আফরোজা হীরা (পার্বতী পারু) এর দুটি রচনা -স্বাধীনতা / স্বেচ্ছাচারিতা

অতিথি লেখক

Sharing is caring!

03

আফরোজা হীরা (পার্বতী পারু)

স্বাধীনতা / স্বেচ্ছাচারিতা

=================
মাঝের ছবির মেয়েগুলো কোনো বস্তাবন্দি মুসলীম নারী নয়, ওরা খৃষ্টান নান। হিন্দু মুসলমান বড় কথা নয় প্রতিটা নারীরই উচিত শালীন পোশাক ব্যবহার করা। শালীনতা শুধু বোরকায় শীমাবদ্ধ নয়, পোশাকের উপস্থাপনায় শালীনতা প্রকাশ পায়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বোরকা পড়েন না তবু তার পোশাক অশালীন নয়।

আমার গতকালের লেখায় মোট ৬২৪ জন লাইক এবং কমেন্টস দিয়ে সমর্থন জানিয়েছেন, এবং ৬ জন বিরোধিতা করেছেন। তার অর্থ এই যে আমাদের দেশের শতকরা ১-২% লোক আমাদের মেয়েদের পন্য হিসেবে দেখতে এবং ব্যবহার করতে চায়। বাকিরা এখনো নারীকে সম্মানের জায়গায় রেখেছেন। তারা চান মেয়েরা তাদরে সম্মানের জায়গাটা ধরে রাখুক। এখন দেখি আমরা কী চাই? শুধুমাত্র শার্ট’প্যান্ট আর উত্তেজক পোশাক পড়ে রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ালেই কী সমঅধীকার আদায় হয়ে যাবে? আর কিছু দরকার নেই?

01যে অশিক্ষিত মেয়েটা গার্মেন্টেসে কাজ করে, সেই মেয়টো ঘরভাড়া দিয়ে খেয়ে পড়ে দুটো টাকা বাঁচলে চেষ্টা করে একটা মোটা কাপড় দিয়ে তার শরীরটা ঢেকে রাখতে। আর আমাদের সমাজের শিক্ষিত মেয়েগুলো এমন পোশাক পড়ে রাস্তায় বের হয় যেন দেশে কাপড়ের দুর্ভিক্ষ চলছে। এই ধরনের পোশাক পড়ে কী অর্যন করতে পেরেছে তারা এই পর্যন্ত তা আমার গত পোস্টের কমেন্টস দেখলে বোঝা যায়। কোনো ধর্মই নারী পুরুষ কারো জন্য অস্লীলতা সমর্থন করে না। কিন্তু আমাদের সমাজে একধরনের প্রগতিবাদিরা দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের কথা বলে মেয়েদের অর্ধউলঙ্গ করে বাজারে তুলে তাদের স্বার্থ হাসিল করছে, অথচ তারা নিজেরা কিন্তু ঠিকই ফুলপ্যান্ট আর ফুলহাতা সার্ট পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর আমরা শালীনতার কথা বলতে আসলে বছলেন মেয়েদের বস্তাবন্দি করে ঘরে আটকে রাখছি। ইসলাম কিন্তু মেয়েদের ঘরে আটকে রাখেনি বরং শালীনতার সাথে সমস্ত কাজে আগ্রহ জুগিয়েছে। আজ থেকে দশ পনের বছর আগে আমাদের অমুসলীম কাকি বা মাসিরা কেমন চলতেন? তারাও তো শাড়ি পড়ে মাথায় ঘোমটা দিয়ে পথে বের হতেন। তাই বলে কী তারা বস্তা বন্দি হয়ে গেছেন? খৃষ্টান নানরা এমন পোশাক পড়েন যে সেটাকে বোরকার বিকল্প বলা চলে তারা কী নিজেদের বস্তাবন্দি ভাবেন? তাহলে মুসলীম মেয়েদের পর্দায় এত অনিহা কেন ? স্বাধীনতা এবং স্বেচ্ছাচারিতা কী এক জিনিস ?

জানি এই লেখাটা পড়ে অনেকেই আমাকে নারী জাতির কলঙ্ক বলবেন, তবু বলব কেউ গালী দিতে চাইলে একটু ভেবে তারপর দিয়েন।
==================================

10আজ ফেসবুকে আমার অনেক বন্ধুরা দেখলাম “টিএসসির বস্চ্রহরণ” নিয়ে ধিক্কারের প্রতিযোগীতায় নেমেছেন। সত্যি বলছি ছবিটা দেখার পর আমার কাছে একটুও অস্বাভাবিক মনে হয়নি। কারন সকালেই আশংকা করছিলাম এমন কিছু, আর সন্ধ্যায় ঘটে গেলো তা।
আমাদের সমাজের মেয়েরা এখন এত বেশি আধুনিক হয়েছে যে- প্রতিযোগীতা চলছে কে কার চেয়ে বেশি “হট” হয়ে রাস্তায় নামবে। এবার বই মেলায় কিছু সময়ের জন্য আমি স্টলে বসেছিলাম ৮০% মেয়েদের দেখলাম ওড়না নেই, যাদের আছে সঠিক স্থানে নেই, লেগিংস এর সাথে সর্ট ফতুয়া, শরীরের প্রতিটি ভাঁজ স্পস্ট বিদ্যমান। অথচ তারা বাবা মা বা বন্ধুর সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্টলের সামনে থেকে যাওয়ার সময় ছেলে-বুড়ো সবার দৃষ্টি ঐ একই দিকে, যেন চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে তারা । লজ্জায় আমি শক্ত হয়ে যেতাম। কাকে বলব? কতজনকে বলব? যেখানে অভিভাবক সাথে আছেন। পহেলা বৈশাখের দিন সকালে দেখলাম মেয়েরা হাতা কাটা ব্লাউজ, নাভির নিচে শাড়ি পড়ে ফ্লাইং কিচ দিচ্ছে। যে মেয়ে ঐ বেশে ফ্লাইং কিচ ছোঁড়ে তাকে স্টেজ থেকে নাম পড় ঐ কিচ গ্রহনকারীরা যদি আরো কিছু আশা করে তো আমি এতে দোষের কিছু মনে করি না। অথবা যে মেয়ে নিজেই চায় সমস্ত পুরুষ তার দিকে আকৃষ্ট হোক, তো তার জন্য আমার এত গায়ে জ্বালা কেন হবে ভাই? যারা ধিক্কার জানাচ্ছেন তারা একটু খোঁজ নিয়ে দেখবেন তো ঐ আক্রান্ত মেয়েগুলোর ভিতর একটাও বোরখা পড়া বা শালীন পোশাকের কোনো মেয়ে ছিল কিনা? যদিও আমাদের ছেলেদের কাছে এমন আচরণ আশা করি না। তবু বলব এমন পদক্ষেপ যদি আমাদের মেয়েদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে কিছু দেখিয়ে সতর্ক করতে পারে, তো আমি এমন কর্মকান্ডকে সাধুবাদ জানাই। কারন শুধু মেয়েদের নয় তাদের বাবা মায়েরও একটু শিক্ষার দরকার আছে। কারন ভদ্র ভাষা অনেক সময় অনেকের কাছে পৌছায় না।

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!