সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে চট্টগ্রাম
বিশিষ্ট ভাষাবিজ্ঞানী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয–এর বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড.মনিরুজ্জামান সম্পাদিত অনন্য গবেষণা গ্রন্থ — সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে চট্টগ্রাম (২০১৬)। এর আগে গোষ্ঠীপত্রিকা ও সাময়িকী (২০০৬) তার লেখনী গবেষণার অন্যমাত্রা ছুঁয়ে ছিল। ভাষাবিজ্ঞান নিয়েতো তাঁর কাজ অনন্য সাধারণ। চট্টগ্রামের উপভাষা নিয়ে তাঁর মতো করে আগে কেউ কাজ করেনি, এটা বলাই যায়। চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের প্রতি তাঁর হৃদ্যতা প্রশ্নহীন।
কোহিনূর প্রকাশন থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত এ গ্রন্থের প্রতিটি পাতায় তিনি তুলে এনেছেন চট্টগ্রামের ইতিহাস ঐতিহ্যের অংশিদারিত্বে থাকা লুকানো সেইসব মানুষদেরও। যথাযোগ্য সম্মান ও স্বীকৃতি দেখিয়েছেন এ সময়ের তরুণদের প্রিতিভাবানদের প্রতিও।
সত্যিই আপ্লুত,আনন্দিত,কৃতজ্ঞ ড.মনিরুজ্জামান এর কাজ মানেই তুলনাহীন পরিশ্রমসাধ্য কর্মযজ্ঞ, তা আবার প্রমান দেখবেন এর পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় চট্টগ্রামএর কৃতীদের তথ্যতালাশ দেখে দেখে।
নিখিলেশ কেমন আছো
একুশের বইমেলা-২০১৭ তে প্রকাশিত হয়েছে নব্বই দশকের অন্যতম কবি মাঈন উদ্দিন জাহেদ এর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘নিখিলেশ কেমন আছো’। দীর্ঘ বার বছর পর বের হলো কবি এটি। কবির প্রথম কাব্য ‘সেপ্টেম্বরের ইলশে রোদ ঘিয়ে বিষ্টি’ প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৫ সালে, চট্টগ্রামের পোয়েটিক্স থেকে।পোয়েটিক্স এর আরো ভালো উদ্যোগ ছিলো বাংলাদেশে প্রথম কবি আল মাহমুদ এর কবিতা আবৃত্তির সিডি প্রকাশ- যা উভয় বঙ্গে সমাদৃত হয়েছিলো। চট্টগ্রামের সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা ‘গলুই’ থেকে বের হওয়া এ কাব্যটির দৃষ্টিনন্দন প্রচ্ছদ ও প্রতিটি কবিতায় প্রাসঙ্গিক অলংকরণ করেছেন খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী মোমিন উদ্দীন খালেদ। প্রায় ৭৯টি ছোট বড় দীর্ঘ ও অনুবাদ কবিতার গ্রন্থনা এটি। প্রতিটি কবিতার বিষয় প্রাসঙ্গিক ইল্যাস্টেশন কাব্যটির বাড়তি আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে গজল নিয়ে একপৃষ্ঠা চমৎকার ভূমিকাসহ গজল সম্রাট আসাদুল্লাহ খা গালিবের পাঁচটি গজল অনুবাদ, উপমহাদেশে অন্যতম উর্দু কবি আলতাফ হোসেন হালি’র তিনটি রুবাইয়াত অনুবাদ, মধ্যপ্রাচ্যের খ্যাতিমান সূফী কবি মনসুর হাল্লাজ এর পাঁচটি কবিতা অনুবাদ পাঠরুচিতে বৈচিত্র্য এনেদেয় ‘নিখিলেশ কেমন আছো’ কাব্যগ্রন্থ। এছাড়া টুকরো কবিতা শিরোনামে ৬টি কবিতা, চৌপদী শিরোনামে ৯টি চুম্বকীয় কবিতামালা পাঠক হৃদয় আদ্র করার মতো। এছাড়া এ কবির নিজস্ব ঘরানার ৩৪ টি কবিতাতো রয়েছেই।