দীপংকর চক্রবর্তী-এর ছড়াগুচ্ছ

সাহিত্য বাজার

Sharing is caring!

দীপংকর চক্রবর্তী-এর ছড়া কবিতা
55
চামচিকে
চামচিকেটা সামনে এসে
বুক ফুলিয়ে বলে
এই এলাকার সকল পাখি
আমার কথায় চলে।

রাত্র জাগি, পাহারা দেই
ঘুমায় ওরা সব
সকাল বেলা ডাক দিলে পর
জুড়বে কলরব।

হুকুম পেলেই খাবার খোঁজে
ছুটবে সকল পাখি
সেই কারণেই আমরা ওদের
পাহারা দিয়ে রাখি।

নানা
দাদামশায়ের নাতি
ফোলায় বুকের ছাতি
বুকের ছাতি তিরিশ দেখেই
প্রবল মাতামাতি।

দাদামশায়ের নাতি
হাতি কিনবেন হাতি
হাতি কেনার জন্যে গেলেন
সঙ্গে রঙিন ছাতি।

দাদামশায়ের নাতি
করবে চড়–ইভাতি
বন্ধু ক’জন সঙ্গে নিয়ে
চলল বিনয়গাতি।

দাদামশায়ের নাতি
মাথায় রঙিন ছাতি
এক ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে ফেলেন
ইলেকটিরিক বাতি।

দা’ মশায়ের নাতি।

ফিরে পেতে চাই
ফিরে যেতে চাই উঠোনের ঘাসে
যেখানে শিশির হাসে
ফিরে যেতে চাই আমের বনেতে
শুধু বৈশাখ মাসে।

ফিরে পেতে চাই চেনা সেই গ্রাম
শুধুই সবুজ মাখা
ফিরে পেতে চাই সেই নদীটিরে
স্মৃতি যার বুকে আঁকা।

ফিরে পেতে চাই শৈশবটাকে
একান্ত করে কাছে
সেই শৈশব যার স্মৃতি নিয়ে
সকল মানুষ বাঁচে।

বেড়াল
বেড়াল বেড়াল কোথায় বেড়াল
খাটের তলায় নাকি
অন্ধকারে লুকিয়ে থাকে
চোখকে দিয়ে ফাঁকি।

বেড়াল বেড়াল কয়টা বেড়াল
একটা নাকি গন্ডা চার
সবক’টাকে দেখে এলেম
সন্ধ্যে বেলায় পুকুরপাড়।

বেড়াল বেড়াল, কি রং বেড়াল
লাল, সাদা না কালো
আমার তো না, তোমার বেড়াল
তুমিই জানো ভালো।

দুই শালিক

দুই শালিকের মালিক সেদিন
বসল এসে দুয়ার-ধারে
আমি তখন জল তুলছি
মাঝ উঠানে কুয়ার পাড়ে।

শালিক দুটি খাঁচার ভেতর
ইচ্ছেমত লাফাচ্ছিল
খাঁচার মালিক দুয়ার-ধারে
বসে বসে হাঁপাচ্ছিল।

দুই শালিকের মালিক কেন
শালিক নিয়ে নিত্য ঘোরে
সেই কাহিনী বলার জন্য
খোদ এসেছেন এই দুপুরে।

‘দুই শালিকে ভাগ্য ফেরে
ভাগ্য ফেরার জন্যে তাই
জোড়াশালিক সঙ্গে নিয়ে
নানান দেশে ঘুরতে যাই।

তারপরও ছাই ফল মেলে না
ভাগ্য রেখা হাতেই নাই
শোনাতে এই দুঃখ কথা
শালিক জোড়াও সঙ্গে চাই।’

এই বলে খাঁচা খুলে
ওড়ালো শালিক
তারপরে মারা গেল
খাঁচার মালিক।

ছড়াকারের জগৎ
পশুও ভালো, পাখিও ভালো
ভালো দত্যি দানা
তাদের নিয়ে যতই লেখো
কেউ করে না মানা।

ছড়ার ভেতর সিংহ মামা
ভীষণ রকম শান্ত
বাঘমামাও তথৈবচ
ছড়াকাররা জানত।
সেই কারণেই ছড়ার মধ্যে
পশু পাখির মেলা
সত্যি দানো নিয়েও চলে
ছড়াকারের খেলা।

ছড়ার জগত সেই কারণেই
হাজার মজায় ভরা
ছড়াকারের কলম দিয়েই
হাজার ভাঙা গড়া।

বুদ্ধিজীবী

শেয়াল বলে, চড়াই
কিসের এত বড়াই
পরের ঘরে থেকে কেন
আমার সংগে লড়াই।

চড়াই বলে, নারে
তোর সাথে কেউ পারে!
বুদ্ধিবেচা বুদ্ধিজীবী
থাকিস আড়ে আড়ে।

শেয়াল বলে, শোন
চড়াই বলে, থাম।
এমন সময় ফিরল বাড়ি
অনন্তলাল দাম।

চড়াই বলে, ফুরুৎ
শেয়াল বলে, সরতো
দৌড়ে শেয়াল জঙ্গলে যায়
খুঁজতে নিজের গর্ত।

Print Friendly, PDF & Email

Sharing is caring!