শিশুতোষ বিনোদন ও আমাদের শিশু ভাবনা

আরিফ আহমেদ

Sharing is caring!

55সূধী পাঠক ও শ্রোতা, ক্ষমা করবেন। আমি যেহেতু জন্মসূত্রে একজন মুসলমান এবং ৯০ ভাগ মুসলিম প্রধান অঞ্চলে আমার বসবাস। তাই প্রথমেই ইসলাম ধর্মের নির্দেশনামতে একজন শিশু ও তার শিক্ষার পথগুলো তুলে ধরছি। যদিও জানি আমাদের দেশে প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়ায় ধর্মের কথা বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের উদাহরণ তুলে ধরলেই তাকে জামায়াতে ইসলাম বলে গালাগাল করা হয়। অথচ একটু যদি ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে লক্ষ্য করেন, তাহলে দেখবেন ওদের শিশুতোষ কার্টুন থেকে শুরু করে জনপ্রিয় সব নাটক, সিনেমায় সমানে দেব দেবীর আরাধনা চলছে, সেটা কোনো দুষ্ট দোষ হচ্ছেনা।

সাহিত্য বাজার পত্রিকার এক জরিপে দেখা গেছে আমাদের দেশের স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর তুলনায় ভারতীয় স্টারপ্লাস, জি বাংলা ও স্টারজলসা চ্যানেলগুলো এই বাংলাদেশের শুধু ঢাকাতেই ৮০ ভাগ মানুষের জনপ্রিয় চ্যানেল। যে কারণে ভারতীয় পরিচালকরা গর্ব করে বলতে পারেন, আজ বাংলাদেশের সরকার ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ করে দিলে, কাল বাংলাদেশের দর্শকরা রাস্তায় নেমে হরতাল করবে।

সে যাইহোক, শিশু সাহিত্যের আলোচনা করতে এসে প্রথমেই যদি ইসলাম ধর্ম এ নিয়ে কি বলেছে তা জেনে নেই তবে আমাদের আলোচনা আরো গতিশীল ও তথ্যবহুল হবে। রাসূলে কারীম (সাঃ) মানব সন্তানের বেড়ে ওঠার প্রাথমিক কালগুলোকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পর্বে ভাগ করে বলেছেন, “সন্তান তার প্রথম সাত বছরে হলো সাইয়্যেদ বা মহোদয়, দ্বিতীয় সাত বছরে হলো আনুগত্যকারী বা আদেশ মান্যকারী আর তৃতীয় সাত বছরে হলো দায়িত্বশীল। কী সুন্দর উপমা দিয়ে, পরিভাষা দিয়ে রাসূল (সাঃ) শিশুর বেড়ে ওঠার কাল এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যগুলোকে তুলে ধরেছেন। আমরা তাঁর এই পরিভাষাগুলোকে খানিকটা ব্যাখ্যা করে বলার চেষ্টা করবো।
একুশ বছর বয়স পর্যন্ত একটি সন্তানের বেড়ে ওঠার পর্বগুলোকে রাসূল (সাঃ) যেভাবে নির্দেশ করেছেন, তাকে শিশুকাল, কিশোরকাল এবং যৌবনকালের বৃত্তে ফেলা যেতে পারে। শিশুকালটিকে যদি আমরা কর্তৃত্বের অর্থে ধরে নিই, যেমনটি রাসূল বলেছেন, তাহলে তার অর্থ দাঁড়াবে, শিশু এ সময় যা খুশি তা-ই করবে। এ সাত বছর শিশু সম্পূর্ণ স্বাধীন। তার সকল কর্তৃত্ব মেনে নিতে হবে। এভাবেই শিশু সাত বছর কাটিয়ে দ্বিতীয় সাতে গিয়ে পড়বে। দ্বিতীয় সাত মানে হলো আনুগত্য বা আদেশ পালন করার পর্ব। অর্থাৎ এই পর্বে শিশুকে আর স্বাধীনভাবে কর্তৃত্ব করতে দেয়া যাবে না। বরং তাকেই বাবা-মা বা অন্যান্য মুরুব্বীদের কথা মেনে চলতে হবে। এই দ্বিতীয় সাত অর্থাৎ সাত বছর থেকে চৌদ্দ বছর পর্যন্ত সময়কাল যদি একটি শিশু যথাযথ নির্দেশনা মেনে বেড়ে ওঠে, তাহলে তৃতীয় সাত বছর অর্থাৎ চৌদ্দ থেকে একুশ বছর বয়সকাল পর্যন্ত শিশুটি হয়ে উঠতে পারে সংসার পরিচালনায় বাবা-মায়ের একজন যথার্থ সহযোগী।

রাসূল (সাঃ)এর আরেকটি হাদীসে এ পর্ব তিনটিতে সন্তানদের প্রশিক্ষণ এবং বাবা-মায়ের করণীয় আরো পরিস্কারভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি বলেছেন, তোমাদের সন্তানদেরকে সাত বছর পর্যন্ত খেলাধূলা করতে দাও, পরবর্তী সাত বছর তাদেরকে সংশোধনীমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দাও এবং পরবর্তী সাত বছর তাদেরকে তোমাদের পরামর্শদাতা ও সহযাত্রী কর। জীবনের প্রথম সাতটি বছরে একটি শিশুর অনুধাবনশক্তি কিংবা স্মৃতিশক্তি থাকে একেবারেই অপক্ক। তার শারীরিক অবস্থাও থাকে অত্যন্ত নাজুক পর্যায়ে। তাই এ সময়টায় বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের প্রতি সদয় ও সহানুভূতিশীল আচরণ করা। তার চাহিদাগুলোকে সাধ্যমতো পূরণ করা এবং তাঁর জিজ্ঞাসাগুলোর ইতিবাচক জবাব দেয়া। শিশু তার প্রথম সাত বছর পর্যন্ত স্বাধীন। তাই স্বাধীনভাবে সে খেলাধূলা করবে, নাচানাচি-দৌড়াদৌড়ি করবে, আদেশের পর আদেশ দেবে-যা খুশি তাই করবে। এসবের মাধ্যমে তার মধ্যে ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠবে। তাই তার ওপর এ সময় কোন নিষেধাজ্ঞা বা সীমাবদ্ধতা আরোপ করা অনুচিত। এমনকি তাকে এসময় কোন কিছু সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়াও ঠিক নয়। শিশু তার বাবা-মা তথা পরিবারের সকল মুরব্বী, পাড়া-প্রতিবেশী, আশে-পাশের লোকজন এবং অন্যান্য শিশুদের প্রভাবেই বড় হয়ে উঠবে।

IMG0037Aঅর্থাৎ ইসলাম ধর্ম মতে, শিশুর প্রথম সাত বছরের এই শিক্ষা হচ্ছে কোনো কিছুই চাপিয়ে দেয়া যাবেনা, সে তার ইচ্ছে মত যা মনে হবে তা-ই করবে ও শিখবে। সতর্ক থাকতে হবে বাবা-মা আর বড়দের। শিশুটি যা দেখবে, যা করার বা জানার সুযোগ বা পরিবেশ পাবে, তা-ই তার মনে গুরুত্ব পাবে। সে যদি ঐ বিদেশী টিভি চ্যানেলে টম এন্ড জেরী বা ডোরেমন বা বাবা-মায়ের পাশে বসে স্টারপ্লাস, জলসা দেখার সুযোগ বেশি পায় তবে তার বেড়ে ওঠার শিক্ষায় এসব বিষয়ই প্রভাব ফেলবে এটাই স্বাভাবিক। শিশুরা শেখে তার বিনোদনের উপকরণ থেকে এটাই চিরন্তন সত্য। তার বিনোদনের উপকরণ কি হবে তা নির্ভর করে বাবা-মায়ের সচেতনতার উপর। আমাদের শিশু সাহিত্যের উপকরণ টোনাটুনির গল্প, বাঘ, ভুতের কাহিনী, বানরের কিচ্ছা এ গুলোর বাইরে আর কি আছে? শিশুরা ছবি, রঙতুলি খুব পছন্দ করে। ব্রাক বিশ্ব বিদ্যালয়ের এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, শিশুরা আনন্দের মাধ্যমে শিখতে চায়, তাই তাদের জন্য বেশি বেশি শিশুতোষ সাহিত্য তৈরি করা উচিৎ লক্ষ্য রাখতে হবে শিশুদের জন্য সৃষ্ট সাহিত্যকর্মে যেন কোনো অসামঞ্জস্য না থাকে।