সাথে তার পরিমিত শিল্পবোধ ও সৃষ্টিশীল পংক্তিমালা কবিতা পাঠকের দৃষ্টি কাড়বে। কবি ও প্রাবন্ধিক মাঈন উদ্দিন জাহেদ এর কবিতার বই “নিখিলেশ কেমন আছো” বাংলা সাহিত্যে একটা অন্যরকম জায়গা করে নেবে আাশা রাখি। কবিতায় জাহেদ যথারিতি পরিশুদ্ধ, পরিশীলিত, আর বাক্য ও শৈল্পিক কারুকাজে পারদর্শী। স্মৃতিকাতরতা, ভালোবাসা, ক্ষোভ, দেশচিন্তার পাশাপাশি কবি সময়কে ধারন করেছেন নানা ভাবে। প্রত্যেকটি কবিতায় অনিন্দ সুন্দর শিল্পিত ভঙ্গিমায় জাহেদ শব্দ যোজনা দিয়েছে নিজস্ব ঢঙে: ১.”হায় বাসনা! তুমি কি জোড়া কমালালেবু? কামনার ছোট বোন? তোমাকে গোপন করে দিন দিন আমরা ভব্য হয়ে উঠি!- হায় বাসনা ২.”ঝিঁঝিপোকারা আমাকপ চেনে চেনে মেয়ে মৌমাছি আর কাঠপোকা; ওদের চিৎকারে ধ্যান ভাঙ্গে ভেবাচেকা টিকটিকির সঙ্গমে। – রাতের আলপনা ৩.”মিলিটারি গেলো, বাংলার মসনদে বাঙালিই রাজা, আমরা তো প্রজা হয়েই আছি; তনুরা এখনও নিখোঁজ হয় মিলিটারির হাতে, পুলিশের হাতে হারিয়ে যায় কত শত বাঙাল, আমরা এখনও কাঙাল; মুক্তিকামী রুমিরা এখনও পথ খোঁজে মানবমুক্তির।” – ডিসেম্বরের গল্প ৪.”কোথায় অরণ্য? অরণ্য ঢুকেছে এখন মানুষের বিবরে; এই বুনো পৃথিবীতে চাইবার নেই এ্যাইটুকু ঠাঁই! রক্তাক্ত ফিলিস্তিন, আফগান, ইরাক, সিরিয়া, আরাকান যেদিকে তাকাই শুধু ক্লান্ত হই, ক্লান্ত হই, দুচোখ ফিরালেই দেখি কোথাও মানুষ নাই……” – অরণ্য ঢুকেছে মানুষের বিবরে ৫.”রাতগুলো যুবতী হলে আমাদের সুখদ পুরুষ পৃথিবী নিদ্রাহীনতায় ভোগে; বালখিল্যের সন্ধ্যা গড়িয়ে গড়িয়ে রাঙা মেঘকে ডাকে চুম্বনের তৃষায়;” – হিসেব ৬.”যে আমাকে ভালোবেসে সমস্ত দিয়েছে ঢেলে তারে আমি ভাড়ায়েছি আলস্যের কৌশলে।” – দোহাগুচ্ছ ৭. “মৃত্যু আমাকে নিয়ে যায় ঘুমে অনেক রাত্রি শেষে; মৃত্যু অধিক জিঘাংসার ক্ষুধা, একটু একটু এসে; আমাকে লোভাতুর করে ভাসাতে ভাসাতে, মৃত্যুর অধিক দাম্ভিক হতে উচ্ছ্বাসে-উল্লাসে। – মৃত্যু ৮. আমি নি:শেষ হবো তবু তাদের ছুঁড়ে দেয়া বল্লম পুঁতে দেবো নাক্ষত্রিক আকাশে; ওরা সীমার হলে আমিতো হোসাইন- -কারবালা ৯.