লীগ করতেন। ১৯৮১ সাল থেকে আমি বিএম কলেজে ছাত্রলীগের ভিপি ছিলাম। তিল তিল করে আজকের এই অবস্থানে এসেছি। যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছি। জেল খেটেছি। ২০০৮, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে চেষ্টা করেছিলাম। দল থেকে মনোনয়ন পাইনি। এবার অন্তত আশাবাদী আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়ে বরিশালবাসীর সেবা করার একটা সুযোগ দেবেন।
খান মামুন আরো বলেন, বরিশালের মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বলছেন, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। আমিতো বলবো এটা ধৃষ্টতা। কারণ এ সিদ্ধান্ত নেয়ার এক্তিয়ার শুধু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারই আছে। তারা কি তাহলে প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও বড়?
এদিকে এবার কোনোরকমের নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা যায়নি বিগত নির্বাচনে সর্বাধিক আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব এবং বাসদের ডাঃ মনীষা চক্রবর্তীকে। এ নিয়েও রয়েছে নানান গুজব ও প্রপাগাণ্ডা। যেমন প্রপাগাণ্ডায় নিজের ভাণ্ডার পূর্ণ করছেন আব্দুর রব সেরনিয়াবাত প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মতবাদ পত্রিকার প্রকাশক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক এসএম জাকির হোসেন। তিনি মেয়র নির্বাচন করবেন নাকি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবার প্রচারণা চালাচ্ছেন? এমন প্রশ্ন মহানগর ও জেলার অনেকেরই। ইতিমধ্যেই তার ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন নগরী ছাড়িয়ে জেলা উপজেলায় আলোচনার বিষয় হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নে চালাচ্ছেন জোর জনসংযোগ, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামও। এ বিষয়ে এসএম জাকির হোসেন বলেন, না না মেয়র নয়। আমিতো বিভিন্ন সাক্ষাৎকার ও সভা সেমিনারে স্পষ্ট বলেছি আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল ৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে এই প্রচারণা চালাচ্ছি।
জাকির আরো বলেন, ছোটবেলা থেকেই পড়াশুনার পাশাপাশি ব্যবসায় ও পত্রিকা সম্পাদনা আমার নেশার মতো ছিলো। একটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক পরিবারে আমার বেড়ে ওঠা। আমার বড়ভাই প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মনির হোসেন আমার আদর্শ ছিলেন। পরবর্তীতে দৈনিক মতবাদ পত্রিকার প্রকাশক হয়ে আমি বরিশালের রাজনৈতিক অবিভাবক (মন্ত্রী পদমর্যাদার) আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এমপি এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর হাত ধরে রাজনীতিতে চলতে শুরু করেছি। তারা আমাকে যুব ক্রিড়া সম্পাদক করেছেন। আমাদের বর্তমান সংসদ সদস্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল অবঃ জাহিদ ফারুকের নির্বাচনী নেতৃত্ব পুরোটাই আমি দিয়েছি। তখন থেকেই মনের ভিতর একটা স্বপ্ন এসেছে। সেই ধারাবাহিকতায় প্রচারণা চালাচ্ছি। আমি আমার রাজনৈতিক গুরুজনের অনুমতি নিয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি বলে জানান জাকির হোসেন।
এই প্রচার-প্রচারণা, পুরাতন আর নতুনত্বের স্বাদ বিস্বাদ এসব কোনোটাতেই নগরবাসী বা জেলার সাধারণ মানুষের কোনো আগ্রহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি রাজনীতি নিয়ে কথা বলতেও অনীহা তাদের। যেটুকু বলেছেন কেউ কেউ, তা অনিচ্ছায় কিম্বা গালাগালি করার সুযোগ নিতে। বরিশালের নতুন বাজারের কাউন্সিলর নঈমুল হোসেন লিটুর অফিস সংলগ্ন দুই ব্যবসায়ী বলেলেন, অযথা নির্বাচনের নামে টাকার অপচয় না করে ঘোষণা করে দিক উমুকে এমপি, উমুকে মেয়র আর চেয়ারম্যান। ল্যাঠাচুকে যায় তবে। আমরাও বাঁচি হয়রানি থেকে।
কাউনিয়া আবাসিক এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ট্যাক্সের বোঝা বইছেন দাবী করে বলেন, বিগত নির্বাচনেতো মরা লোকও কবর থেকে এসে ভোট দিয়ে গেছেন। এবার জ্যাতা লোকও মৃত হয়ে যাবে নাতো।
