‘বন্ধু মানে মরুভূমিতে টিউবওয়েল’
সরকার আমিন
…………………………
একটি কঠিন আড্ডার গল্প
গত সন্ধ্যা থেকে রাত এগারটা পর্যন্ত ভ্রমণবাজ লেখক শাকুর মজিদের বনানীর কার্যালয়ে আড্ডারত ছিলাম। সঙ্গে ছিল অনু হোসেন। আমি দেখেছি দুজনে আড্ডা হয়না, আড্ডার জন্য তিনজন সবচে উত্তম। এর বেশি হলে জনসভা হয়ে পড়ে, প্রাণখুলে কথা কওয়া যায় না। শাকুর ভাইকে দেখতে বেশ প্রবীণ প্রবীণ লাগে, যদিও আমিয়ো প্রবীণই, বছর দুয়েকের এদিক-ওদিক, শাকুর ভাই কলফে নাই, আমি আছি। মাথার চুল মোটামুটি আমারও সব সাদা ( পাকা নহে),তবে আড্ডায় তাকে, শাকুর ভাইকে পাওয়া যায় সপ্তম শ্রেণীর কৌতূহলে ঠাসা কথক হিসেবেই। কাবাব, পরোটা আর ভ্রমণের গল্প নিয়েই কেটে গেল চারঘণ্টা। এর মধ্যে তার বানানো কয়েকটা ডকুমেন্টারি দেখলাম। খুব পছন্দ হলো তার শিশুপুত্রকে নিয়ে বানানো তথ্যচিত্রটারে। দেখলাম তার ভিয়েতনাম ভ্রমণের তথ্যচিত্র, শাহ আবদুল করিমের ডকুমেন্টারির খণ্ডাংশ, শুনলাম শাহ করিমের দুষ্প্রাপ্য সঙ্গীত, করিমের কণ্ঠে।
আমি এখন কথা বলা বা শোনার ক্ষেত্রে চৌজি। নির্বাচিত মানুষ ছাড়া দীর্ঘ আড্ডা দিতে আগ্রহী নই। কারণ কান এবং মুখ এ জীবনে অনেক শুনেছে ও বলেছে। এখন মনের মতো কথা শুনতে বা বলতে বড়ো উচাটন। আমাদের গড়পরতা বন্ধুরা এখন কথা বলতে খুবই আগ্রহী কিন্তু শোনার সময় সমপরিমাণ উদাসীন। আমি এমন মানুষকে সযত্নে এড়িয়ে চলি।
শাকুর মজিদ বলেন কম, শোনেন বেশি। সর্বক্ষণ আড্ডায় উপস্থিত থাকেন। এ কারণে গত সন্ধ্যাটা বৃথা যায় নি। একজন হৃদয়বান, আগ্রহী, রসজ্ঞ বন্ধু মানে মরুভুমিতে টিউবওয়েল যেন। যে ‘জলে আগুন জ্বলে’।