এই শীতেও যখন
দাউ দাউ আগুন
জ্বলছে বাস-ট্রেন
আর চলন্ত যান
পেট্রোলবোমায়
পুড়ে হলো ছাই
অবলা নারী, নিরিহ পুরুষ আর
নিষ্পাপ শিশুটিও পেলনা রেহাই।
তখন আর কবিতা আসেনা
কণ্ঠ চিরে উচ্চারিত হয়
একটি মাত্র বাক্য – তুই বেজন্মার বাচ্চা
বলেই হয়তো এভাবে
বোমা আগুন ছুড়তে পারলি
ঘুমন্ত মানুষের দেহে।
ধিক তোর জন্মের প্রতি
শুধু তুই না তোর পূর্ব পুরুষেরাও সব বেজন্মা।
সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের উঠোনে বসে-ই কবিতাটি লিখলাম । নাম দিলাম – তুই বেজন্মা। ইচ্ছে ছিল ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ শনিবার বিকালে গণ মাধ্যম সংস্থা ঘাসফুল আয়োজিত শিশিরে কবিতার স্পন্দন শিরোনামের কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে এটি-ই পড়বো। কিন্তু দেশ বরেণ্য কবিদের পদচারণায় মুখরিত ঘাসফুলের এই আয়োজনে যখন কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী, নাসির আহমেদ, আলমগীর রেজা চৌধুরী, আনোয়ারা সৈয়দ হক, রেজাউদ্দিন স্টালিন, চঞ্চল আশরাফ প্রমূখরা কবিতা পড়লেন, তখন আমার আর এতোটা সাহস আর হলোনা তাদের সামনে কবিতা পড়ার।
তবে ভালো লাগলো এটা দেখে যে, প্রায় সব কবির কবিতাতেই শিশিরে ভেজা কবিতাগুলো কখন যেন আগুনের উপর পানি ঢালতে শুরু করেছে। কবির অজ্ঞাতেই তার কবিতা এই মূহুর্তের রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। সভাপতি মাহবুব তালুকদার যেন সেটাই ছড়িয়ে দিলেন উপস্তিত কবিকুলে।
কবি আসলাম সানি, মারুফ রায়হান, মাশুক চৌধুরী, জুনান নিশাত, পারভিন আক্তার প্রমূখ কবির কবিতায় তাই আগুন ঝড়লো চলমান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। স্বাগত বক্তব্যে ঘাসফুলের পরিচালক কথাসাহিত্যিক আতা সরকার লুকানো সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আহ্বান জানালেন বলেই হয়তো কবিরা প্রতিবাদী শিশির ঝরালেন আগুনের নির্লজ্জতায়। শীতের পিঠা আর লুচি ভাজি খেতে খেতে সোনালী সন্ধ্যার এই কবিতা পাঠ চলেছে রাত আটটা পর্যন্ত। ঘাসফুল প্রতি মাসেই এ রকম ব্যতিক্রমী আয়োজনের মাধ্যমে দৃষ্টি কাঁড়ছে রাজধানীর সাহিত্যমোদিদের। আতা সরকার জানালেন, না শুধু রাজধানীতেই নয়, সাহিত্য সংস্কৃতি নিয়ে সারা দেশে কাজ করতে আগ্রহী ঘাসফুল। রাজধানী জুড়ে গত ৪ বছরে যে আয়োজন চলেছে তা সূচনা মাত্র।