ভগবান গৌতম বুদ্ধের নাম নিয়ে আমিও নেমেছি মাঠে।
যদি সরাসরি ভোটে হয়, হবে। আমি সরাসরি হবো।
যদি পার্লামেন্টারি তবেই বিপদ, আহা কী করে উৎরাবো
তব ভবতরী, প্রভু, আমি যে একেলা।
হা কৃষ্ণ করুণা সিন্ধু, হে আমার ভক্তবৃন্দ,
প্রিয় দেশবাসী, ভাই-বন্ধুজন,
তোমরাই আমার সকল ক্ষমতার উৎস, এ-কথা বলি না।
আমিও উৎসের মুখ খুলে দিতে চাই তোমাদের দিকে।
ভালোবেসে আমাকে গ্রহণ করো, সুখী হবে।
কবি নজরুল পরাজিত হলে ক্ষতি কার?
বড় হলে ভোট দেবো-একদিন ট্রেনে যেতে একটি কিশোর
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আজ সে ভোগের যোগ্য।
‘তুমি ভালো আছো খোকা? তুমি বেঁচে আছো, ভাই?’
১৯৭৫-এ আমি হারিয়েছি আমার প্রতীক, শোর্যবীর্যধারা, অন্ধকারে।
তারপর থেকে ভিতরে ভিতরে একা, গৃহহারা, স্বপ্নহীন ক্ষোভে
বসে থেকে-থেকে, ঘুমে-ঘুমে, আত্মগোপনে গোপনে ক্লান্ত।
একটা কিছুকে উপলক্ষ্য করে আবার দাঁড়াতে চাই;
বাংলার মাটি বাংলার জল আমাকে কি নেবে?
হয়তো নেবে না।
ভোট-গণনার পালা শেষ হলে আরো এক অন্ধকার এসে
আমার ভোটের বাক্সে ড্রপ করে দিয়ে যাবে, ভোট নয়,
আমার বিরুদ্ধে লেখা চির-পুরাতন কিছু প্রশ্ন।
বাজেয়াপ্ত হবে জামানত।
তুমি কতটুকু? কতো দূরে যেতে চাও বাপু? এতো স্পর্ধা?’
আমি তো চাইনি যেতে এত দূরে, ক্ষমতার আকাশ শিখরে কোনদিন।
‘সাম্রাজ্য শাসনে নাহি লোভ’–এই বলে বারবার সাজিয়েছি কল্পবিশ্ব
অন্তর্লোকে, আমার পিতার মতো অপরাধবোধে, নিরিবিলি, একা।
অবিবেকী পরিপার্শ্ব আমাকে জাগিয়ে দিলো ঘুম থেকে অকস্মাৎ,
শরবিদ্ধ আহত সিংহের ক্ষোভ উঠিল জাগিয়া প্রাণ ভরে।
সেই সাম্প্রদায়িকতা,
সেই অন্ধকার,
সেই ঘৃণা,
সেই অপমান,
সেই শোষকের সৃষ্ট বিভাজন মানুষে-মানুষে, ধর্মে।
গুরুকে লেলিয়ে দিয়ে লঘিষ্ঠের অনিষ্ট সাধনে মত্ত,
যারা ক্ষমতায় বসে থাকে রাজদল্ড হাতে,
হীনস্বার্থ চরিতার্থতায় অসাম্য বিভেদ রচে প্রজাদের মাঝে;
তুমি কি তাদের করিয়াছো ক্ষমা? তুমি কি বেসেছো ভালো?
আমার ধর্ম নিয়ে কোনোদিন প্রশ্ন করো না,
যদি চাও একটি ফুলের নামে, দোয়েল পাখির নামে,
পদ্মা-মেঘনা-যমুনা-কংশ-গড়াই-মধুমতী-শীতলক্ষ্যা-মাতামুহুরী
ও ব্রহ্মপুত্রের নামে, বঙ্গবন্ধুর নামে, গারো পাহাড়ের উদ্দাম বুনো
বাতাসের নামে, রবীন্দ্রনাথের নামে রাজদণ্ড হাতে নেবো।
যদি ভোট দাও, তোমাদের দুঃখ হবো, সচ্ছলতা হবো,
ধর্মনিরপেক্ষতা হবো;- হবো ভাটিয়ালি, মুহররম,
ঈদ, দুর্গাপূজা, বৌদ্ধপূর্ণিমা, ক্রিসমাস, আর আমার ভাইয়ের
রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি।