কলকাতায় প্রাঙ্গণেমোর-এর রক্তকরবী, বেঙ্গলের প্রাণের খেলা ও অন্যান্য সংবাদ

সাবা প্রতিবেদক

Sharing is caring!

Raktokarobi (3)গত ১ আগস্ট ‘রক্তকরবী’ নাটকের মঞ্চায়ন ছিল কলকাতার একাডেমী অফ ফাইন আর্টস মিলনায়তনে। কলকাতার বিখ্যাত নাট্যদল পূর্ব-পশ্চিম আয়োজিত এক নাট্যোৎসবে আমন্ত্রিত হয়ে প্রাঙ্গণেমোর ‘রক্তকরবী’ নাটক নিয়ে তাই গত ৩১ জুলাই ভারত যাত্রা করে। এর আগে ২৬ জুলাই সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে প্রাঙ্গণেমোর-এর ‘রক্তকরবী’ নাটকটির পরীক্ষামূলক মঞ্চায়ন হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত এ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন নূনা আফরোজ।
নাটকটিতে অভিনয় করেছেন নূনা আফরোজ, অনন্ত হিরা, রামিজ রাজু, আউয়াল রেজা, শিশির রহমান, পলাশ, জসিম, সরোয়ার সৈকত, সাগর, রিগ্যান, সুমী, শুভেচ্ছা, মনির, শুভ, সুজয়, চৈতী, সোহাগ।

রক্তকরবীর নাট্য পরিচয়:
ঘটনাস্থানটির প্রকৃত নামটি কী সে সম্বন্ধে ভৌগলিকদের মতভেদ থাকা সম্ভব। কিন্তু সকলেই জানেন, এর ডাকনাম যপুরী। প-িতরা বলেন, পৌরাণিক যপুরীতে ধনদেবতা কুবেরের স্বর্ণসিংহাসন। কিন্তু এ নাটকটি একেবারেই পৌরাণিক কালের নয়, একে রূপকও বলা যায় না। যে জায়গাটার কথা হচ্ছে সেখানে মাটির নীচে যরে ধন পোঁতা আছে। তাই সন্ধান পেয়ে পাতালে সুড়ঙ্গ-খোদাই চলছে, এইজন্যেই লোকে আদর ক’রে একে যপুরী নাম দিয়েছে। এই নাটকে এখানকার সুড়ঙ্গ-খোদাইকরদের সঙ্গে যথাকালে আমাদের পরিচয় হবে।
যপুরীর রাজার প্রকৃত নাম সম্বন্ধে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতের ঐক্য কেউ প্রত্যাশা করে না। এইটুকু জানি যে, এঁর একটি ডাকনাম আছেÑ মকররাজ। যথাসময়ে লোকমুখে এই নামকরণের কারণ বোঝা যাবে।
রাজমহলের বাহির-দেয়ালে একটি জালের জানলা আছে। সেই জালের আড়াল থেকে মকররাজ তাঁর ইচ্ছামত পরিমাণে মানুষের সঙ্গে দেখাশোনা করে থাকেন। কেন তাঁর এমনতরো অদ্ভুত ব্যবহার তা নিয়ে নাটকের পাত্রগণ যেটুকু আলাপ-আলোচনা করেছেন তার বেশি আমরা কিছু জানি নে। এই রাজ্যের যাঁরা সর্দার তাঁরা যোগ্য লোক এবং যাকে বলে বহুদর্শী। রাজার তাঁরা অন্তরঙ্গ পার্ষদ। তাঁদের সতর্ক ব্যবস্থাগুণে খোদাইকরদের কাজের মধ্যে ফাঁক পড়তে পায় না এবং যপুরীর নিরন্তর উন্নতি হতে থাকে। এখানকার মোড়লরা এক সময়ে খোদাইকর ছিল, নিজগুণে তাদের পদবৃদ্ধি এবং উপাধি-লাভ ঘটেছে। কর্মনিষ্ঠতায় তারা অনেক বিষয়ে সর্দারদের ছাড়িয়ে যায়। যপুরীর বিধিবিধানকে যদি কবির ভাষায় পূর্ণচন্দ্র বলা যায় তবে তার কলঙ্ক- বিভাগের ভারটাই প্রধানত মোড়লদের ’পরে।
জেলেদের জালে দৈবাৎ মাঝে মাঝে অখাদ্য জাতের জলচর জীব আটকা পড়ে। তাদের দ্বারা পেট-ভরা বা ট্যাঁক-ভরার কাজ তো হয়ই না, মাঝের থেকে তারা জাল ছিঁড়ে দিয়ে যায়। এই নাট্যের ঘটনাজালের মধ্যে নন্দিনী নামক একটি কন্যা তেমনিভাবে এসে পড়েছে। মকররাজ যে বেড়ার আড়ালে থাকেন সেইটেকে এই মেয়ে টিঁকতে দেয় না বুঝি।

বেঙ্গল শিল্পালয়ে ‘প্রাণের খেলা’ শীর্ষক রবীন্দ্রনাথের গান

bengol-2মানবমনের জীবন-উপলব্ধির েেত্র রবীন্দ্রনাথের গান জীবন-বোধের নানা সূক্ষ্ম সংবেদনশীল উপলব্ধি শ্রোতার অভিজ্ঞতার দিগন্তকে বিস্তৃত করে। তাঁর গানের চেতনাধারায় ¯œাত হয়ে অফুরান প্রাণশক্তি নিয়ে আমরা এগিয়ে চলি সম্মুখের পথে।

