বেঙ্গল শিল্পালয়ে তাহেরা খানমের একক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী 

আরিফ আহমেদ

Sharing is caring!

MRK-1গত ১৪ এপ্রিল ২০১৫ দেশের অগ্রনী শিল্প-প্রদর্শনালয় বেঙ্গল গ্যালারী অব্ ফাইন আর্টস পনেরো বছর অতিক্রম করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বেঙ্গল গ্যালারি অব্ ফাইন আর্টস ৫ জুন ২০১৫ থেকে শিল্পী তাহেরা খানমের ‘বেলা অবেলার রঙরাগিণী’ (ঈড়ষড়ঁৎ, জযধঢ়ংড়ফু ধহফ গবসড়ৎরবং ড়ভ ঞরসব) শীর্ষক একক চিত্রকলা প্রদর্শনীর আয়োজন করছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টায় বেঙ্গল শিল্পালয়ে (বাড়ী # ২৭৫/এফ, রোড # ২৭ পুরাতন, ধানমন্ডি, ঢাকা) যৌথভাবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর এবং শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শিল্পী তাহেরা খানম এবং বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী।

প্রদর্শনীতে মোট চিত্রকর্মের সংখ্যা ৪৮টি এবং প্রদর্শনী আগামী ২৫ জুন ২০১৫ পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

MRK-3শিল্পী তাহেরা খানম তাঁর সময়ের এগিয়ে থাকা মানুষ, যেন বিরুদ্ধ-স্্েরাতে লড়তে থাকা এক প্রত্যয়ী নাবিক। নারীর প্রতি পঞ্চাশের দশকে যে বৈরী দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, তা তাঁকে খুব একটা দমিয়ে রাখতে পারেনি। শিল্পচর্চায় ঝোঁক ছিল, সাংস্কৃতিক পরিম-লের বলয়ে থেকে নিজের মননের উন্মেষ ঘটিয়েছিলেন বিশেষভাবে। সেতার শেখায় সাধনা ছিল, তবে চিত্রকলায় খুঁজে পেয়েছিলেন যাপিত জীবনের বোধ, আবেগ আর প্রশ্নের সন্ধান। সমাজব্যবস্থার রক্তচক্ষু, তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রবণতা, সাংসারিক-অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশের নানা টানাপড়েন সত্ত্বেও তাহেরা চৌধুরী চিত্রচর্চায় আগ্রহ স্থির করেছিলেন। জীবনসঙ্গী কাইয়ুম চৌধুরীকে চিত্রসৃষ্টিতে অবিরত উৎসাহ জোগাতেন, তবে নিজের চিত্রকর্ম নিয়ে খুব একটা সরব ছিলেন না। জীবনচক্রের নানা ঘাত-প্রতিঘাতে চিত্রচর্চায় হয়তো যতি পড়েছিল, হয়তো স্বভাবজাত অন্তর্মুখিনতা তাহেরা চৌধুরীর শিল্পীসত্তার পূর্ণতা প্রাপ্তিতে বাধা হয়েছিল, তথাপি নীরব চর্চার মাধ্যমে নিজের একটি আলাদা চিত্রভাষা নির্মাণে তিনি সচেষ্ট ছিলেন।

২০০৩-এ প্রথম একক প্রদর্শনীর দীর্ঘদিন পর বেঙ্গল গ্যালারিতে তাঁর বেলা অবেলার রঙরাগিণী চিত্রপ্রদর্শনী আয়োজিত হচ্ছে। প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গ, ফুল, বৃক্ষ, পর্বত, পাখি যেমন তাঁর চিত্রপটে এসেছে, তেমনি মাছ, জল, নৌকা, আকাশ ইত্যাদি নানা বিষয়কেও তিনি মোটা রেখা এবং সরল আকারে চিত্রিত করেছেন। পারিপার্শ্বিক নানা চরিত্রের দেখা যেমন মেলে তাঁর চিত্রে, তেমনি এসব চরিত্রের সঙ্গে প্রকৃতির নানা উপাদানের যে প্রহেলিকাময় রসায়ন, তারও উপস্থিতি দৃশ্যমান হয়। মানবীয় সম্পর্কের নানা অদ্ভুত বৈপরীত্য তাহেরা খানমের শিল্পমানসে উত্তর-অন্বেষণ করে।

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!

