দূরত্ব মানে মাইল বা কিলোমিটার নয়
যখন কেউ ভালবাসে প্রভুভক্ত কুকুরের মতো ঘুরঘুর করি
যখন ঘৃণা করে কেউ ‘ জলের মতো ঘুরে ঘুরে’ নাচি তার আশেপাশে
ঘৃণাকে ভালবাসা থেকে আলাদা করতে পারি না
মনে মনে ভাবি দূরত্ব মানে মাইল বা কিলোমিটার নয়
.
……………………………
.সরকার আমিন
৯-২-১৬
ওরা কোনো কোনো কবিতা ঠাস করে চড় মারে
……………………………………………………………………………..
আগরতলা শাসন করেন শ্রী মানিক সরকার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে; কিন্ত আগরতলার কবিতায় একজন শাসনকর্তার বদলে বেশ কয়েকজন শাসনকর্তা আছেন। সৌভাগ্যবশত কবিতার রাজপুত্রগণ আমার প্রাণের বন্ধু। আগরতলা আমার দ্বিতীয় জন্মভূমি। দি সেকেন্ড হোম। কবি অশোক দেব; কবিতার শাসনকর্তাদের মধ্যে সবচে বিপদজনক প্রতিভাবান। কারণ অশোক নিত্যনতুন চমক তৈরি করে পথ চলে। ওর পাইক-পেয়াদার প্রয়োজন পড়ে না। ব্যক্তিগত আচরণে হঠকারী অশোক কে মনে হতে পারে চরম আলাভোলা, আনপ্রেডিকটেবল; কিন্ত ওর গভীরে গিয়ে দেখেছি অশোকের মতো সংহত মানুষ কমই আছে।
.
২০০৮ এর দিকে সম্ভবত আমি প্রথম আগরতলা যাই। প্রবুদ্ধ, প্রদীপ, আকবর, অশোক চক্রের সাথে তখনই ভালো পরিচয়। প্রথম সাক্ষাতকালে অশোক হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করার সময় আমার সাথে প্রথম নাটকীয় সংলাপটি প্রক্ষেপন করে; “ আমার নাম সরকার আমিন, বলে সে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। আমি স্মার্ট হলে প্রতি-উত্তর করতে পারতাম, হ, তাইলে আমার নাম অশোক দেব। কিন্ত আমি মোহিত হয়ে স্তব্ধ রইলাম অশোকের অপূর্ব কথোপকথন ভঙ্গিমায়।
কথা বলার একটা ড্রামা আছে ওর ; যেটা সম্ভবত তার পিতৃসূত্রে পাওয়া।
অশোকের কবিতা অন্যরকম। চিন্তা ও শব্দের দারুন খেলা আছে তাতে। ওর কোনো কোনো কবিতা ঠাস করে চড় মারে। কোন কোন কবিতা সহজাত স্বীকারোক্তি গুণে আদরণীয়। অদ্ভুত!
আমার বন্ধু কবি অশোক দেবের আজ জন্মদিন। বন্ধুগণ অশোকের জন্য দোয়া কইরেন। আমি তো ঢাকা থেকে অশোকের জন্য ব্যাপক দোয়া করতেছি কারণ নরক-গোলজার করার জন্য আরো অনেক দিন আমাদের বাঁচতে হবে।
নমুনা হিসাবে অশোকের একখানি কবিতা পেশ করছি——–
.
সিজনাল
.অশোক দেব
একটি পরিত্যক্ত রক্তকূপের প্রজা হলাম আমরা, আমাদের বংশের প্রতিটি পুরুষ। বাতাসে বসন্তভাব ফুটতে শুরু করলেই আমরা,অভিশপ্ত প্রতিটি পুরুষ কেমন হয়ে যাই। কেউ গাছে উঠে গিয়ে বাঁশের বাঁশি বাজায়। কেউ অকারণ রেগে থাকে। কার ওপর রাগ না জেনে রাগ করে থাকে। কেউ নিরন্তর কথা বলে। যে স্বপ্ন সে দেখেনি, সেটিকে দেখেছে বলে বর্ণনা করে। এমনকি বাস্তবেই সেরকম ঘটেছে বলে বন্ধুদের শোনাতে থাকে। কেউ পাথরের মত নীরব হয়ে যায়।
ছোটবেলা থেকে এসব দেখে এসেছি, আর ভেবেছি নিজেকে বাঁচাতে হবে। তাই কতভাবে যে নিজেকে পুলক কিনতে পাঠাই। পাওয়া যায় না, খালি হাতে নিজের কাছে ফিরে আসে ভারাক্রান্ত আরেকটা অশোক। কে যে আমাদের ডিএনএ-র সিঁড়ি দিয়ে সেই রক্তকূপে ফেলে গিয়েছিল, কোন সে পূর্বপুরুষ, কেউ জানে না।
আজ থেকে শুরু হয়ে গেল ওলথা-আর -ফাইভ।
—সরকার আমিন
১০-২-১৬
রনজু রাইম এর কবিতা
নগরে নগরে দেখি স্বপ্নবাজ কত ফেরিঅলা।
তারা কি কবিতা বোঝে নাকি বোঝে শুধুই কপিলা।
তোমাকে টানছে দেখ পুরানের বংশীবাদক।
কুবের কপিলা এল হোসেনের কথায় মাদক।
মিডিয়া পাড়ায় দেখ কত কত হোসেনের মেলা।
তোমাকে নিয়েই তারা খেলবে যে কানামাছি খেলা।
মানিক বাবুরে ডাকি হোসেনের পরিচয় দাও।
কুবের আড়াল হলে ফাঁদে কি পড়েনি কপিলাও।
[আমার ’দেবতাগণ’ কাব্যের ‘হোসেন মিঞা’ শিরোনামের কবিতা]
দুই
প্রচারে প্রসার বটে এই বাক্য সকলের জানা
প্রচারপটুরা তাই চায় ষোলোতে আঠারো আনা
ষোলোতে ষোলোই ঠিক দু-আনা ফের দেবে কে তোমায়
বাহুল্য চাইছ বলে নেমেছ প্রচারভিক্ষায়
মিডিয়া দেবতা জ্ঞানে কর তুমি যত তোষামোদ
সকলি আগাম পাবে মহাকাল এতোই নির্বোধ..