২৮ জুলাই(১৩ শ্রাবণ ১৪২২), মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিটে বেঙ্গল শিল্পালয়ে আয়োজিত হল নিয়মিত গানের আসর ‘প্রাণের খেলা’। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৪তম(২২ শ্রাবণ ১৪২২) প্রয়াণ দিবসের এই মাসে তাঁর রচিত গানে তাঁকে স্মরণ করে গান শোনান শিল্পী শ্রেয়সী রায় ও বুলবুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে শিল্পীদ্বয়ের পরিবেশিত গানের তালিকা:
শ্রেয়সী রায়- কত অজানারে জানাইলে তুমি, অসীম ধন তো আছে তোমার, আমি যখন ছিলেম অন্ধ, আমার যা আছে আমি সকল দিতে পারি নি, প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে মোরে আরো আরো আরো দাও প্রাণ।

bengol--1বুলবুল ইসলাম- সঘন গহন রাত্রি ঝরিছে শ্রাবণ ধারা, তিমির-অবগুন্ঠনে বদন তব ঢাকি, ছায়া ঘনাইছে বনে বনে, আমি তখন ছিলেম মগন, শ্রাবণের পবনে আকুল বিষন্ন সন্ধ্যায়, আমার প্রিয়ার ছায়া আকাশে আজ ভাসে, আজ যেমন করে গাইছে আকাশ, আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে, কাছে ছিলে দূরে গেলে-দূর হতে এসো কাছে, আমি আছি তোমার সভার দুয়ারদেশে, এ পথে আমি যে গেছি বার বার, একদিন চিনে নেবে তারে, কেটেছে একেলা বিরহের বেলা, ও চাঁদ চোখের জলের লাগল জোয়ার।
শিল্পীদের সঙ্গে যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন তবলায় এনামুল হক ওমর, কী-বোর্ডে ইফতেখার হোসেন সোহেল এবং এসরাজে অসিত বিশ্বাস। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী।

 

যাত্রাশিল্পের সংকট নিরসনে শিল্পকলার ডিজিকে স্বারকলীপি 

jatra-1আবহমান  বাংলাসংস্কৃতির  ঐতিহ্যবহ  যাত্রাশিল্পের  চলমান  সমস্যা-সংকট  নিরসনেবাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকীকে স্বারকলীপি দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদ। গত ২২ জুন বুধবার সন্ধ্যায় তার কার্যালয়ে পরিষদের নবনির্বাচিত কমিটির ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাতের মধ্যদিয়ে ৮ দফা দাবিতে এই স্বারকলীপি প্রদান করে।  দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- জাতীয়যাত্রামঞ্চ প্রতিষ্ঠা, প্রতিটি বিভাগী শহরে স্থায়ী যাত্রামঞ্চ নির্মাণ, সিনেমা হলেরন্যায়  বিভিন্নস্থানে  যাত্রামঞ্চ  নির্মাণের  জন্য  ঋণপ্রদান  বা  আর্থিক  অনুদানেরমাধ্যমে  বেসরকারী  উদ্যোগকে  উৎসাহিত  করা,  যাত্রারনামে  অশ্লীলতা  প্রতিরোধেভ্রাম্যমাণ  নৈশ  আদালত  গঠন,  শিল্পকলার  উদ্যোগে  প্রতিবছর  জাতীয়  যাত্রাউৎসবেরআয়োজন,  শিল্পকলা  একাডেমীতে  পৃথক  যাত্রাবিভাগ  চালু,  দুস্থ  যাত্রাশিল্পীদেরকোটাভিত্তিক পৃথকভাতা/অনুদান প্রদানের ব্যবস্থা, নিবন্ধিত না হওয়া দলগুলোকে চলতিবছরের মধ্যে নিবন্ধনের আওতায় আনা এবং অশ্লীলতার সঙ্গেযুক্ত দলগুলোর নিবন্ধন বাতিলকরা।  এছাড়াও  যাত্রাশিল্প  উন্নয়ন  পরিষদের  নিজস্ব  উদ্যোগে  গৃহীত  কর্মপরিকল্পনামোতাবেক  যাত্রাশিল্পের  বিলুপ্তপ্রায়  উপকরণ  সংরক্ষণ  এবং  মহড়া  ও  দুস্থ  যাত্রাশিল্পীদেরপুণর্বাসনকল্পে  ঢাকা  বা  নগরীর  পাশ্ববর্তী  এলাকায়  একটি  যাত্রাভবন  নির্মাণ,প্রতিবছর  ৩  মাস  মেয়াদী  যাত্রাকর্মশালা,  প্রতিটি  যাত্রাদলে  দেশীয়  যাত্রাপালামঞ্চায়নের  ব্যবস্থা  এবং দুস্থ  যাত্রাশিল্পীদের  জন্য কল্যাণ তহবিল  গঠনের  বিষয়ে ডিজিরঅবহিত করা হয়। এসময় ৫১ সদস্যের সদ্যগঠিত কমিটি ছাড়াও যাত্রাশিল্পের উন্নয়নে ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট স্থায়ী কমিটির তালিকা প্রদান করা হয়। একইসাথে যাত্রার  নামে অশ্লীলতা প্রতিরোধে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। প্রতিনিধি দলেছিলেন – যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি যাত্রানট মিলন কান্তি দে, সাধারণ সম্পাদকসোহেল হায়দার জসিম, যুগ্ম সম্পাদক এম এ মজিদ, কোষাদক্ষ সুদর্শন চক্রবর্তী,সাংস্কৃতিক  সম্পাদক  এম  আলীম,  দপ্তর  সম্পাদক  মোজাম্মেল  হক  এবং  নির্বাহীসদস্য আলতাফ হোসেন ।

 

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!