আমাদের নেতা নেত্রীরা কী আমাদের বলদ ভাবেন? : আফরোজা হীরা (পার্বতী পারু)

সাহিত্য বাজার

Sharing is caring!

আমাদের নেতা নেত্রীরা কী আমাদের বলদ ভাবেন?

paeu

আফরোজা হীরা (পার্বতী পারু)

আফরোজা হীরা (পার্বতী পারু)

কাকের মাথায় বেশি বুদ্ধি তাই সে খাবার লুকানোর সময় চোখ বন্ধ করে লুকায় ভাবে আমি যখন দেখছি না নিস্চয় অন্য কেউও তা দেখছে না। এদের কর্মকান্ড দেখে মাঝে মাঝে নিজেকে সভ্য দেশের নাগরিক ভাবতেও লজ্জা হয়। কাল দেখলাম আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী [বিএনপি জামায়াতের তান্ডব- রক্তাক্ত বাংলাদেশ] নামক একটা বই উদ্বোধন করলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মতন একজন বিচক্ষন নেত্রীর পক্ষে কী এটা শোভনিয়? পাঁচ জানুয়ারির আগে সারা দেশে যখন পেট্রোল বোমায় মানুষ পুড়িয়ে মারা হচ্ছিল তখন বেশ কয়েক জায়গায় পেট্রোল সহ হাতেনাতে লীগ এবং বিএনপি উভয় দলের কর্মিরা ধরা পড়েছে ৭১ চ্যানেল সহ আরো বেশ কয়েকটা চ্যানেল সেগুলো প্রচার করেছে। হেফাজতের আন্দলনের সময় বইয়ের দোকানে কে বা কারা আগুন দিয়েছে সেটা কেউ এখনো প্রমাণ করতে পারেনি। সরকার বলছে হেফাজত করেছে আর বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে হেফাজতের গায়ে দোষ চাপানোর জন্য সরকার তার নিজের লোক দিয়ে করিয়েছে। যার কোনো সাক্ষী বা ভিডিও ফুটেজ নেই। বিচারাধীন এমন বিতর্কিত একটা বিষয় নিয়ে দিব্যি বই ছেপে সিডি আকারে তা প্রচার করছে? আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী তা উদ্বোধন করছেন? বিচারাধীন একটা বিষয় যার এখনো পর্যন্ত কোনো চাক্ষশ প্রমাণ নেই সেই বিষয় নিয়ে এভাবে বই ছাপা যায়? আমাদের প্রধানমন্ত্রী একবারো ভাবলেন না যে এভাবে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন এই ২০১৪ সালে সম্ভব না। এখন মানুষ সব কিছু দেখতে পায় সব শুনতে পায়।

সর্বশেষে একটা আবেদন এই বইটার দ্বিতীয় মুদ্রন করা হোক, আর তার নাম রাখা হোক-[বিএনপি জামায়েত ও আমাদের যৌথ তান্ডব= রক্তাত্ত বাংলাদেশ]

11

২)
(সরকার সমর্থিত বন্ধুদের কমেন্টস আশা করছি)

আমি ব্যক্তিগত ভাবে রাজনীতি পছন্দ করি, দেশকে ভালবাসি বলে। আমার কাছে দলের থেকে দেশ বড় – তাই তাদের যে কোনো ভুলের সমালোচনা করতে পিছপা হই না। কিন্তু আমার কিছু বিজ্ঞ বন্ধুদের দেখি মুখে মধুর বদলে এত বেশি তেল রাখেন যে দেশ যেখানে যাবে যাক নেতার ব্যাঙ্ক এ্যাকাউন্ট অক্ষুন্ন থাক। এখন নেতা যদি বলেন- খবিশ, আমরা বলি বেশ বেশ। কেউ দুর্নীতি করে যদি বলে- রাবিশ, আমরা বলি কতমধুর কথা, বেশ বেশ। নিজেরা নিজেরা কামড়া কামড়ি করে শেষ হয়ে যাচ্ছে কেউ ছাড়ানোর উদ্যেগ নিবে না, বরং দুরে দাঁড়িয়ে থেকে বলবেন আহা! কী সুন্দর কামড়াকামরি। বাহির থেকে কেউ ছাড়াতে এলে উল্টো ধরে তাকে কাঁমড়ে দিবেন।
বন্ধুরা একবার ভেবে দেখবেন কী, যার যার দলের দুর্নীতি আর অপকর্মের সমালোচনা যদি তারা নিজেরা করতেন, তাহলে তাদের দল আজ কতটা সমৃদ্ধ আর সচেতন হত। গত দুইদিন আগে দেখলাম লীগের তিনজন মন্ত্রীর নামে দুর্নীতির দায়ে দুদক মামলা করেছে। যদি লীগের ব্যানারে এর বিচার এবং সেই ব্যক্তিদের অপসারন চেয়ে একটা মিছিল হয় তাহলে এর পর কেউ আর ঐ পথ মাড়ানোর সাহস পাবে? কোনটা বেশি প্রয়জন? অন্য দলের মন্ত্রী এমপিরা লুটপাট করে তাদের পকেট ভারি করেছে তাই আমার দলের মন্ত্রীদেরও সেই সুজোগ করে দেওয়? না দেশের টাকায় দেশের উন্নয় করা। অন্যায়ের সমালোচনা আর খুঁত ধরা কী একই জিনিস? আমার মেয়ে কোনো ভুল করলে তাকে আমি ভুলটা দেখিয়ে শুধরে দেই, অপরাধ করলে ধরে একটা থাপ্পর লাগাই। আর এই কাজগুলো যদি আমি নিজে না করি তাহলে তো এক সময় সে আরো বড় অন্যায় করবে এবং মানুষ ধরে তার হাত পা ভেঙ্গে দেবে। তার চেয়ে কী এটাই ভালো নয় যে নিজের সন্তানকে নিজেই শাসন করা।
আমরা রাজনীতি বিমুখ বলেলেই আমাদের নেতারা এসব নোংরামি করার সুজোগ পায়। আমাদের দেশটাতো কোনো খেলনা নয় যে ময়লা লেগে গেল আর সেটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আরো একটা নতুন কিনে নিলাম। আমরা নতুন প্রজন্ম আমরাই এটাকে ঢেলে সাজাব। সুন্দর করব যার সমর্থ আছে সে হাল ধরব যার সমর্থ নাই সে ভালো পরামর্স দেব আমার মনে হয় এভাবেই দেশ টা সুন্দর হবে। সর্বপরি মানুষ কে সচেতন হতে হবে যে দেশের মানুষ যত সচেতন সেই দেশ তত উন্নত। রাজনৈতিক আলোচনা সমালোচনা বন্ধুত্ত নষ্ট করে না, যেটা করে সেটা হল আমাদের স্বৈরাচারি মনোভাব, এটা পরিত্যাগ করলেই সব ঠিক থাকে। আসুন অন্যের দলের নয় নিজের দলের ভুল গুলো খুঁজে বের করি দল এবং দেশকে সমৃদ্ধ করি।

কথায়আছেনিজেরঢোলনিজেকেপিটাতেহয়তানাহলেফেটেযাবারসম্বাভনাপ্রবল। (ফেসবুক থেকে গৃহিত)

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!