বাংলাভাষার প্রধান সাহিত্যিক সুকুমার রায়, কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি ফররুখ আহমদ, বন্দেআলী মিয়া, জসিমউদ্দীন সহ আরো অনেকে শিশু সাহিত্য রচনা করেছেন। তবে এক্ষেত্রে বৈচিত্র্যপূর্ণ সাহিত্য রচনা করেছেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। কিন্তু একুশের এই শতক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তিতে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ায় তাদের সাহিত্য কর্মগুলো এই শতকের শিশুদের জন্য কতটুকু উপযোগী তা শিশু সাহিত্যিক, গুণীজনদের সাথে সাথে তরুণদের বেশি করে ভাবা উচিত। লেখা উচিত। অনেক কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সম্পাদকরা শিশুদের নিয়ে লেখতে অনাগ্রহী। তরুণদের কাছে টানতেও অনেকে হীনমন্যতা দেখান। আর যারা কয়েকজন লিখছেন দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ইদানিংকার শিশুতোষ সাহিত্যে ছড়া কিম্বা গল্প সবটাতেই রয়েছে অসংখ্য অসামঞ্জস্য।

শিশু সাহিত্য ও প্রসঙ্গ ভাবনা শীর্ষক এক প্রবন্ধে শামসীর হারুনুর রশীদ বলেছেন, ‘শিশুদের প্রতিভা বিকাশের দায়িত্ব কার? নিশ্চয় বলবেন আমার। উত্তরটা যদি সঠিক হয় তাহলে তাদের পূর্ণ মানুষ হয়ে গড়ে উঠার জন্য যা-যা করা দরকার তা কতটুকু করা হয়েছে? জাতীয় দৈনিক পত্রিকা থেকে সাহিত্য কাগজগুলোতে শিশুদের চাহিদা পূরণে বা শিশু সাহিত্য নিয়ে কি পরিমাণ কাজ হয়েছে বা হচ্ছে? তথ্য প্রযুক্তির এই শতকে বাংলাদেশে শিশু সাহিত্য এবং শিশু সাহিত্যের মান ও ভবিষ্যৎ কেমন? শিশুরা সবসময় নতুন কিছু জানতে আগ্রহী। তারা কল্পনা করতে ভালোবাসে, এদেশের শিশু সাহিত্যিকরা শিশুদের জন্য স্বপ্ন ও কল্পনার জগৎ কতটুকু সৃষ্টি করেছেন? এ ব্যাপারে অভিভাবক ও গুনীজনেরা কতটুকু সচেতন? এসব প্রশ্নের সুরাহাকল্পে দৈনিক পত্রিকার পাতা ও সাহিত্য কাগজগুলো কতটুকু দায়িত্ব পালন করছে তা পাঠককুল ভাল জানেন …?’