আর নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে একজন কাউন্সিলর বলেন, আমরা কোনো বিষয় নিয়ে বর্তমান পরিষদের কাছে গেলেই ঘাড়ধাক্কা পাচ্ছি। আপনারা সাংবাদিকরা কি তার সাথে ঠিকমতো কথা বলতে পারেন? বর্তমান পরিষদ প্রধানের ফোন সবসময় বিজিটোনে থাকে আমরাও তাকে পাইনা জানালেন একজন সাংবাদিক নিজেও।
আর সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের পূর্ব কর্ণকাঠী গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা একটি মাটির বহুলব্যবহৃত সড়ক দেখিয়ে বললেন গত ৩০ বছর এই সড়কে হাঁটছি আমরা। এ পথে চরকারঞ্জী যেতে দুটি ব্রীজ রয়েছে। বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এই এলাকা ও চরকারঞ্জীতে মোট ৫টি ব্রীজের কাজ শুরু করেছেন। দুটি হয়তো এ বছর হয়ে যাবে বাকী তিনটির জন্য দুর্ভোগ আছে আমাদের কপালে।
এদের সকলের মুখেই নির্বাচন নিয়ে হতাশা ছাড়া কোনো আশা বা প্রত্যাশা শোনা যায়নি কোথাও। তার সাথে যুক্ত হয়েছে সিটি করপোরেশনের ১০ জন কাউন্সিলরের প্রতি মেয়রের অনাস্থা। ফলে সৃষ্ট সংকট নেতৃত্বের বদল ছাড়া দূরীভূত হবার নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কাউন্সিলর শহীদুল্লাহ্ কবীর ও জিয়াউর রহমান বিপ্লব।
এ সব অভিযোগ ও আগামী নির্বাচন বিষয়ে জানতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ কে ফোন করলে যথারীতি বিজি টোন পাওয়া গেল। (তাই তার বক্তব্যও আর নেয়া হলোনা।)
গত ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩০টি ওয়ার্ডের ১২৩টি ভোটকেন্দ্রে ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন ভোটার ছিলো। পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের অনেকেই এখন বিতর্কিত এবং ঐ নির্বাচন নিয়েও অনেক অভিযোগ চারপাশে। বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ বা ভোটার ভোট দিতে না পারার দাবী করে আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে রাজী হননি।
ঐসময় সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর বাদে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ছয় জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ (নৌকা), বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব (হাতপাখা), জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙ্গল), বাসদের মনীষা চক্রবর্তী (মই) ও সিপিবির একে আজাদ (কাস্তে)।
ঐ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব প্রচার-প্রচারণায়ও বেশ এগিয়ে ছিলেন। বিগত ২-৩ বছরে দেশে যত নির্বাচন হয়েছে তার প্রায় সব ক’টিতেই অংশ নিয়েছে দলটি। তাদের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যাও ঈর্ষণীয় এবং সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে কাজের অগ্রগতিতে তাদের চেয়ারম্যানগণ অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করছেন। আর সেবামূলক কাজে ডাঃ মনীষাও রয়েছেন আলোচনায়। যদিও আগামী নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই মনীষার। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের বর্তমান পরিষদ জনগণের উপর শুধু ট্যাক্সের বোঝা বাড়িয়েছে। তার কাছে প্রত্যাশার কিছুই পায়নি জনগণ।
তবে যত যাই আলোচনা সমালোচনা হোক বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ই আগামীতে মেয়র হবেন এটা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, বরিশালের জেলা ও মহানগর এখানে ঐক্যবদ্ধ এবং প্রচন্ড শক্তিশালী। আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বরিশালে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ আমাদের একমাত্র প্রার্থী এখানে তার কোনো বিকল্প নেই। এই সিদ্ধান্তের বাইরে যারা যাবেন তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ। আর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদর আসনেও হতে পারে নতুন হিসাব তার প্রমাণ এসএম জাকিরের প্রচারণায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সমর্থন।