আজ আর বলার কিছুই নাই…
চলমান রাজনীতির এই সংকট
বাড়ছে… বাড়বে…
কার কি আসে যায় – যিদ জাতি যায় গোল্লায়।।
ক্ষমতা আমার চাই
তাতে যদি কেউ মরে
পায়ের নীচে পরে
মরুক সবাই।
ছাড় দেয়ার মত মন যে কারো নাই ?
রাষ্ট্রপতির সাথে বেগম জিয়ার আলোচনা
নির্বাচনের আগে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দল ও জোট শরিক দলগুলোর নেতাদের নিয়ে বঙ্গভবনে যান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে মতবিরোধের মধ্যেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে করেন তিনি। নির্দলীয় সরকার না হলে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা রয়েছে তার।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সেই দাবি মেনে নিতে নারাজ হওয়ায় দেশে রাজনৈতিক সঙ্কটই শুধু নয় গৃহযুদ্দের পথে দ্রুত ধাবিত হচ্ছে দেশ- এমনটাই ধারণা বিশেষজ্ঞ জনদের।
প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকের পর বেরিয়ে এসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের জানান, “সঙ্কটের মুহূর্তে রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে এসেছিলাম। তাকে আমরা অনুরোধ করেছি, এই অচলাবস্থা নিরসনে সরকারকে সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য পদক্ষেপ নিতে। রাষ্ট্রপতি আমাদের বলেছেন, তিনি তার সাংবিধানিক ক্ষমতার মধ্যে এ ব্যাপারে অবশ্যই চেষ্টা করবেন। আমাদের বক্তব্য সরকারের কাছে পৌঁছে দেবেন।”
এ বিষয়ে বঙ্গভবনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সংলাপের বিষয়ে সরকার ও বিরোধী দল দুই পক্ষকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠকের আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ দেখা করেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। বিরোধী দলের বয়কটের হুমকির প্রেক্ষাপটে দশম সংসদ নির্বাচনে সব দলকে আনতে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা চান তিনি।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে ১৮ দলের পক্ষ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব দুই পৃষ্ঠার একটি লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন, যাতে নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিই জানানো হয়।
এতে বলা হয়, “মহামান্য রাষ্ট্রপতি, আপনার কাছে আমাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ, আপনি সরকারকে বলুন, তারা যেন অবিলম্বে সংঘাত, হানাহানি ও হিংস্রতার পথ পরিহার করে সংলাপের একটি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করে।
“তারা (সরকার) যেন অবিলম্বে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একটি সমঝোতার পথে অগ্রসর হয়।”
নির্দলীয় সরকারের দাবি উপেক্ষা করে নির্বাচনকালীন ‘সর্বদলীয়’ সরকারে দায়িত্ব পালনের জন্য নতুন আট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর শপথের পর সোমবার রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চান বেগম খালেদা জিয়া।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে দল ও জোট নেতাদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন খালেদা জিয়া। এতে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আ স ম হান্নান শাহ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এ কে এম নাজির আহমদ, এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদ, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিশের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইসহাক, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, এনডিপি চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মূর্তজা, ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রতিনিধি দলে ছিলেন।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৪৯তম জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ছাত্রদল আয়োজিত আলোচনা সভায় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘দু-একটা বাস ভাঙলে হবে না। ছাত্রদলের হাজার-হাজার নেতা-কর্মীকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে।’
মির্জা ফখরুল ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিএনপির অনেক নেতা কারাগারে। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার। এ অবস্থায় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ঘরে বসে থাকতে পারে না। তাঁদের বিক্ষোভে ফেটে পড়তে হবে।
যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের সংগঠন নেই, সেখানে সংগঠন তৈরি করা এবং যেখানে আছে, সেখানে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার পরামর্শ দেন মির্জা ফখরুল। একই সঙ্গে ‘উত্তর-দক্ষিণ ভাইয়ের নামে’ স্লোগান না দিয়ে গণতন্ত্র রক্ষার স্লোগান দেওয়ার জন্য তিনি ছাত্রদলের প্রতি আহ্বান জানান।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচনপদ্ধতি আমাদের সবারই জানা। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের কারণে আমরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছি।’
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টাল ও কংগ্রেশনাল সর্বোচ্চ সম্মাননা পাওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবর্ধনায় ড. ইউনূস এসব কথা বলেন। নিউইয়র্কের লাগোর্ডিয়া কলেজে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক শওকত আলী।
ড. ইউনূস বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও দুর্নীতি দূর করতে হবে। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নতুন প্রজন্মের উজ্জীবনী শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
এদিকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, বিরোধীদলীয় নেতা যেদিন প্রতিনিধি দেবেন, সর্বদলীয় সরকার সেদিন পূর্ণ হবে। আর তিনি না এলে একে বহুদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার বলা যাবে।
আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
বিরোধী দল তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে সর্বদলীয় সরকারে প্রতিনিধি দিয়ে শপথ নিয়ে কাজে মন দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন ইনু।
নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন, কারা থাকছেন না, দু-এক দিনের মধ্যে তা জানা যাবে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ওই মন্ত্রিসভায় যাঁরা থাকবেন না, তাঁদের পদত্যাগপত্র গত পরশু রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি যেগুলো গ্রহণ করবেন, তাঁদের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের দরজা এখনো খোলা আছে বলে দাবি করেন ইনু। তিনি বলেন, ‘বিরোধী দল বলুক, তারা কোথায়-কখন সংলাপ করতে চায়। আমরা সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন চাই।’