জীবন ঘষে জেনেছি একা থাকা হারাম; পিঠ চায় সঙ্গ সুখ বুক চায় আরাম। – চৌপদী : ৫ ১০. ” আমি রৌদ্র দাবানো ছেলে – এ শহরের বাদামি কাক; শৈশব থেকে সাইনাস শৈশব থেকে সানগ্লাস। -চৌপদী: ৪ এ কাব্যের ফ্ল্যাপ থেকে জানা যায় প্রকাশের অপেক্ষায় আছে তার প্রবন্ধ গ্রন্থ “বাংলাদেশের কবিতা : মুক্তপাঠ”, এবং গবেষণাগ্রন্থ “মুহাম্মদ আবদুল হাই এর ভাষাচিন্তা”। সম্পাদনা করছেন লিটলম্যাগ “পুবাকাশ” (২০০৫) থেকে। বাংলাভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সহ স্নাতকোত্তর (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়); কবির ধ্যানজ্ঞান সাহিত্য নিয়ে। পেশাও তাই সাহিত্যে শিক্ষকতা; কবি মাঈন উদ্দিন জাহেদ কবিতার পাশাপাশি নিবন্ধ ও প্রবন্ধ লিখেন। স্বনামধন্য নানা পত্রিকা, সংকলন, লিটলম্যাগ এবং জার্নালে প্রচুর নিবন্ধ ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন সম্পাদিত বাংলাএকাডেমি বাংলা সাহিত্য কোষে ১১টি আলোচনা গ্রন্থিত হয়েছে। . “নিখিলেশ কেমন আছো” এর পরিবেশক: জ্ঞান বিতরনী, বলাকা (ঢাকা) বাতিঘর (চট্টগ্রাম) এছাড়া একুশের বই মেলা সহ অভিজাত সকল বই বিপনন কেন্দ্রে বইটি পাওয়া যাচ্ছে।পরিমিত শিল্পবোধ ও সৃষ্টিশীল পংক্তিমালায় সমৃদ্ধ কবিতাগুলো সচেতন পাঠকের দৃষ্টি কাড়বে। ৬৪পৃষ্ঠার ১০০গ্রাম অফসেটে ছাপানো দৃষ্টিনন্দন বইটির মূল্য রাখা হয়েছে মাত্র ১৫০টাকা। আশা করি এটি পাঠকের হৃদয় জুড়ে স্থান করে নেবে।
কবি মৈথিলী ও আনমনা কাচ
দিন বদলের সঙ্গী হোল কে বা কারা
সাগরপারে বন্দী হলো, কোথায় তারা?
সঙ্গোপনে শূণ্য চূড়ায়
মুখ লুকালো প্রথম বিষাদ
ফুল ধরেছে পাতার বুকে
হাতে হাতে অনেকটা ফাঁদ।
সম্প্রতী কবি ও গায়ক হাসান মাহমুদ প্রতিষ্ঠিত স্বপ্নকুঁঢ়ি নামক সংগঠনের ৩০ বছরপূর্তি উৎসবে কলকাতার তিনজন অতিথি অংশ নিয়েছিলেন। তাদেরই একজন কবি ও গায়ক মৈথিলী নিজ দেশে ফিরে যাবার আগমূহুর্তে তার কবিতার বই আনমনা কাচটি তুলে দিলেন আমার হাতে। ব্যস্ততায় বইটি পড়ে দেখার সুযোগ পাচ্ছিলাম না, এদিকে একুশের বইমেলায় বন্ধু সাখাওয়াত হোসেন সুজনের প্রথম গল্পের বই যদি কখনো ভালোবাসো এসেছে। ওর অনুরোধ আমি যেন ওর বইটি নিয়েও দু কলম লিখি।
গত দুদিন হঠাৎ ঠাণ্ডা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিছানা নিতে বাধ্য হলাম। আর এ সুযোগে প্রথমেই হাতে তুলে নিলাম মৈথিলী’র কবিতার
বইটি। মোট ৫৮টি কবিতা নিয়ে ৭২ পৃষ্ঠার এ বইটি তন্নতন্ন করে খুঁজেও বইয়ের মূল যে নাম আনমনা কাচ, এ নামের কোনো কবিতা পাওয়া গেলনা।
বিকেলের ঝরা সূর্য মেলেছে অমানিশা
চন্দ্রকণার নকশি কাঁথায় কালো মেয়ে
তারায় তারায় পৃথিবী উতল মায়াবিনী
পাখপাখালীর এলোমেলো ডানা ঘুমন্ত।।
