কল্যাণ গাঙ্গুলী
বাঁচতে ইচ্ছে করে, আমার বাঁচতে ইচ্ছে করে ;
যদি কালো মেঘ ইশানের কোনে,
মাঝি পথ খোঁজে – জীবনে মরনে,
শীর্ণ গাছকে, রাখে কে স্মরনে, যদি-বা ফুলেতে ভরে ॥
আমার বাঁচতে ইচ্ছে করে, ভীষন বাঁচতে ইচ্ছে করে ॥
উবে গেল মাঠ, শ্যামলিমা পুর ;
হারিয়ে আবাদ আবাস প্রচুর,
রোজের রসদ রচিল সুদূর, আগামী দিনের তরে ॥
তবু বাঁচতে ইচ্ছে করে, ভীষন বাঁচতে ইচ্ছে করে ॥
বাঁচার লড়াই – হেরেছিল মন,
মানবিকতা যে চিতায় তখন,
ভন্ড তত্ত্বে সমতা বুঝি বা এসেছিল মরু ঝড়ে॥
তবু বাঁচতে ইচ্ছে করে, আমার বাঁচতে ইচ্ছে করে ॥
নিরন্ন শৈশব বাড়ায় যে হাত,
লেখাপড়া থাক, চাই দুটো ভাত ;
মানবিকতার জলপ্রপাত কেন না উথলি পড়ে;
তবু বাঁচতে ইচ্ছে করে, আমার বাঁচতে ইচ্ছে করে ॥
কোথা সোনা ধান দিকচক্রবাল,
হৃদয়ের পুরে মরন আকাল,
ঘন তমশার একোন সকাল এলো যে ধরনী পরে।
তবু বাঁচতে ইচ্ছে করে, আমার বাঁচতে ইচ্ছে করে ॥
ফিরিয়ে আনো মা শস্য শ্যামল ;
নব কলতানে, জন কোলাহল,
তোমার অপার স্নেহের আঁচল থাকুক মাথার পরে।
ভীষন বাঁচতে ইচ্ছে করে, মা গো বাঁচতে ইচ্ছে করে II
ঐ পানা-পুকুরের সবুজ বিছানা,
মা গো, হয়তো তোমার থাকবে অজানা,
হংস-মিথুন মানে না যে মানা, জল-ক্রীড়ার তরে II
ভীষন বাঁচতে ইচ্ছে করে, মা গো বাঁচতে ইচ্ছে করে II
যদি বা অভাবে মলিনতা ভরে ;
মা তোর আশিষে, দূরে যাবে সরে ;
মায়ের আবহে মিলিব এ ঘরে, সমাগত রাঙা ভোরে ;
ভীষন বাঁচতে ইচ্ছে করে, মা গো বাঁচতে ইচ্ছে করে II