[আমার ‘দেবতাগণ’ কাব্যের ‘প্রচারভিক্ষুক’ শিরোনামের কবিতা।]
প্রসঙ্গ গুলতেকিন : রঞ্জনা বিশ্বাস
বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ করছি গুলতেকিন কে নিয়ে নানা রকম নেতিবাচক কথাবার্তা হচ্ছে। যারা এসব বলছেন তাদের সবার জন্য বলতে চাই সমস্যাটি ঠিক কোথায়? গুলতেকিন লিখছে বলে নাকি বেশি বয়সে লিখছে বলে নাকি সাংবাদিকরা ভিড় করছে বলে নাকি নারী বলে?
যে কেউ যে কোন সময় লিখতে পারে, যে কোন বয়সে লিখতে পারে। বেশি বয়সে লেখা শুরু করে নোবেল পাওয়ার ঘটনা বিরল নয়। তাহলে??
গুলতেকিন হুমায়ূন আহমেদ এর স্ত্রী ছিলেন এ পরিচয়টির চেয়ে অনক বেশি গুরুত্বপূর্ণ তঁার পিতার পরিচয়। প্রফেসর ইব্রাহীম খাঁ র পরিবারের মেয়ে হিসাবে তাঁর অভিজ্ঞতার যে মূল্য রয়েছে তা পাগলেও স্বীকার করবে আর তার পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে মিডিয়া তার কাছে যাবে এটাই স্বাভাবিক।
লেখকরা সমাজ বদলের মানুষ। তাদের মানসিকতা এত ছোট কি করে হয় ভেবে পাই না। এত মানসিক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে একজন মা, (হ্যা আমার মায়ের বয়সী তো,) এ বয়সে ডিপ্রেশন এ যাতে না ভোগেন তার জন্য লেখালেখি খুব কাজের। কোথায় আমরা তাকে এপ্রেসিয়েট করব তা না…। আর হ্যা মনে রাখবেন পাঠকরা ঘাস চিবোয় না। আমরা জানি সেই সব লেখকই আঁতকে ওঠে যাদের যোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে। অতএব ভাবনার পরিধি বাড়ান কাজ করুন,শুদ্ধচিন্তার চর্চা করুন,সুস্থ থাকুন।
একুশে পদক ২০১৬’এর জন্য তালিকা চূড়ান্ত করেছে জাতীয় পুরস্কারসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এবার ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, গবেষণা, ভাষা ও সাহিত্য এবং শিল্পকলায় গৌরবোজ্জ্বল ও প্রশংসনীয় অবদান রাখায় মোট ১৬ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এই সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
সোমবার (০৮ফেব্রুয়ারি) এই তালিকা অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কমিটি শাখার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এবারের একুশে পদকের জন্য চূড়ান্ত তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তারা হলেন: ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য চারজন- বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, ডা. সাইদ হায়দার, সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া (মরণোত্তর) এবং ড. জসীম উদ্দিন আহমেদ।
শিল্পকলায় অবদানের জন্য্ পাচঁজন- টিভি ও চলচ্চিত্রে জাহানারা আহমেদ, শাস্ত্রীয় সংগীতে পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী, সংগীতে শাহীন সামাদ, নৃত্যে আমানুল হক, চিত্রকলায় কাজী আনোয়ার হোসেন (মরণোত্তর)।
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য মফিদুল হক, সাংবাদিকতায় তোয়াব খান, গবেষণায় অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ ও মংছেন চীং মংছিন।
এ ছাড়া ভাষা ও সাহিত্যে আছেন তিনজন- জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, অধ্যাপক ড. হায়াৎ মামুদ ও হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