এ যুগটি তথ্য প্রযুক্তির, স্যাটেলাইটের। শিশুদের জন্য এ যুগের উপযোগী ক্যামেরায় ধারণ করা যায় এমন কাহিনী, নাট্য চিত্র, দৃশ্যকল্প নির্মাণ করা খুবই দরকার। ভারতীয় টিভি চ্যানেল ডিডি সেভেন বা জী বাংলায় প্রায় নিয়মিতই ঠাকুরমার ঝুলি বা গোপালভাড়ের কেচ্ছা কার্টুন প্রদর্শন হচ্ছে। কার্টুন ছবি সিন্দবাদ বা আলী বাবার চল্লিশ চোর সেখানে বেশ জনপ্রিয় শিশুতোষ বিনোদন। আমাদের এখানে এ জাতীয় কোনো উদ্যোগ কখনোই গ্রহণ হয়নি। মুস্তফা মনোয়ারের পাপেট শো আর নয়নতারার সিসিমপুর ছাড়া শিশু বিনোদনের জন্য আমাদের টেলিভিশনগুলোতে নিজস্ব বলে কিছুই নেই। অথচ আমাদের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিতেই রয়েছে আরো ভালো ভালো উপাদান। দাতা হাতেম তাই, বিদ্যাসাগরের নদী পাড়ি, বায়েজীদ বোস্তামীর মা ভক্তি, ঠাকুরমার ঝুলি ইত্যাদি আমাদেরই কাহিনী। যা থেকে অনায়াসে তৈরি হতে পারে জনপ্রিয় সব কার্টুন। কারণ আজকের শিশুরা সহজে বই পড়ে না তারা টিভিতে রোমাঞ্চকর ঘটনাবলি দেখতে চায়। তারা দেখে দেখে শিখতে চায়। এর সাথে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে পিছিয়ে পড়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক পত্রিকা, সাহিত্য কাগজগুলোসহ স্যাটেলাইটের কাছে আমাদের দাবি শিশু উপযোগী গল্প, কাহিনী, বাস্তবচিত্র ও শিক্ষনীয় বিষয়াদি প্রদর্শন করতে হবে।

আর যারা ধর্মীয় শিক্ষাকে অবজ্ঞা করছেন, তাদের প্রতি অনুরোধ জানাবো, দয়া করে ধর্মের অপব্যাখ্যায় বিভ্রান্ত হবেন না। হাদিস শরীফগুলোতে বিব্রান্তের ভয় আছে। আবার পীর/ইমাম/হুজুরের কথায়ও যখন একজনের সাথে আরেকজনের কোনো মিল নেই, তখন নিজেই সরাসরি পবিত্র কোরআন থেকে সত্যটা জেনে নিন। আরবী পড়তে না পারলে ইংরাজী বা বাংলার তরজমাটা পড়ুন ও সত্যটা জানুন। একই অনুরোধ জানাবো আমাদের অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি। হিন্দু ভাই বোনদের বলবো আপনার বেদ কি বলেছে জানুন। বাইবেল ও ত্রিপিটক কি বলেছে তা খ্রীস্টান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায় জানুন। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর নীতি নৈতিকতার সুগঠক ও নিয়ন্ত্রক। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসার বন্ধন তৈরির শিক্ষাটা একমাত্র ধর্মগ্রন্থই দিতে পারে আর কিছুতেই নয়। তাই তথ্য প্রযুক্তি ও স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাটাও গ্রহণ করার ব্যবস্থা করা দরকার। বিজ্ঞান হোক বা ধর্ম হোক শিশুদের জন্য তা সুপরিকল্পিত ভাবে প্রদর্শন করা জরুরি।
পরিশেষে শিশু বিশেষজ্ঞ জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর ডাঃ এম আর খান-এর একটি কথা দিয়ে শেষ করবো। ডাঃ এম আর খান একদিন তার চেম্বারে আসা ক’জন মা’কে লক্ষ্য করে বলেছেন, শিশুর প্রতিপালনে বাবা-মায়ের সচেতনতা খুবই জরুরী। তার আগে জরুরী রাসূল করিম (সাঃ) এ বিষয়ে কি নির্দেশনা দিয়েছেন তা মেনে চলা। কারণ পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক তিনি। এ কথা স্বীকার করছেন আধুনিক বিজ্ঞানীরাও। তাই সব ধর্মের মানুষেরাই তাদের শিশুর সুন্দর জীবনের জন্য হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর দেখানো পথে হাঁটতে পারেন। এটা করলে তারা কেউ মুসলমান হয়ে যাবেন না। কিন্তু শিশুর জন্য সুন্দর জীবন পাবেন এটা নিশ্চিত।

(বিঃদ্রঃ – শিশু সাহিত্য বিষয়ে একটি প্রবন্ধ লেখার অনুরোধ জানানো হয়েছিল শিশু সাহিত্যিক শ্রদ্ধেয় ফারুক নেওয়াজ ভাইকে। আজ পর্যন্ত তার প্রবন্ধটি পাই নাই। যে টেলিফোন নম্বরটিতে তার সাথে যোগাযোগ হত সেটিও এখন বন্ধ পাচ্ছি। তাই জোড়াতালি দিয়ে নিজেই লেখার ব্যর্থ চেষ্টা করলাম।)

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!