নকশি কাঁথা মৈথিলীর কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা, এরপর মনকাড়ে “ একটু অবাধ্য হওয়া যায়/ অভিমান গভীর হলে “ জলপ্রপাত, গর্ভকন্যা, সন্যাসী শিরোনামের কাব্যগুলো চিন্তিত করে পাঠক মন।
ও আমায় নিয়ে চলে গেল নিঃশব্দে
কেউ কিছুই বলল না।
ওরা বলল, বলতে নেই,
ওসব মর্জিমাফিক হয়ে থাকে…
অবশেষে লুকোচুরি নামের এ কবিতাটি দিয়ে শেষ হয় মৈথিলীর আনমনা কাচ। পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী‘র মেয়ে মৈথিলীর প্রথম কাব্যগ্রন্থ কিছু স্বপ্ন। পেয়েছেন যাজন সাহিত্য পুরুস্কার। গানই তার প্রাণ তাই কবিতাকে লিরিকে পরিণত করাটাই তার খেলা। এ বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শুভেন্দু সরকার, প্রকাশক কলিকাতা লেটার প্রেস।
যদি কখনো ভালোবাসো
মোট ১০টি গল্প নিয়ে সাখাওয়াত হোসেন সুজনের প্রথম গল্প গ্রন্থ যদি কখনো ভালোবাসো হাতে নিতেই একটা বিস্ময় কাজ করলো মনে। বইটির উৎসর্গ জহির রায়হান দেখে। মাধুরীলতা গল্পটি পড়ে কিছুটা বিরক্তি এল মনে, পরক্ষণে গাজী পরিবারের ইতিবৃত্ত পড়ে বুঝতে পারলাম এ লেখকের লেখনী গুরু আসলেই জহির রায়হান। সাংবাদিকতার ধাঁচে গড়া গল্পগুলোর প্রচণ্ড টান অনুভব করলাম বিস্তারিত আসছে, পেত্নী ও যদি কখনো ভালোবাসো গল্পগুলো পড়ে।
গল্পের আলোচনা করা যায কি? আসলে যায় না। গল্প নিয়েই হয়তো গল্প করা যায়, গল্পের ছলে তুলে ধরা যায় বাসতবতার ভয়াবহ কোনো ঘটনাকে, কিম্বা লেখকের চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো যায় গল্পের আশ্রয়ে।
এখানেও গাজী পরিবারের ইতিবৃত্ত বা বিস্তারিত আসছে… গল্পে লেখক তার সাংবাদিক চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন, ভালোবাসার বিষয়ের তার চিন্তাকে প্রকাশ করেছেন সুকৌশলে।
শিল্পৈষী, কাটাবন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত ৬৪ পৃষ্ঠার এ বইটির প্রচ্ছদ করেছেন আরিফুল হাসান।
এ বইয়ের অন্যান্য আরো যে গল্প রয়েছে কলঙ্কের দাগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত কবি, চুমু, বাসর বিড়ম্বনা ও বিয়ের ছুটি, প্রতিটি গল্পেই পাঠক নিজেকেই খুঁজে পাবেন চরিত্রের মিশ্রণে।
অনন্য অভিজ্ঞতা এই ব্লগে এসে অর্জন করলাম ॥
55 thousand Greek, 30 thousand Armenian
Preserved about 300 thousand.
collection of poems composed
number of surviving European
among them acquired “Moral
among them acquired “Moral
new texts were rewritten
consists of the book itself
new texts were rewritten
Century to a kind of destruction:
(palimpsests). In the XIII-XV centuries in
Europe, and in Ancient Russia