About the author

ডিসেম্বর ৭১! কৃত্তনখোলার জলে সাঁতার কেটে বেড়ে ওঠা জীবন। ইছামতির তীরঘেষা ভালবাসা ছুঁয়ে যায় গঙ্গার আহ্বানে। সেই টানে কলকাতার বিরাটিতে তিনটি বছর। এদিকে পিতা প্রয়াত আলাউদ্দিন আহমেদ-এর উৎকণ্ঠা আর মা জিন্নাত আরা বেগম-এর চোখের জল, গঙ্গার সম্মোহনী কাটিয়ে তাই ফিরে আসা ঘরে। কিন্তু কৈশরী প্রেম আবার তাড়া করে, তের বছর বয়সে তের বার হারিয়ে যাওয়ার রেকর্ডে যেন বিদ্রোহী কবি নজরুলের অনুসরণ। জীবনানন্দ আর সুকান্তে প্রভাবিত যৌবন আটকে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় পদার্পন মাত্রই। এখানে আধুনিক হবার চেষ্টায় বড় তারাতারি বদলে যায় জীবন। প্রতিবাদে দেবী আর নিগার নামের দুটি কাব্য সংকলন প্রশ্ন তোলে বিবেকবানের মনে। তার কবিতায়, উচ্চারণ শুদ্ধতা আর কবিত্বের আধুনিকায়নের দাবী তুলে তুলে নেন দীক্ষার ভার প্রয়াত নরেণ বিশ্বাস স্যার। স্যারের পরামর্শে প্রথম আলাপ কবি আসাদ চৌধুরী, মুহাম্মদ নুরুল হুদা এবং তৎকালিন ভাষাতত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রাজীব হুমায়ুন ডেকে পাঠান তাকে। অভিনেতা রাজনীতিবিদ আসাদুজ্জামান নূর, সাংকৃতজন আলী যাকের আর সারা যাকের-এর উৎসাহ উদ্দিপনায় শুরু হয় নতুন পথ চলা। ঢাকা সুবচন, থিয়েটার ইউনিট হয়ে মাযহারুল হক পিন্টুর সাথে নাট্যাভিনয় ইউনিভার্সেল থিয়েটারে। শংকর শাওজাল হাত ধরে শিখান মঞ্চনাটবের রিপোটিংটা। তারই সূত্র ধরে তৈরি হয় দৈনিক ভোরের কাগজের প্রথম মঞ্চপাতা। একইসমেয় দর্শন চাষা সরদার ফজলুল করিম- হাত ধরে নিযে চলেন জীবনদত্তের পাঠশালায়। বলেন- মানুষ হও দাদু ভাই, প্রকৃত মানুষ। সরদার ফজলুল করিমের এ উক্তি ছুঁয়ে যায় হৃদয়। সত্যিকারের মানুষ হবার চেষ্টায় তাই জাতীয় দৈনিক রুপালী, বাংলার বাণী, জনকণ্ঠ, ইত্তেফাক, মুক্তকণ্ঠের প্রদায়ক হয়ে এবং অবশেষে ভোরেরকাগজের প্রতিনিধি নিযুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়ান ৬৫টি জেলায়। ছুটে বেড়ান গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। ২০০২ সালে প্রথম চ্যানেল আই-্র সংবাদ বিভাগে স্থির হন বটে, তবে অস্থির চিত্ত এরপর ঘনবদল বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, আমাদের সময়, মানবজমিন ও দৈনিক যায়যায়দিন হয়ে এখন আবার বেকার। প্রথম আলো ও চ্যানেল আই আর অভিনেত্রী, নির্দেশক সারা যাকের এর প্রশ্রয়ে ও স্নেহ ছায়ায় আজও বিচরণ তার। একইসাথে চলছে সাহিত্য বাজার নামের পত্রিকা সম্পাদনার কাজ।