About the author

ডিসেম্বর ৭১! কৃত্তনখোলার জলে সাঁতার কেটে বেড়ে ওঠা জীবন। ইছামতির তীরঘেষা ভালবাসা ছুঁয়ে যায় গঙ্গার আহ্বানে। সেই টানে কলকাতার বিরাটিতে তিনটি বছর। এদিকে পিতা প্রয়াত আলাউদ্দিন আহমেদ-এর উৎকণ্ঠা আর মা জিন্নাত আরা বেগম-এর চোখের জল, গঙ্গার সম্মোহনী কাটিয়ে তাই ফিরে আসা ঘরে। কিন্তু কৈশরী প্রেম আবার তাড়া করে, তের বছর বয়সে তের বার হারিয়ে যাওয়ার রেকর্ডে যেন বিদ্রোহী কবি নজরুলের অনুসরণ। জীবনানন্দ আর সুকান্তে প্রভাবিত যৌবন আটকে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় পদার্পন মাত্রই। এখানে আধুনিক হবার চেষ্টায় বড় তারাতারি বদলে যায় জীবন। প্রতিবাদে দেবী আর নিগার নামের দুটি কাব্য সংকলন প্রশ্ন তোলে বিবেকবানের মনে। তার কবিতায়, উচ্চারণ শুদ্ধতা আর কবিত্বের আধুনিকায়নের দাবী তুলে তুলে নেন দীক্ষার ভার প্রয়াত নরেণ বিশ্বাস স্যার। স্যারের পরামর্শে প্রথম আলাপ কবি আসাদ চৌধুরী, মুহাম্মদ নুরুল হুদা এবং তৎকালিন ভাষাতত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রাজীব হুমায়ুন ডেকে পাঠান তাকে। অভিনেতা রাজনীতিবিদ আসাদুজ্জামান নূর, সাংকৃতজন আলী যাকের আর সারা যাকের-এর উৎসাহ উদ্দিপনায় শুরু হয় নতুন পথ চলা। ঢাকা সুবচন, থিয়েটার ইউনিট হয়ে মাযহারুল হক পিন্টুর সাথে নাট্যাভিনয় ইউনিভার্সেল থিয়েটারে। শংকর শাওজাল হাত ধরে শিখান মঞ্চনাটবের রিপোটিংটা। তারই সূত্র ধরে তৈরি হয় দৈনিক ভোরের কাগজের প্রথম মঞ্চপাতা। একইসমেয় দর্শন চাষা সরদার ফজলুল করিম- হাত ধরে নিযে চলেন জীবনদত্তের পাঠশালায়। বলেন- মানুষ হও দাদু ভাই, প্রকৃত মানুষ। সরদার ফজলুল করিমের এ উক্তি ছুঁয়ে যায় হৃদয়। সত্যিকারের মানুষ হবার চেষ্টায় তাই জাতীয় দৈনিক রুপালী, বাংলার বাণী, জনকণ্ঠ, ইত্তেফাক, মুক্তকণ্ঠের প্রদায়ক হয়ে এবং অবশেষে ভোরেরকাগজের প্রতিনিধি নিযুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়ান ৬৫টি জেলায়। ছুটে বেড়ান গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। ২০০২ সালে প্রথম চ্যানেল আই-্র সংবাদ বিভাগে স্থির হন বটে, তবে অস্থির চিত্ত এরপর ঘনবদল বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, আমাদের সময়, মানবজমিন ও দৈনিক যায়যায়দিন হয়ে এখন আবার বেকার। প্রথম আলো ও চ্যানেল আই আর অভিনেত্রী, নির্দেশক সারা যাকের এর প্রশ্রয়ে ও স্নেহ ছায়ায় আজও বিচরণ তার। একইসাথে চলছে সাহিত্য বাজার নামের পত্রিকা সম্পাদনার কাজ।