একুশে পরস্কারের জন্য ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, নগদ এক লাখ টাকা ও সম্মাননাপত্র দেয়া হয়ে আসছে। তবে এবার নগদ টাকার অঙ্কটা বাড়িয়ে দুই লাখ করার সুপারিশ করেছে মন্ত্রীসভা। (BDTIMES365.com থেকে)
৮ বছর পর
আবু হাসান শাহরিয়ারের কবিতার বই এলো মেলাতে (সবটাই লেখকের জবানীতে)
কথা রেখেছেন ‘প্লাটফর্ম’-এর কাণ্ডারি হেলাল উদ্দিন হৃদয়। বলেছিলেন, “৯ ফেব্রুয়ায়ির মধ্যে মেলায় আপনার বই আনব।” দুদিন হাতে থাকতে, আজ ৭ ফেব্রুয়ারি সকালেই, আমার বাসায় কয়েক কপি ‘কিছু দৃশ্য অকারণে প্রিয়’ নিয়ে হাজির। জানালেন, বইমেলায়ও আজ থেকে বইটি পাওয়া যাবে (স্টল নম্বর: ৪৯২, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং বয়রাতলার ছোটকাগজ চত্বরে প্লাটফর্মের স্টলে)।
৮ বছর পর নতুন কবিতার বই। নিজেকে তাই নবীন কবি মনে হচ্ছে। এ আর নতুন কী? নবীনদের সঙ্গ বরাবরই আমার প্রিয়। কবিতার নতুনত্বও। বইটির প্রকাশনা-মান প্রশংসার দাবি রাখে। কবিতার মান সম্পর্কে বলার অধিকার আমার নেই। পাঠক বলতে পারবেন।
বইমেলা সম্পর্কে কবি বলেন : বইমেলায় আমি তরুণদের বই খুঁজি। আমার প্রিয় লেখকদের সবাই তরুণ। চিরতরুণ। চিন্তার তারুণ্যে তরুণ তারা। এই তারুণ্যের কারণে জীবনানন্দ দাশ, শামসুর রাহমান, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়, হুমায়ুন আজাদ প্রমুখ প্রয়াতরাও আমার কাছে তরুণ। বিপরীতে, অনেক কমবয়সী জীবিত অকালবৃদ্ধ কবি-লেখক আছে। সংখ্যায় তারাই বেশি। তাদের বয়সের বা শরীরের তারুণ্যকে আমি আমলে নিই না। কেননা, বইমেলায় আমি লেখক খুঁজি; চরদখলের লাঠিয়াল নয়। তবে, যুগপৎ বয়সে ও চিন্তায় তরুণ লেখকদের বইকে আমি অগ্রাধিকার দিই। লেখকের তারুণ্য বয়সে নয়;– চিন্তার নতুনত্বে।
মুজিব মেহদীর নতুন কোনো বই বেরোচ্ছে না এবার
শব্দের হাসিকান্না যে শুনতে পায় না
সে কখনো কবি হয় না
কিম্বা
বাংলা বর্ণের গায়ে রক্ত লেগে আছে
এ কারণে আমাদের শব্দের রং লাল
বাংলা কবিতার কোনো সাদাকালো ভার্সন হয় না
তবে আগ্রহীরা আগে প্রকাশিত তাঁর কিছু বই, যেমন ‘চিরপুষ্প একাকী ফুটেছে’ (কবিতা, অ্যাডর্ন), ‘জঙ্গলের নিজস্ব শব্দাবলি’ (কবিতা, ঐতিহ্য), ‘ত্রিভুজাসম্ভাষ’ (হাইকু-বাইকু-সেনরু, শুদ্ধস্বর), ‘খড়বিচালির দুর্গ’ (উভলিঙ্গ রচনা, ঐতিহ্য), ‘সটোরি লাভের গল্প’ (জেনগল্পের বাংলা রূপান্তর, পাঠসূত্র), ‘মুক্তিযুদ্ধ ও নারী’ (যৌথভাবে অনুসন্ধান, ঐতিহ্য) বাংলা একাডেমির একুশে গ্রন্থমেলা থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। যাঁরা পড়েন নি, তাঁদের কাছে তো এ বইগুলো নতুনই, তাই না?
পীর হাবিবের ‘লজ্জাবতী’
প্রচ্ছদটি অনেক যাচাই বাছাই চলেছে ফেসবুক জুড়ে। অবশেষে’ লজ্জাবতী’আজ (মঙ্গলবার ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৬) বিকেলে একুশের বই মেলায় যাচ্ছে। অন্যপ্রকাশের ষ্টলে পাঠকরা তাকে নেড়েচেড়ে, উল্টেপাল্টে দেখতে পাবেন।মন চাইলে লাজ্জাবতী তাদের হাত ধরে যেতে চায়।পাঠকের রাতের ঘুম, দিনের অবসর কেড়ে নিয়ে দিতে চায় শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনা ও সূখ।তৃষ্ঞা নিবারন করতে চায়,কৌতুহল ও নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে চায়।পাঠক চাইলেই চিত হয়ে শুয়ে শুয়ে বুকে নিয়ে লজ্জাবতীকে মেলে ধরতে পারেন।