২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রবিবার। অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২৩তম দিন। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ৮২টি এবং ১৩টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। আজকের বিষয়ভিত্তিক বই : গল্প-১০টি, উপন্যাস-২০টি, প্রবন্ধ-৫টি, কবিতা-১৮টি, গবেষণা-৩টি, ছড়া-২টি, শিশুতোষ-৩টি, জীবনী-৩টি, রচনাবলী-০টি, মুক্তিযুদ্ধ-১টি, নাটক-৩টি, বিজ্ঞান-৩টি, ভ্রমণ-৫টি, ইতিহাস-০টি, রাজনীতি-০টি, চিকিৎসা-০টি, কম্পিউটার-০টি, রম্য/ধাঁধা-০টি, ধর্মীয়-০টি, অনুবাদ-১টি, অভিধান-০টি, সায়েন্স ফিকশন-১টি এবং অন্যান্য-৬টি।
বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আবদুল হাফিজ : ফোকলোরের জনপ্রান্তরের ভেতরে শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তসিকুল ইসলাম রাজা, শাহিদা খাতুন এবং মোস্তফা তারিকুল আহসান। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
প্রাবন্ধিক বলেন, আবদুল হাফিজ ছিলেন ফোকলোরের একজন ঋদ্ধ মানুষ। তিনি মাঠপর্যায়ে নিজে ফোকলোরের বিভিন্ন উপাদান সংগ্রহ করেছেন এবং এর তাত্ত্বিক ব্যাখ্যাতেও নিজস্ব চিন্তার মৌলিকতা যুক্ত করেছেন। ফোকলোর তাঁর গবেষণার প্রধান ত্রে হলেও সাহিত্যের অন্যান্য শাখায়ও তিনি রেখেছেন বৈশিষ্ট্যের স্বার। জ্ঞানচর্চার বহুমাত্রিক বিন্যাসে আবদুল হাফিজ আমাদের জ্ঞানচর্চার বিস্তৃত পরিসরে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলা-ফোকলোরের রূপ-রূপান্তরে আবদুল হাফিজ তাঁর অনন্যসাধারণ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের লৌকিক ঐতিহ্যের অনুসন্ধানে তাঁর গবেষণামূলক গ্রন্থ ও রচনাসমূহের অবদান অসামান্য। ফোকলোর উপাদান ব্যবহারের েেত্র মৌলিক চিন্তার বিকাশে তিনি ছিলেন এক তুলনারহিত ব্যক্তিত্ব। তারা বলেন, ফোকলোর অধ্যয়নে মনোঃসমীণ পাঠকে যুক্ত করে আবদুল হাফিজ আমাদের ফোকলোরের আধুনিক অভিযাত্রাকে নিশ্চিত করেছেন। বাংলাদেশের লোককাহিনির বৈজ্ঞানিক শ্রেণিকরণে তাঁর গবেষণাপদ্ধতি উত্তরকালের গবেষকদের কাছে উদাহরণীয় হয়ে থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে শামসুজ্জামান খান বলেন, অধ্যাপক আবদুল হাফিজ আমাদের ফোকলোরকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে দাঁড়করণে পুরোধাপ্রতিম ভূমিকা পালন করেছেন। ফোকলোরের পাশাপাশি আধুনিক সাহিত্যের আলোচনায়ও তাঁর স্বাতন্ত্র্য আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। তিনি বলেন, বিস্মৃত এই ফোকলোর-গুণীকে নিয়ে বাংলা একাডেমি অচিরেই আরো নিবিড় আলোচনার আয়োজন করবে এবং তাঁর রচনাবলি ও জীবনী প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে গোলাম কুদ্দুছের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বহ্নিশিখা’, সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী’ এবং আরজু খানের পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘আবৃত্তিশীলন’। এছাড়া পুঁথি পাঠ করেন রেজা রব্বানী। সংগীত পরিবেশন করেন শ্যামল পাল, মুকুল কান্তি দে, বাবু রহমান, রীতা ভাদুরী, ডালিয়া সুলতানা, আঁখি আলম, এবং মো. মিলন। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রাজু চৌধুরী (তবলা), মোঃ হোসেন আলী (বাঁশি), এস. এম. রেজা বাবু (ঢোল), আবদুর রব হাওলাদার (দোতারা) এবং নাজমুল আলম খান (মন্দিরা)।
আগামীকালের অনুষ্ঠান
আগামীকাল ১২ ফাল্গুন মাঘ ১৪২০/২৪ ফেব্র“য়ারি ২০১৪ সোমবার। বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মাসুদুজ্জামান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন সুব্রত বড়–য়া, খালিকুজ্জামান ইলিয়াস, ইমানুল হক এবং জাকির তালুকদার। সভাপতিত্ব করবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। সন্ধ্যায় পরিবেশিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।